শরীরে অতিরিক্ত ঘাম হলে করণীয়

- আপডেট: ০২:২৯:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
- / 7
ছবি : সংগৃহীত
গরমে ঘাম হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাংলাদেশের মত উষ্ণ আবহাওয়ার দেশে অতিরিক্ত ঘামের সাথে শরীরে দুর্গন্ধ তৈরি হওয়াও একজন ব্যক্তিকে সামাজিকভাবে অপদস্থকর অবস্থায় ফেলতে পারে।
শরীরে অতিরিক্ত ঘাম হলে মেডিকেল পরিভাষায় বলা হয় হাইপারহাইড্রোসিস। এটি এমন অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তির প্রচণ্ড দাবদাহ ছাড়াই অতিরিক্ত ঘাম হয়। কোনো রোগের কারণেও অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে। আবার তাপের সংস্পর্শে আসার ওপর নির্ভর করে না। সাধারণভাবে ঘামের বিশেষ স্থানের মধ্যে রয়েছে বগলের নিচে, মুখ, ঘাড়, পিঠ, কুঁচকি, পা এবং হাত।
ঢাকার মিলেনিয়াম হাসপাতালের চিকিৎসক পলাশ দেবনাথ বলেন, নিয়মিতভাবে শরীরের নির্দিষ্ট কোনো অংশ ঘামলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। অনেক সময় কোনো রোগের ওষুধ নেয়া শুরু করার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ঘামের সমস্যা তৈরি হতে পারে।
আর যাদের অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা রয়েছে। তাদের ঘামের সমস্যা যদি টানা ৬ মাস ধরে চলতে থাকে সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। পারিবারিকভাবে অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা থাকলে বা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট একটি সময়ে, যেমন রাতে, ঘামলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
মানুষের একটি সাধারণ অভিযোগ হলো ঘামের সঙ্গে সম্পর্কিত স্নায়বিক অবস্থা, তারপর ব্যক্তি নার্ভাস হওয়ার কারণে বেশি ঘাম হয়। এছাড়া নির্দিষ্ট খাবার এবং পানীয়, নিকোটিন, ক্যাফেইন এবং গন্ধ।
একইভাবে সেকেন্ডারি (সাধারণ) হাইপারহাইড্রোসিসের অনেক কারণ রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট ধরনের ক্যানসার, এন্ডোক্রাইন সিস্টেমের ব্যাঘাত, সংক্রমণ এবং ওষুধ।
হাতের তালুর হাইপারহাইড্রোসিসের জন্য নির্ধারিত সমাধানগুলোর মধ্যে একটি হলো অ্যান্টিহাইড্রাল ক্রিম। হাইপারহাইড্রোসিস থেরাপির জন্য টপিকাল এজেন্টগুলোর মধ্যে রয়েছে ফর্মালডিহাইড লোশন এবং টপিকাল অ্যান্টিকোলিনার্জিক। নিয়মিত অ্যান্টিপারস্পাইরেন্টগুলোতে অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরোহাইড্রেট ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যান্টিপারস্পাইরেন্ট দ্রবণ বা হাইপারহাইড্রোসিস জেলগুলো বগল বা আন্ডারআর্ম অঞ্চলের চিকিৎসার জন্য বিশেষভাবে কার্যকর। উন্নতি দেখতে তিন থেকে পাঁচদিন সময় লাগে। সবচেয়ে সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো ত্বকের জ্বালা।
অ্যান্টিকোলিনার্জিক নামক প্রেসক্রিপশন ওষুধ রয়েছে। যা প্রায়ই মুখে খাওয়া হয়। কখনো কখনো সাধারণ এবং ফোকাল হাইপারহাইড্রোসিস উভয়ের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। হাইপারহাইড্রোসিসের জন্য ব্যবহৃত অ্যান্টিকোলিনার্জিকগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রোপান্থেলিন, গ্লাইকোপাইরোনিয়াম ব্রোমাইড বা গ্লাইকোপাইরোলেট, অক্সিবিউটিনিন, মিথানথেলিন এবং বেনজাট্রোপিন। তবে এই ওষুধের ব্যবহার সীমিত হতে পারে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে যার মধ্যে রয়েছে শুষ্ক মুখ, প্রস্রাব ধরে রাখা, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং মাইড্রিয়াসিস এবং সাইক্লোপ্লেজিয়ার মতো দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা।
পেরিফেরাল হাইপারহাইড্রোসিসের জন্য কিছু লোক কেবল চূর্ণ-বিচূর্ণ বরফের পানি পান করে উপশম পেয়েছেন। বরফের পানি রক্তনালিগুলোর মাধ্যমে হাত-পায়ে পরিবহনের সময় শরীরের অতিরিক্ত তাপ ঠাণ্ডা করতে সাহায্য করে। কার্যকরভাবে দশ থেকে ত্রিশ মিনিটের মধ্যে সামগ্রিক শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক স্তরে কমিয়ে আনে।