০২:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করবে ইসরায়েল

ইউএনএ ডেস্ক
  • আপডেট: ০১:০২:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
  • / 8

ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে নতুন গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র -সংগৃহীত ছবি

ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে নতুন গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে যাওয়া অবস্থাতেই ট্রাম্প প্রশাসনের নজরে এসেছে এই তথ্য।

সিএনএনকে কর্মকর্তারা জানান, ইসরায়েল হামলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি-না তা নিশ্চিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রও এ বিষয়ে নিশ্চিত নয় যে ইসরায়েল শেষ পর্যন্ত হামলা চালাবে কি-না।

যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা জানান, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের সব ইউরেনিয়াম অপসারণের চুক্তি না হয় তাহলে হামলার সম্ভাবনা আরও বাড়বে।

ইসরায়েলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত ও সরকারি পর্যায়ের বার্তা, যোগাযোগ এবং সামরিক গতিবিধির ওপর ভিত্তি করে এই গোয়েন্দা তথ্য তৈরি হয়েছে বলে জানানো হয়। সিএনএনকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বিমান মহড়া সম্পন্ন করা এবং আকাশপথে গোলাবারুদ সরানোর মতো প্রস্তুতি লক্ষ্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এসব পদক্ষেপ সরাসরি হামলার উদ্দেশ্যেও হতে পারে আবার ইরানকে চাপে ফেলতেও হতে পারে যেন তারা তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির কিছু অংশ থেকে সরে আসে।

এ বিষয়ে সিএনএন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মন্তব্য জানতে চাইলেও তারা সাড়া দেয়নি। ওয়াশিংটনে অবস্থিত ইসরায়েলি দূতাবাসও কোনো মন্তব্য করেনি।

এক মার্কিন গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েল মনে করছে ইরানের বর্তমান সামরিক শক্তি গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল। গত অক্টোবর মাসে ইসরায়েল তাদের ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আঘাত হানে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং আঞ্চলিক মিত্রদের হারানোর পর ইরান আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে।

সিএনএনকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র এখন বাড়তি গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করছে যাতে ইসরায়েল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে সেক্ষেত্রে ইসরায়েলকে সহায়তা করা যায়।

তবে ট্রাম্প প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, ইরান বড় ধরনের কোনো উস্কানি না দিলে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলায় এখনই সরাসরি অংশ নেবে না।

এক মার্কিন সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারবে না।

এক ইসরায়েলি সূত্র সিএনএনকে জানায়, যদি যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের চুক্তিকে ইসরায়েল খারাপ চুক্তি বলে মনে করে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়াই ইসরায়েল হামলা চালাতে প্রস্তুত থাকবে।

এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইস্যুতে আলোচনা অচলাবস্থায় রয়েছে। ওয়াশিংটনের বার্তা হচ্ছে, এমন একটি চুক্তি হতে হবে যেখানে ইরান ১ শতাংশও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না।

এ বিষয়ে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বলেন, আমরা ইরানকে এমন একটি প্রস্তাব দিয়েছি যেটা তাদের অসম্মান না করেই কিছু সমাধান দিতে পারে।

অন্যদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি মঙ্গলবার বলেছেন, তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করার যুক্তরাষ্ট্রের দাবি বড় ভুল। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আলোচনায় কোনো ফল হবে বলে আমি মনে করি না।

সূত্র: সিএনএন, রয়টার্স

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করবে ইসরায়েল

আপডেট: ০১:০২:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে নতুন গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র -সংগৃহীত ছবি

ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে নতুন গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে যাওয়া অবস্থাতেই ট্রাম্প প্রশাসনের নজরে এসেছে এই তথ্য।

সিএনএনকে কর্মকর্তারা জানান, ইসরায়েল হামলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি-না তা নিশ্চিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রও এ বিষয়ে নিশ্চিত নয় যে ইসরায়েল শেষ পর্যন্ত হামলা চালাবে কি-না।

যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা জানান, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের সব ইউরেনিয়াম অপসারণের চুক্তি না হয় তাহলে হামলার সম্ভাবনা আরও বাড়বে।

ইসরায়েলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত ও সরকারি পর্যায়ের বার্তা, যোগাযোগ এবং সামরিক গতিবিধির ওপর ভিত্তি করে এই গোয়েন্দা তথ্য তৈরি হয়েছে বলে জানানো হয়। সিএনএনকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বিমান মহড়া সম্পন্ন করা এবং আকাশপথে গোলাবারুদ সরানোর মতো প্রস্তুতি লক্ষ্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এসব পদক্ষেপ সরাসরি হামলার উদ্দেশ্যেও হতে পারে আবার ইরানকে চাপে ফেলতেও হতে পারে যেন তারা তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির কিছু অংশ থেকে সরে আসে।

এ বিষয়ে সিএনএন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মন্তব্য জানতে চাইলেও তারা সাড়া দেয়নি। ওয়াশিংটনে অবস্থিত ইসরায়েলি দূতাবাসও কোনো মন্তব্য করেনি।

এক মার্কিন গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েল মনে করছে ইরানের বর্তমান সামরিক শক্তি গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল। গত অক্টোবর মাসে ইসরায়েল তাদের ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আঘাত হানে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং আঞ্চলিক মিত্রদের হারানোর পর ইরান আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে।

সিএনএনকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র এখন বাড়তি গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করছে যাতে ইসরায়েল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে সেক্ষেত্রে ইসরায়েলকে সহায়তা করা যায়।

তবে ট্রাম্প প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, ইরান বড় ধরনের কোনো উস্কানি না দিলে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলায় এখনই সরাসরি অংশ নেবে না।

এক মার্কিন সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারবে না।

এক ইসরায়েলি সূত্র সিএনএনকে জানায়, যদি যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের চুক্তিকে ইসরায়েল খারাপ চুক্তি বলে মনে করে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়াই ইসরায়েল হামলা চালাতে প্রস্তুত থাকবে।

এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইস্যুতে আলোচনা অচলাবস্থায় রয়েছে। ওয়াশিংটনের বার্তা হচ্ছে, এমন একটি চুক্তি হতে হবে যেখানে ইরান ১ শতাংশও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না।

এ বিষয়ে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বলেন, আমরা ইরানকে এমন একটি প্রস্তাব দিয়েছি যেটা তাদের অসম্মান না করেই কিছু সমাধান দিতে পারে।

অন্যদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি মঙ্গলবার বলেছেন, তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করার যুক্তরাষ্ট্রের দাবি বড় ভুল। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আলোচনায় কোনো ফল হবে বলে আমি মনে করি না।

সূত্র: সিএনএন, রয়টার্স

শেয়ার করুন