০২:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

জাতীয় পদকপ্রাপ্ত গুণীজনকে স্টার সমাজ কল্যাণ সংস্থার আয়োজনে সংবর্ধনা

ইউএনএ কেন্দুয়া ( নেত্রকোনা ) প্রতিনিধি
  • আপডেট: ১০:১০:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫
  • / 26

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার খ্যাতিমান গবেষক, লেখক ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন ড. এ এইচ এম কামালকে সংবর্ধনা প্রদান করেছে স্থানীয় সামাজিক সংগঠন স্টার সমাজ কল্যাণ সংস্থা – ছবি : ইউএনএ 

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার খ্যাতিমান গবেষক, লেখক ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন ড. এ এইচ এম কামালকে সংবর্ধনা প্রদান করেছে স্থানীয় সামাজিক সংগঠন স্টার সমাজ কল্যাণ সংস্থা।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বিকেলে উপজেলার বিদ্যাবল্লভ গ্রামে অবস্থিত রওশন ইজদানী একাডেমি প্রাঙ্গণে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ড. কামালের সাম্প্রতিক রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও শিক্ষা-গবেষণায় তাঁর অনন্য অবদানের কথা তুলে ধরা হয় এবং আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

ড. কামাল চলতি বছরে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কর্তৃক ‘টেলিকমিউনিকেশন ও যোগাযোগ খাতে বিশেষ অবদান’ শীর্ষক জাতীয় পদকে ভূষিত হন। এই সম্মাননার প্রেক্ষিতে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্টার সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি আমিনুল ইসলাম তালুকদার সবুজ এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও কবি মোহাম্মদ মামুন সিরাজী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংবর্ধিত গুণীজন ড. এ এইচ এম কামাল বলেন, “আমার এই অর্জন আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসার ফসল। এই মাটিতেই আমার শিকড়। এখান থেকেই আমার পথচলা শুরু। আমি চেষ্টা করব দেশের প্রযুক্তি, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে আরও অবদান রাখতে।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের সন্তানদের কেবল পাঠ্যবইয়ের মাঝে আটকে রাখলে চলবে না। তাদের কর্মমুখী শিক্ষা, প্রযুক্তি জ্ঞান ও বাস্তব দক্ষতার দিকে এগিয়ে নিতে হবে। ভবিষ্যৎ সময় হবে প্রযুক্তিনির্ভর ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক। এই জগৎকে না বোঝা মানেই পিছিয়ে পড়া। তাই পরিবারের মাধ্যমেই সঠিক দিকনির্দেশনার শুরু হওয়া প্রয়োজন।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন—
ড. কামালের পিতা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুছ, রওশন ইজদানী একাডেমির প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর কবির, কেন্দুয়া উপজেলা জামায়াতের আমির আবু সাদেক, জাতীয়তাবাদী তরুণ প্রজন্ম দলের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা জামাল তালুকদার, ডাক বিভাগের কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ সাদরুল আমিন, জমিলা মেমোরিয়াল বিদ্যা নিকেতনের অধ্যক্ষ লুৎফুর রহমান, সংগঠনের সদস্য কামাল হোসেন তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুরুজ আলী, এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহসভাপতি মার্জিয়া সুলতানা পিংকি।

বক্তারা বলেন, ড. কামালের মতো একজন গুণী মানুষ আমাদের এলাকার গর্ব। তাঁর অবদান শুধু দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও প্রশংসিত হচ্ছে। এ ধরনের সংবর্ধনা তরুণ প্রজন্মের মাঝে স্বপ্ন ও অনুপ্রেরণার বীজ বপন করবে।

ড. এ এইচ এম কামাল শিক্ষাজীবনে অসাধারণ সাফল্য অর্জনের পর তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় যোগ দেন এবং বর্তমানে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

শুধু একাডেমিক ক্ষেত্রেই নয়, গবেষণা, সাহিত্য, সংগীত ও চিত্রকলাতেও রয়েছে তাঁর অবাধ বিচরণ। তাঁর লেখা ৫০টিরও বেশি গবেষণাপত্র আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। রয়েছে দুটি কবিতার বই ও একাধিক গল্পগ্রন্থের পাণ্ডুলিপি। জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র শিক্ষক যিনি রাষ্ট্রীয় পদকে ভূষিত হয়েছেন। এছাড়া তিনি ইতোমধ্যে দুইজন শিক্ষার্থীকে পিএইচডি অর্জনে সহায়তা করেছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি অনন্য অর্জন।

