একদফা দাবিতে আজ থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ

- আপডেট: ০৭:৪৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ অগাস্ট ২০২৪
- / 10
রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা কর্মসূচিতে ছাত্র-জনতার সমাবেশ। ছবি – ইউএনএ
শহিদ মিনার থেকে সরকার পতনের এক দফা ঘোষণা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। গতকাল শনিবার ছাত্র-নাগরিকের সমাবেশ থেকে তিনি এই ঘোষণা দেন। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব ক্যাম্পাস ও হলগুলো খুলে দেওয়ার আল্টিমেটাম দেন তিনি। একই সঙ্গে আগের ঘোষণা অনুযায়ী আজ রবিবার (৪ আগস্ট) থেকে চলবে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন। এদিন শহিদ মিনার থেকে অসহযোগ আন্দোলনের দিকনির্দেশনা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। এদিকে এক বিবৃতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
শহিদ মিনারে এই সমাবেশে জড়ো হন লাখো মানুষ। সেখানে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি। শুধু পদত্যাগ করলেই হবে না, দেশে যত খুন, গুম হয়েছে তার দায়ে তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। শুধু শেখ হাসিনা নয়, পুরো মন্ত্রিপরিষদকে পদত্যাগ করতে হবে। এই ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থাকে বিনাশ করতে হবে।
আমাদের এক দফা হলো শেখ হাসিনাসহ এই সরকারের পতন ও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গঠন করতে চাই, রাজনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করতে চাই, যেখানে আর কখনোই কোনো ধরনের স্বৈরতন্ত্র ফিরে আসবে না। আমরা সরকার ও ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার বিলোপ ঘোষণা করছি। এজন্য ছাত্র নাগরিকের অভ্যুত্থান আহ্বান করছি।’
পরবর্তীকালে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের জরুরি নির্দেশনা দেন আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘কেউ কোনো ধরনের ট্যাক্স বা খাজনা প্রদান করবেন না। বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানির বিলসহ কোনো ধরনের বিল পরিশোধ করবেন না। সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত ও কলকারখানা বন্ধ থাকবে। আপনারা কেউ অফিসে যাবেন না, মাস শেষে বেতন তুলবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে কোনো ধরনের রেমিট্যান্স দেশে পাঠাবেন না। সব ধরনের সরকারি সভা, সেমিনার, আয়োজন বর্জন করবেন। বন্দরের কর্মীরা কাজে যোগ দেবেন না। কোনো ধরনের পণ্য খালাস করবেন না। দেশের কোনো কলকারখানা চলবে না, গার্মেন্টসকর্মী ভাই-বোনেরা কাজে যাবেন না। গণপরিবহন বন্ধ থাকবে, শ্রমিকরা কেউ কাজে যাবেন না। জরুরি ব্যক্তিগত লেনদেনের জন্য প্রতি সপ্তাহের রবিবার ব্যাংকগুলো খোলা থাকবে। পুলিশ সদস্যরা রুটিন ডিউটি ব্যতীত কোনো ধরনের প্রটোকল ডিউটি, রায়ট ডিউটি ও প্রটেস্ট ডিউটিতে যাবেন না। শুধু থানা-পুলিশ নিয়মিত থানার রুটিন ওয়ার্ক করবে। বিজিবি ও নৌবাহিনী ব্যতীত অন্যান্য বাহিনী ক্যান্টনমেন্টের বাইরে ডিউটি পালন করবে না। বিজিবি ও নৌবাহিনী ব্যারাক ও কোস্টাল এলাকায় থাকবে। আমলারা সচিবালয়ে যাবেন না, ডিসি বা উপজেলা কর্মকর্তারা নিজ নিজ কার্যালয়ে যাবেন না। দেশ থেকে যেন একটি টাকাও পাচার না হয়, সব অফশোর ট্রানজেকশন বন্ধ থাকবে। বিলাসদ্রব্যের দোকান, শো রুম, বিপনিবিতান, হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট অর্নিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানপাট বেলা ১১-১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে! তবে হাসপাতাল, ফার্মেসি, জরুরি পরিবহণ সেবা, যেমন—ঔষধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিবহণ, অ্যাম্বুলেন্স সেবা, ফায়ার সার্ভিস, গণমাধ্যম, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহণ, জরুরি ইন্টারনেট সেবা, জরুরি ত্রাণসহায়তা এবং এই খাতে কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবহণ সেবা চালু থাকবে।