০১:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

একসঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা

ইউএনএ প্রতিবেদক
  • আপডেট: ০২:১৫:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
  • / 9

প্রবাসীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা -ছবি: সংগৃহীত

একসঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে। আর প্রবাসীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা পেলে সরকারের পক্ষে পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়ানো সহজ হবে বলে মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার (২০ মে) বিকেলে টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রবাসীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

দায়িত্ব নেওয়ার শুরুর দিকের প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রীয় কোষাগার প্রায় খালি ছিল। সেই অবস্থায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। এতে সরকারের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানোর কিছুটা সুযোগ হয়। সেই সহযোগিতা আরও বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা এ সময় আরো বলেন, যখন তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) চলে গেছে কোষাগার খালি করে গেছে। ব্যাংকগুলো খালি করে গেছে। ব্যাংকের সব টাকা নিয়ে গেছে। রেমিট্যান্স না আসলে আমরা বাঁচতে পারতাম না। সেই দুর্যোগের ব্যবস্থা থেকে আমরা ধীরে ধীরে আসছি। আপনাদের (প্রবাসীদের) সমর্থন না পেলে, সাহায্য না পেলে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর আর সুযোগ ছিল না।

এখন কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের (প্রবাসীদের) এই সমর্থন আরও লাগবে। যাতে আপনারা যেসব কাজের কথা বললেন সেগুলো আরও সুন্দরভাবে করে ফেলতে পারি। এতগুলো বিষয় আমাদের সামনে এসে গেছে কোনটা রেখে কোনটা করবো, তা নিয়ে সমস্যায় আছি। আমরা খোঁজ নিবো যাতে সব সমস্যার সমাধান হয়।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আজকে এখানকার একটি কোম্পানি খোঁচা দিয়ে কথা বললো টাকা দিচ্ছি না। আমরা পরিশোধ করতে পারছি না। আমরা বললাম, ভাই একটু সময় দেন। আমরা টাকা জোগাড় করি, অনেকগুলো তো দিয়ে দিয়েছি। কাজেই এক পয়সাও মার যাবে না। তারা আশ্বস্ত হয়েছে কারণ আমরা পরিশোধ করে আসছি। বহু দেনা ছিল আমাদের।

জাপান প্রবাসীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখানে আপনারা আছেন, ব্যবসা কীভাবে বাড়াতে হবে, আপনাকে দেখতে হবে। দেশ থেকে বসে আমরা কেউ ব্যবসার কথা বলতে পারবো না। একজন ছাত্র এখানে বললো দেশের পরিস্থিতি ঠিক হলে দেশে যাবো, একজনকে দেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা সারা দেশ পাল্টে ফেলতে পারবো না। যেভাবে আছে ওভাবেই যেতে হবে। ওইভাবে গিয়ে দেশ মেরামত করতে হবে। কাজেই এখান থেকে এভাবে বললে হবে, আমি একজন দেশের নাগরিক। নাগরিক হিসেবে যখন দেখছি যে এটি ঠিক হচ্ছে না, নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব নিতে হবে আমি দায়িত্ব পালন করবো।

ড. ইউনূস বলেন, সংশোধনের জন্য সারা দেশের প্রয়োজন নেই। একজন দাঁড়ালেই হয়। কাজেই মনে করার কিছু নাই একা কী করবো। একজন থেকে শুরু হয় সবকিছু, এই যে এতো বড় আন্দোলন হলো, শুরুতেই এক-দুজনই ছিল। বাড়তে বাড়তে আজকে পুরো দেশে বেড়েছে। যে ছাত্ররা প্রাণ দিলো তাদের যে স্বপ্ন তা কীভাবে আমরা বাস্তবায়ন করি সেই বাস্তবায়নের অংশীদার হতে হবে আমাদের।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কাজেই সব মিলিয়ে একসঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে। এতে সুবিধা হলো জাপান সরকারের ওপর প্রভাব বিস্তার করা। এই যে নতুন লোক নিচ্ছে, ভাষা শেখা থেকে শুরু করে কীভাবে কী করা যায় কারণ আমাদের যেই সুবিধা আসে সেটাকে উল্টো দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা থাকে।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

একসঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট: ০২:১৫:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

প্রবাসীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা -ছবি: সংগৃহীত

একসঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে। আর প্রবাসীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা পেলে সরকারের পক্ষে পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়ানো সহজ হবে বলে মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার (২০ মে) বিকেলে টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রবাসীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

দায়িত্ব নেওয়ার শুরুর দিকের প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রীয় কোষাগার প্রায় খালি ছিল। সেই অবস্থায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। এতে সরকারের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানোর কিছুটা সুযোগ হয়। সেই সহযোগিতা আরও বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা এ সময় আরো বলেন, যখন তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) চলে গেছে কোষাগার খালি করে গেছে। ব্যাংকগুলো খালি করে গেছে। ব্যাংকের সব টাকা নিয়ে গেছে। রেমিট্যান্স না আসলে আমরা বাঁচতে পারতাম না। সেই দুর্যোগের ব্যবস্থা থেকে আমরা ধীরে ধীরে আসছি। আপনাদের (প্রবাসীদের) সমর্থন না পেলে, সাহায্য না পেলে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর আর সুযোগ ছিল না।

এখন কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের (প্রবাসীদের) এই সমর্থন আরও লাগবে। যাতে আপনারা যেসব কাজের কথা বললেন সেগুলো আরও সুন্দরভাবে করে ফেলতে পারি। এতগুলো বিষয় আমাদের সামনে এসে গেছে কোনটা রেখে কোনটা করবো, তা নিয়ে সমস্যায় আছি। আমরা খোঁজ নিবো যাতে সব সমস্যার সমাধান হয়।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আজকে এখানকার একটি কোম্পানি খোঁচা দিয়ে কথা বললো টাকা দিচ্ছি না। আমরা পরিশোধ করতে পারছি না। আমরা বললাম, ভাই একটু সময় দেন। আমরা টাকা জোগাড় করি, অনেকগুলো তো দিয়ে দিয়েছি। কাজেই এক পয়সাও মার যাবে না। তারা আশ্বস্ত হয়েছে কারণ আমরা পরিশোধ করে আসছি। বহু দেনা ছিল আমাদের।

জাপান প্রবাসীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখানে আপনারা আছেন, ব্যবসা কীভাবে বাড়াতে হবে, আপনাকে দেখতে হবে। দেশ থেকে বসে আমরা কেউ ব্যবসার কথা বলতে পারবো না। একজন ছাত্র এখানে বললো দেশের পরিস্থিতি ঠিক হলে দেশে যাবো, একজনকে দেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা সারা দেশ পাল্টে ফেলতে পারবো না। যেভাবে আছে ওভাবেই যেতে হবে। ওইভাবে গিয়ে দেশ মেরামত করতে হবে। কাজেই এখান থেকে এভাবে বললে হবে, আমি একজন দেশের নাগরিক। নাগরিক হিসেবে যখন দেখছি যে এটি ঠিক হচ্ছে না, নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব নিতে হবে আমি দায়িত্ব পালন করবো।

ড. ইউনূস বলেন, সংশোধনের জন্য সারা দেশের প্রয়োজন নেই। একজন দাঁড়ালেই হয়। কাজেই মনে করার কিছু নাই একা কী করবো। একজন থেকে শুরু হয় সবকিছু, এই যে এতো বড় আন্দোলন হলো, শুরুতেই এক-দুজনই ছিল। বাড়তে বাড়তে আজকে পুরো দেশে বেড়েছে। যে ছাত্ররা প্রাণ দিলো তাদের যে স্বপ্ন তা কীভাবে আমরা বাস্তবায়ন করি সেই বাস্তবায়নের অংশীদার হতে হবে আমাদের।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কাজেই সব মিলিয়ে একসঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে। এতে সুবিধা হলো জাপান সরকারের ওপর প্রভাব বিস্তার করা। এই যে নতুন লোক নিচ্ছে, ভাষা শেখা থেকে শুরু করে কীভাবে কী করা যায় কারণ আমাদের যেই সুবিধা আসে সেটাকে উল্টো দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা থাকে।

শেয়ার করুন