 

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

জাতীয় পদকপ্রাপ্ত গুণীজনকে স্টার সমাজ কল্যাণ সংস্থার আয়োজনে সংবর্ধনা

আপডেট: ১০:১০:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার খ্যাতিমান গবেষক, লেখক ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন ড. এ এইচ এম কামালকে সংবর্ধনা প্রদান করেছে স্থানীয় সামাজিক সংগঠন স্টার সমাজ কল্যাণ সংস্থা – ছবি : ইউএনএ 

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার খ্যাতিমান গবেষক, লেখক ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন ড. এ এইচ এম কামালকে সংবর্ধনা প্রদান করেছে স্থানীয় সামাজিক সংগঠন স্টার সমাজ কল্যাণ সংস্থা।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বিকেলে উপজেলার বিদ্যাবল্লভ গ্রামে অবস্থিত রওশন ইজদানী একাডেমি প্রাঙ্গণে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ড. কামালের সাম্প্রতিক রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও শিক্ষা-গবেষণায় তাঁর অনন্য অবদানের কথা তুলে ধরা হয় এবং আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

ড. কামাল চলতি বছরে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কর্তৃক ‘টেলিকমিউনিকেশন ও যোগাযোগ খাতে বিশেষ অবদান’ শীর্ষক জাতীয় পদকে ভূষিত হন। এই সম্মাননার প্রেক্ষিতে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্টার সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি আমিনুল ইসলাম তালুকদার সবুজ এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও কবি মোহাম্মদ মামুন সিরাজী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংবর্ধিত গুণীজন ড. এ এইচ এম কামাল বলেন, “আমার এই অর্জন আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসার ফসল। এই মাটিতেই আমার শিকড়। এখান থেকেই আমার পথচলা শুরু। আমি চেষ্টা করব দেশের প্রযুক্তি, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে আরও অবদান রাখতে।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের সন্তানদের কেবল পাঠ্যবইয়ের মাঝে আটকে রাখলে চলবে না। তাদের কর্মমুখী শিক্ষা, প্রযুক্তি জ্ঞান ও বাস্তব দক্ষতার দিকে এগিয়ে নিতে হবে। ভবিষ্যৎ সময় হবে প্রযুক্তিনির্ভর ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক। এই জগৎকে না বোঝা মানেই পিছিয়ে পড়া। তাই পরিবারের মাধ্যমেই সঠিক দিকনির্দেশনার শুরু হওয়া প্রয়োজন।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন—
ড. কামালের পিতা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুছ, রওশন ইজদানী একাডেমির প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর কবির, কেন্দুয়া উপজেলা জামায়াতের আমির আবু সাদেক, জাতীয়তাবাদী তরুণ প্রজন্ম দলের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা জামাল তালুকদার, ডাক বিভাগের কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ সাদরুল আমিন, জমিলা মেমোরিয়াল বিদ্যা নিকেতনের অধ্যক্ষ লুৎফুর রহমান, সংগঠনের সদস্য কামাল হোসেন তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুরুজ আলী, এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহসভাপতি মার্জিয়া সুলতানা পিংকি।

বক্তারা বলেন, ড. কামালের মতো একজন গুণী মানুষ আমাদের এলাকার গর্ব। তাঁর অবদান শুধু দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও প্রশংসিত হচ্ছে। এ ধরনের সংবর্ধনা তরুণ প্রজন্মের মাঝে স্বপ্ন ও অনুপ্রেরণার বীজ বপন করবে।

ড. এ এইচ এম কামাল শিক্ষাজীবনে অসাধারণ সাফল্য অর্জনের পর তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় যোগ দেন এবং বর্তমানে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

শুধু একাডেমিক ক্ষেত্রেই নয়, গবেষণা, সাহিত্য, সংগীত ও চিত্রকলাতেও রয়েছে তাঁর অবাধ বিচরণ। তাঁর লেখা ৫০টিরও বেশি গবেষণাপত্র আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। রয়েছে দুটি কবিতার বই ও একাধিক গল্পগ্রন্থের পাণ্ডুলিপি। জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র শিক্ষক যিনি রাষ্ট্রীয় পদকে ভূষিত হয়েছেন। এছাড়া তিনি ইতোমধ্যে দুইজন শিক্ষার্থীকে পিএইচডি অর্জনে সহায়তা করেছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি অনন্য অর্জন।

 

শেয়ার করুন