১০:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

ধুনটে এক ঘণ্টায় বিলীন ৯ দোকান ও বাড়ি

ইউএন এ প্রতিনিধি:
  • আপডেট: ০১:৩০:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫
  • / 26

উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে বগুড়ার ধুনটে যমুনা নদীর তীরবর্তী গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রবল স্রোত ও ঘূর্ণাবর্তে গতকাল বুধবার দুপুরে হঠাৎ এ ভাঙন শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে শহরাবাড়ী নৌঘাট এলাকার বেশকিছু দোকানসহ বিস্তীর্ণ এলাকা বিলীন হয়েছে। আছড়ে পড়া ঢেউয়ের তোড়ে শহরাবাড়ী স্পারও ধসে যাচ্ছে।

এদিকে দীর্ঘদিন পর নদী ভাঙন দেখা দেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, গত ১৫-১৬ বছর যমুনা নদীর ভাঙন কবল থেকে অনেকটাই নিরাপদে ছিলেন। গত এক বছরে ভাণ্ডারবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলামের নেতৃত্ব ভাণ্ডারবাড়ী ও গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা যমুনা নদী অবৈধভাবে দখল করে কোটি কোটি ঘনফুট বালু উত্তোলন করে আসছে। এ কারণে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে পৈতৃক ভিটা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হবে।
গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। যমুনাপাড়ের শহরাবাড়ী, শিমুলবাড়ী, বানিয়ান, কৈয়াগাড়ি ভাণ্ডারবাড়ীসহ আটটি গ্রামে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। জানমাল রক্ষার জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন তারা।

কয়েকদিন আগে শিমুলবাড়ী এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দেয়। বুধবার দুপুর ১টার দিকে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। এক ঘণ্টার ব্যবধানে শিমুলবাড়ী থেকে শহরাবাড়ী পর্যন্ত আধা কিলোমিটার বিলীন হয়ে যায়।
শহরাবাড়ী নৌঘাট এলাকার ব্যবসায়ী মতিনুর রহমান জুয়েল জানান, এক ঘণ্টার মধ্যে নাহিদ ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, রেজাউল করিম, লিমন, শুভ ও আলমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়েছে। যেভাবে নদীর পাড় ধসে যাচ্ছে– তাতে মনে হচ্ছে, রাতের মধ্যে শহরাবাড়ী স্পারের আরও বেশকিছু অংশ বিলীন হয়ে যাবে।

ভাণ্ডারবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম নান্নু বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরেরও অভিযোগ করেছি। প্রতিকার হয়নি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম ও মাহমুদুল ইসলাম বলেন, বালু উত্তোলনের ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়। ভাঙনের কোনো আশঙ্কা থাকে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বগুড়ার উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীতে এক মিটার পানি বেড়েছে। এ কারণে হঠাৎ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে সন্ধ্যা থেকে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছে। এ ছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

ধুনটে এক ঘণ্টায় বিলীন ৯ দোকান ও বাড়ি

আপডেট: ০১:৩০:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫

উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে বগুড়ার ধুনটে যমুনা নদীর তীরবর্তী গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রবল স্রোত ও ঘূর্ণাবর্তে গতকাল বুধবার দুপুরে হঠাৎ এ ভাঙন শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে শহরাবাড়ী নৌঘাট এলাকার বেশকিছু দোকানসহ বিস্তীর্ণ এলাকা বিলীন হয়েছে। আছড়ে পড়া ঢেউয়ের তোড়ে শহরাবাড়ী স্পারও ধসে যাচ্ছে।

এদিকে দীর্ঘদিন পর নদী ভাঙন দেখা দেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, গত ১৫-১৬ বছর যমুনা নদীর ভাঙন কবল থেকে অনেকটাই নিরাপদে ছিলেন। গত এক বছরে ভাণ্ডারবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলামের নেতৃত্ব ভাণ্ডারবাড়ী ও গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা যমুনা নদী অবৈধভাবে দখল করে কোটি কোটি ঘনফুট বালু উত্তোলন করে আসছে। এ কারণে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে পৈতৃক ভিটা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হবে।
গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। যমুনাপাড়ের শহরাবাড়ী, শিমুলবাড়ী, বানিয়ান, কৈয়াগাড়ি ভাণ্ডারবাড়ীসহ আটটি গ্রামে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। জানমাল রক্ষার জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন তারা।

কয়েকদিন আগে শিমুলবাড়ী এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দেয়। বুধবার দুপুর ১টার দিকে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। এক ঘণ্টার ব্যবধানে শিমুলবাড়ী থেকে শহরাবাড়ী পর্যন্ত আধা কিলোমিটার বিলীন হয়ে যায়।
শহরাবাড়ী নৌঘাট এলাকার ব্যবসায়ী মতিনুর রহমান জুয়েল জানান, এক ঘণ্টার মধ্যে নাহিদ ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, রেজাউল করিম, লিমন, শুভ ও আলমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়েছে। যেভাবে নদীর পাড় ধসে যাচ্ছে– তাতে মনে হচ্ছে, রাতের মধ্যে শহরাবাড়ী স্পারের আরও বেশকিছু অংশ বিলীন হয়ে যাবে।

ভাণ্ডারবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম নান্নু বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরেরও অভিযোগ করেছি। প্রতিকার হয়নি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম ও মাহমুদুল ইসলাম বলেন, বালু উত্তোলনের ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়। ভাঙনের কোনো আশঙ্কা থাকে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বগুড়ার উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীতে এক মিটার পানি বেড়েছে। এ কারণে হঠাৎ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে সন্ধ্যা থেকে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছে। এ ছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।

শেয়ার করুন