গরমের মধ্যেই থেমে থেমে ঝরবে বৃষ্টি

- আপডেট: ০৯:৫৮:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫
- / 7
গ্রীষ্মের বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে আসছে বর্ষা গরমের মধ্যেই থেমে থেমে ঝরবে বৃষ্টি – ছবি : ইউএনএ
গ্রীষ্মের বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে আসছে বর্ষা। দেশের ৪৯ জেলায় বয়ে যাওয়া দাবদাহ কমে আসতে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে তাপমাত্রা কমলেও ভ্যাপসা গরমের অস্বস্তি থেকে এক সপ্তাহ মুক্তি মিলছে না। গরমের মধ্যেই থেমে থেমে বৃষ্টি ঝরবে। বুধবার (১১ জুন) থেকে বৃষ্টিপাত বাড়বে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, দেশের ৪৯ জেলায় মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার (১০ জুন) পর্যন্ত এই তাপপ্রবাহ বেশি থাকবে। কাল থেকে তাপপ্রবাহের বিস্তার কমে আসবে। তবে গরমের তেজ কমে ৩৬ ডিগ্রির নিচে নামলেও অস্বস্তিকর অবস্থাটা থাকবে। বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি আছে, যে কারণে এই অস্বস্তিকর গরমটা থাকবে। চলতি মাসের ১৬-১৭ তারিখের দিকে এই অবস্থাটা কাটতে পারে৷
বৃষ্টিপাত কবে নাগাদ হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বুধবার থেকে বৃষ্টিপাত একটু বাড়বে। তবে, সেটাও অল্প। হয়তো দিনের একটা সময় বৃষ্টি হবে। এরপর থেমে গিয়ে অস্বস্তিকর অবস্থাটা থাকবে। একনাগাড়ে হবে না।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলাসহ রংপুর বিভাগের অবশিষ্টাংশ, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে বয়ে যাচ্ছে। তা কিছু কিছু জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে।
বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। এরপর ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি হওয়ায় ঢাকায় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯০ শতাংশ। সন্ধ্যা ছয়টায় তা ৬০ শতাংশে নেমেছে।
বুধবার চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। শুক্রবার (১৩ জুন) খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে।
শনিবার (১৪ জুন) রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। সে সঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে। রোববার (১৫ জুন) রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। এই চার দিন সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে এবং তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল নীলফামারীর ডিমলায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দেখা গেছে রাঙামাটিতে ২২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে নোয়াখালীর হাতিয়ায়; ২৪ মিলিমিটার। এছাড়া, বান্দরবান ও যশোরে ১৮, রাঙামাটিতে ৭, সাতক্ষীরা ও চট্টগ্রামে ৪ মিলিমিটার, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়ায় দুই মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।