আমরা ঝগড়া করিনি, মজা করেছি : ম্যাক্রোঁ

- আপডেট: ০৩:১৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
- / 7
ঘটনাটিকে এক ধরনের অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে বলে দাবি করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ –ছবি: এপি
বিদেশের মাটিতে ফরাসি ফার্স্ট লেডি ব্রিজিটের আক্রমণের শিকার হয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এমন একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পরে সোমবার অবশ্য ঘটনাটির ব্যাখ্যা দিয়েছেন ম্যাক্রোঁ। বলেছেন, তারা মজা করছিলেন।
চলতি সপ্তাহে তারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সফর শুরু করে ভিয়েতনামে বিমান থেকে নামার সময় ঘটনাটি ঘটে। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্ত্রী ব্রিজিট দুই হাত দিয়ে ম্যাক্রোঁর মুখ ধরে ধাক্কা দিচ্ছেন, ম্যাক্রোঁ মুখ সরিয়ে নিচ্ছেন। আর মুহূর্তেই ফ্রান্সের খবরের শিরোনাম হয়ে যায় এটি। বিমানের খোলা দরজায় ধারণা করা ওই ভিডিওতে গণমাধ্যম প্রযু্ক্তি ব্যবহার করে বোঝার চেষ্টা করছিল যে, তারা আসলে কথোপকথন করছিলেন।
ঘটনাটি নিয়ে দৈনিক লে প্যারিসিয়েন সংবাদপত্রের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি খবরের শিরোনাম ছিল ‘থাপ্পড় না ঝগড়া’? ভিয়েতনামে ম্যাক্রোঁ ও তার স্ত্রী ব্রিজিটের বিমান থেকে নামার ওই ঘটনার ছবিটি ব্যাপক মন্তব্য কুড়ায়।
ম্যাক্রোঁ পরে সাংবাদিকদের বলেন, তারা ২০০৭ সালে বিয়ে করেছেন। যে স্কুলে তারা পরিচিত হয়েছিলেন তারা সেখানে শিক্ষিকা ও ছাত্র ছিলেন। তারা কেবল মজার ছলে ঠাট্টা-মশকরা করছিলেন।
তিনি বলেন, আমরা ঝগড়া করিনি, মজা করেছি। ঘটনাটিকে এক ধরনের অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
এর আগে রবিবার (২৫ মে) ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে স্ত্রী ব্রিজিতকে সঙ্গে নিয়ে ভিয়েতনামে পৌঁছলে এক অবাক করা ঘটনা ঘটে। যা মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, বিমান হ্যানয়ের মাটিতে নামার পর ম্যাক্রোঁ হাসিমুখে বিমান থেকে নামতে উদ্যত হন। ঠিক সেই মুহূর্তে, বিমানের দরজার আড়াল থেকে লাল পোশাক পরা এক নারী ম্যাক্রোঁকে থাপ্পড় দেন। আচমকা এ ঘটনায় চমকে যান ম্যাক্রোঁ।
এরপর বিমান থেকে নেমে আসেন প্রেসিডেন্ট ও তার স্ত্রী ব্রিজিত। এতে বোঝা যায় প্রেসিডেন্টে মুখে হাত দেওয়া নারী তিনিই ছিলেন। বিমান থেকে নামার সময় ম্যাক্রোঁ হাত বাড়িয়ে দিলেও ব্রিজিত অস্বীকৃতি জানান।
এই ভিডিও কয়েক সেকেন্ডেই তা ছড়িয়ে পড়ে নেট দুনিয়ায়। হাসিঠাট্টা, চমক এবং জল্পনা শুরু হয়। অনেকে প্রশ্ন তোলেন, তবে কি সত্যিই স্ত্রীর হাতে চড় খেলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট?
এ ঘটনায় প্রেসিডেন্টের কার্যালয় প্রথমে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি। পরে অবশ্য দাবি করা হয়, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ভুয়া।
ফরাসি নেতা যুক্তি দেন যে, সামাজিক মাধ্যমের এই যুগে ছড়িয়ে পড়া তাদের ছবি ও মন্তব্যগুলো বিভ্রান্তিকর তথ্য সম্পর্কে একটি সতর্কতামূলক গল্পকে তুলে ধরে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি একটি ভিডিও ছড়ানো হয়েছে, যেখানে জার্মানির নেতাদের সঙ্গে তিনি কোকেন গ্রহণ করছেন—এমন একটি গল্প সাজানো হয়েছে, যা আসলে ভুয়া। সেসময় কেবল একটি টিস্যু নিচ্ছিলেন বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানের সঙ্গে করমর্দন করছিলেন এবং ঝাঁকুনি দিচ্ছিলেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, সকলকে শান্ত হওয়া উচিৎ। তার কার্যালয়ও এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়াগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি।
ম্যাক্রোঁর অফিস জানিয়েছে, এটি ছিল একটি মুহূর্ত যখন প্রেসিডেন্ট এবং তার স্ত্রী যাত্রা শুরুর আগে শেষবারের মতো নির্ভার হচ্ছিলেন মজার ছলে সময় কাটিয়ে। এটি ছিল এক ধরনের সহমর্মিতার মুহূর্ত। ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে এটাই ছিল কেবল অস্ত্র।
স্কুলে শিক্ষিকা ব্রিজিট অজিয়ে নামে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিলেন। সেসময় তিনি বিবাহিত ও তিন সন্তানের মা ছিলেন। এই শিক্ষিকা একটি নাট্যক্লাবের তত্ত্বাবধান করতেন। আর সাহিত্যপ্রেমী ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এই ক্লাবেরই একজন সদস্য ছিলেন।
তবে ম্যাক্রোঁ স্কুল জীবনের শেষ বর্ষে ব্রিজিটকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্যারিসে চলে যান। পরে ব্রিজিট তার স্বামীকে তালাক দিয়ে ম্যাক্রোঁর সঙ্গী হতে প্যারিসে পাড়ি জমান এবং বিয়ে করেন।