০৬:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর

অর্ধেক টাকা ব্যয় করায় সেনাবাহিনীর প্রশংসায় প্রধান উপদেষ্টা

ইউএনএ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ০২:২৫:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
  • / 1

সেনাবাহিনীর প্রশংসা করলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস – ছবি : সংগৃহীত

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের অর্ধেকেরও কম খরচে ঘর নির্মাণ করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।  এজন্য সেনাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ঘরের চাবি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। এই অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শুনে ভালো লাগছে যে টাকাটার সঠিক ব্যবহার হয়েছে। ঘরটাও সঠিকভাবে নির্মাণ হয়েছে। অনেক সময় টাকা ব্যবহার করা হলেও গুণগতমান ঠিক হয় না। আজকে গুণগতমানের ব্যাপারেও আশ্বস্ত হলাম। আমরা যে টাকা দিয়েছিলাম তার অর্ধেক টাকাতে কাজটা হয়েছে। উল্টো খবর। সাধারণত যে টাকা দেওয়া হয় তার দ্বিগুণ চাওয়া হয়। এখানে যা দেওয়া আছে তার অর্ধেক ব্যবহার হয়েছে। একটা আনন্দের খবর।

তিনি আরো বলেন, টাকা দেওয়ার ব্যাপারে আমি একটু শক্ত অবস্থান নিয়েছিলাম। টাকা দিতে গেলে এই টাকার ভাগ-বাটোয়ারা অনেক রকম হয়ে যাবে। যারা প্রাপ্য তাদের হাতে পৌঁছাবে না। তখন প্রস্তাব এসেছিল যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে করার, সেই প্রকল্পের বিষয়ে জানা ছিল না তবে নামটা জানা ছিল। তখন ভাবলাম যে এটা কী করা যায়। পরে জানলাম এটা সেনাবাহিনী করবে। তখন স্বস্তি পেলাম। আসলে টাকাটা সঠিকভাবে ব্যবহার হবে।

প্রসঙ্গত, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় গত বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০টি পরিবারের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর নির্মাণের ৫০কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়।

৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ পেলেও সেনাবাহিনীর ২৪ ও ৩৩ ডিভিশনের কর্মকর্তারা মাত্র ২৪ কোটি ৯৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩০০টি ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ করেন।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০টি পরিবারের সদস্যদের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানসহ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সেনাবাহিনীর ভূঁয়সী প্রশংসা করেন ও জাতীয় যে কোনো দুর্যোগে সেনাবাহিনীকে পাশে পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

২০২৪ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার ২২টি উপজেলার অসংখ্য ঘরবাড়ি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব এলাকার যেসব ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অর্থাৎ বসবাসের মতো ঘর অবশিষ্ট নেই তাদের ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।

সশস্ত্র বাহিনীর মাধ্যমে চারটি জেলায় ৩০০টি ঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ঘর নির্মাণের জন্য প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল থেকে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়।

অনুমোদিত দুটি ডিজাইনের মাধ্যমে (প্রথমটি ৪৯২ বর্গফুট ও দ্বিতীয়টি ৫০০ বর্গফুট) ঘর নির্মাণ করা হয়। সেনাবাহিনীর ২৪ ও ৩৩ ডিভিশনের মাধ্যমে ২৫ কোটি টাকারও কম খরচে ৩০০টি ঘর নির্মাণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ফেনী জেলার ৬টি উপজেলায় ১১০টি, নোয়াখালী জেলার ৭টি উপজেলায় ৯০টি, কুমিল্লা জেলার ৬টি উপজেলায় ৭০টি এবং চট্টগ্রাম জেলার ৩টি উপজেলার ৩০টিসহ মোট ৩০০টি ঘর নির্মাণ করা হয়।

চাবি বিতরণ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে যারা ঘরের চাবি বুঝে পেয়েছেন তারা অনুভূতি ব্যক্ত করার সময় প্রধান উপদেষ্টা ও সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর

