১১:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

মধুপুর সাবরেজিস্ট্রার অফিসে ঘুষ লেনদেনের প্রমান পেয়েছে দুদক

জাহিদুল কবির, মধুপুর ( টাংগাইল ) প্রতিনিধি
  • আপডেট: ১২:২৪:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫
  • / 112

টাঙ্গাইলের মধুপুর সাবরেজিস্ট্রার অফিসে জমি ক্রয়-বিক্রয়ের নিবন্ধন করতে ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক।

রোববার দিনভর তদন্ত করে তারা প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখিত অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। দুদক টাঙ্গাইলের সহকারি পরিচালক নূরে আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দৈনিক প্রগতির আলো পত্রিকাসহ বিভিন্ন পত্রিকায় গত ২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ‘ঘুষ ছাড়া দলিল হয়না মধুপুর সাবরেজিস্ট্রার অফিসে’ এই শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর তদন্তে নামে দুদক।

জানা যায়, ২৮ সেপ্টেম্বর ৫৫ হাজার টাকা ঘুষ না দেওয়ায় আয়েজ উদ্দিন ও তার অপর ৬অংশীদার জমি দলিল করতে পারেননি। ৮১ বছর বয়স্ক জমি বিক্রেতা আব্দুল মজিদকে নিয়ে সাবরেজিস্ট্রার অফিসে টানা চারঘন্টা অপেক্ষা করে দলিল নিবন্ধন করতে ব্যার্থ হয়ে ফিরে আসেন তারা। পরে তিনি ৩০ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল জেলা রেজিস্ট্রার ও দুদকে অভিযোগ জমা দেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আয়েজ উদ্দিন আজাদসহ সাতজন অংশীদার মিলে মালাউড়ী গ্রামের আব্দুল মজিদের নিকট থেকে ছয় শতাংশ জমি ক্রয়ের জন্য ৩১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে নগদ এক লাখ টাকা বায়না করেন। ওই জমি হলো মধুপুর পৌরশহরের মালাউড়ী মৌজার ২২ নম্বর এস.এ খতিয়ান এবং বি.আর.এস ৭০৬ খতিয়ানের ১১৫ নম্বর এসএ দাগের এবং বি.আর.এস ৭৪৩ নম্বর দাগের ছয় শতাংশ জমি। জমি ক্রেতা সাতজন এবং বিক্রেতাসহ তার সন্তানেরা মিলে ২৮ সেপ্টেম্বর রোববার জমির দলিল নিবন্ধন করতে যান। দলিলের যাবতীয় প্রাথমিক কার্যাদি শেষ হওয়ার পর জমি বিক্রেতা বার্ধক্যজনিত কারণে দোতলায় উঠতে না পারায় সাবরেজিস্ট্রার অঞ্জনা রাণী দেবনাথ ভেন্ডারদের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে আবার জানানো হয় জমি ক্রেতাদের মধ্যে একজনের আয়কর সনদ নেই তাই আরও পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে। ৫৫ হাজার টাকা দিলে দলিল হবে অন্যথায় হবেনা জানানোর পরবর্তী চার ঘন্টা চেষ্টা ও অপেক্ষার পর আমরা জমির দলিল করতে ব্যার্থ হয়ে ফিরে এসে তিনি বিচার প্রার্থী হন।
তাদের ওই অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক তদন্তে নামে। তদন্তে অংশ নেন দুদক টাঙ্গাইলের সহকারি পরিচালক নূরে আলম ও উপসহকারি পরিচালক মো. আব্দুল বাছিদসহ তদন্তদল। তাঁরা দিনভর জমির ক্রেতা, বিক্রেতা, দলিল লেখক, ভেন্ডার ও অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারিদের কার্যক্রম তদন্ত করে ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ পান।

তাদের ভাষায়,‘অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযানকালে সংগৃহীত রেকর্ডপত্রসমূহ পর্যালোচনা করে টিম কর্তৃক কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

মধুপুর সাবরেজিস্ট্রার অফিসে ঘুষ লেনদেনের প্রমান পেয়েছে দুদক

আপডেট: ১২:২৪:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫

টাঙ্গাইলের মধুপুর সাবরেজিস্ট্রার অফিসে জমি ক্রয়-বিক্রয়ের নিবন্ধন করতে ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক।

রোববার দিনভর তদন্ত করে তারা প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখিত অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। দুদক টাঙ্গাইলের সহকারি পরিচালক নূরে আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দৈনিক প্রগতির আলো পত্রিকাসহ বিভিন্ন পত্রিকায় গত ২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ‘ঘুষ ছাড়া দলিল হয়না মধুপুর সাবরেজিস্ট্রার অফিসে’ এই শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর তদন্তে নামে দুদক।

জানা যায়, ২৮ সেপ্টেম্বর ৫৫ হাজার টাকা ঘুষ না দেওয়ায় আয়েজ উদ্দিন ও তার অপর ৬অংশীদার জমি দলিল করতে পারেননি। ৮১ বছর বয়স্ক জমি বিক্রেতা আব্দুল মজিদকে নিয়ে সাবরেজিস্ট্রার অফিসে টানা চারঘন্টা অপেক্ষা করে দলিল নিবন্ধন করতে ব্যার্থ হয়ে ফিরে আসেন তারা। পরে তিনি ৩০ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল জেলা রেজিস্ট্রার ও দুদকে অভিযোগ জমা দেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আয়েজ উদ্দিন আজাদসহ সাতজন অংশীদার মিলে মালাউড়ী গ্রামের আব্দুল মজিদের নিকট থেকে ছয় শতাংশ জমি ক্রয়ের জন্য ৩১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে নগদ এক লাখ টাকা বায়না করেন। ওই জমি হলো মধুপুর পৌরশহরের মালাউড়ী মৌজার ২২ নম্বর এস.এ খতিয়ান এবং বি.আর.এস ৭০৬ খতিয়ানের ১১৫ নম্বর এসএ দাগের এবং বি.আর.এস ৭৪৩ নম্বর দাগের ছয় শতাংশ জমি। জমি ক্রেতা সাতজন এবং বিক্রেতাসহ তার সন্তানেরা মিলে ২৮ সেপ্টেম্বর রোববার জমির দলিল নিবন্ধন করতে যান। দলিলের যাবতীয় প্রাথমিক কার্যাদি শেষ হওয়ার পর জমি বিক্রেতা বার্ধক্যজনিত কারণে দোতলায় উঠতে না পারায় সাবরেজিস্ট্রার অঞ্জনা রাণী দেবনাথ ভেন্ডারদের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে আবার জানানো হয় জমি ক্রেতাদের মধ্যে একজনের আয়কর সনদ নেই তাই আরও পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে। ৫৫ হাজার টাকা দিলে দলিল হবে অন্যথায় হবেনা জানানোর পরবর্তী চার ঘন্টা চেষ্টা ও অপেক্ষার পর আমরা জমির দলিল করতে ব্যার্থ হয়ে ফিরে এসে তিনি বিচার প্রার্থী হন।
তাদের ওই অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক তদন্তে নামে। তদন্তে অংশ নেন দুদক টাঙ্গাইলের সহকারি পরিচালক নূরে আলম ও উপসহকারি পরিচালক মো. আব্দুল বাছিদসহ তদন্তদল। তাঁরা দিনভর জমির ক্রেতা, বিক্রেতা, দলিল লেখক, ভেন্ডার ও অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারিদের কার্যক্রম তদন্ত করে ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ পান।

তাদের ভাষায়,‘অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযানকালে সংগৃহীত রেকর্ডপত্রসমূহ পর্যালোচনা করে টিম কর্তৃক কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’

শেয়ার করুন