অর্ধেক টাকা ব্যয় করায় সেনাবাহিনীর প্রশংসায় প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট: ০২:২৫:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

সেনাবাহিনীর প্রশংসা করলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস – ছবি : সংগৃহীত

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের অর্ধেকেরও কম খরচে ঘর নির্মাণ করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।  এজন্য সেনাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ঘরের চাবি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। এই অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শুনে ভালো লাগছে যে টাকাটার সঠিক ব্যবহার হয়েছে। ঘরটাও সঠিকভাবে নির্মাণ হয়েছে। অনেক সময় টাকা ব্যবহার করা হলেও গুণগতমান ঠিক হয় না। আজকে গুণগতমানের ব্যাপারেও আশ্বস্ত হলাম। আমরা যে টাকা দিয়েছিলাম তার অর্ধেক টাকাতে কাজটা হয়েছে। উল্টো খবর। সাধারণত যে টাকা দেওয়া হয় তার দ্বিগুণ চাওয়া হয়। এখানে যা দেওয়া আছে তার অর্ধেক ব্যবহার হয়েছে। একটা আনন্দের খবর।

তিনি আরো বলেন, টাকা দেওয়ার ব্যাপারে আমি একটু শক্ত অবস্থান নিয়েছিলাম। টাকা দিতে গেলে এই টাকার ভাগ-বাটোয়ারা অনেক রকম হয়ে যাবে। যারা প্রাপ্য তাদের হাতে পৌঁছাবে না। তখন প্রস্তাব এসেছিল যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে করার, সেই প্রকল্পের বিষয়ে জানা ছিল না তবে নামটা জানা ছিল। তখন ভাবলাম যে এটা কী করা যায়। পরে জানলাম এটা সেনাবাহিনী করবে। তখন স্বস্তি পেলাম। আসলে টাকাটা সঠিকভাবে ব্যবহার হবে।

প্রসঙ্গত, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় গত বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০টি পরিবারের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর নির্মাণের ৫০কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়।

৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ পেলেও সেনাবাহিনীর ২৪ ও ৩৩ ডিভিশনের কর্মকর্তারা মাত্র ২৪ কোটি ৯৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩০০টি ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ করেন।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০টি পরিবারের সদস্যদের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানসহ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সেনাবাহিনীর ভূঁয়সী প্রশংসা করেন ও জাতীয় যে কোনো দুর্যোগে সেনাবাহিনীকে পাশে পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

২০২৪ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার ২২টি উপজেলার অসংখ্য ঘরবাড়ি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব এলাকার যেসব ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অর্থাৎ বসবাসের মতো ঘর অবশিষ্ট নেই তাদের ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।

সশস্ত্র বাহিনীর মাধ্যমে চারটি জেলায় ৩০০টি ঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ঘর নির্মাণের জন্য প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল থেকে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়।

অনুমোদিত দুটি ডিজাইনের মাধ্যমে (প্রথমটি ৪৯২ বর্গফুট ও দ্বিতীয়টি ৫০০ বর্গফুট) ঘর নির্মাণ করা হয়। সেনাবাহিনীর ২৪ ও ৩৩ ডিভিশনের মাধ্যমে ২৫ কোটি টাকারও কম খরচে ৩০০টি ঘর নির্মাণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ফেনী জেলার ৬টি উপজেলায় ১১০টি, নোয়াখালী জেলার ৭টি উপজেলায় ৯০টি, কুমিল্লা জেলার ৬টি উপজেলায় ৭০টি এবং চট্টগ্রাম জেলার ৩টি উপজেলার ৩০টিসহ মোট ৩০০টি ঘর নির্মাণ করা হয়।

চাবি বিতরণ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে যারা ঘরের চাবি বুঝে পেয়েছেন তারা অনুভূতি ব্যক্ত করার সময় প্রধান উপদেষ্টা ও সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

শেয়ার করুন