জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একটা রোডম্যাপ হওয়া প্রয়োজন : সাকি

- আপডেট: ০৯:২৭:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
- / 3
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বক্তব্য রাখেন -ফাইল ফটো
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, আমরা মনে করি বাংলাদেশ একটা জাতীয় পুনর্গঠনের কালে আছে। আমাদের এখানে জাতীয় নির্বাচনটাই মুখ্য। তাই জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একটা রোডম্যাপ হওয়া প্রয়োজন। তবে এক্ষেত্রে স্থানীয় নির্বাচন পরে হলেও সমস্যা নেই।
রোববার (২৫ মে) রাতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে দায়িত্ব রয়েছে তা সম্পূর্ণ করেই সরকারকে যেতে হবে। এর অন্যথায় কোনো সুযোগ নেই। দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে নানা ধরনের আশঙ্কার জায়গা তৈরি হয়েছে। ফ্যাসিস্ট শক্তি নানা ধরনের তৎপরতা চালাচ্ছে। তাদের বিদেশি সহযোগীরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সবকিছুতে বাধাগ্রস্ত, ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য চেষ্টা করছে। সেটা একটা আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছে। সেক্ষেত্রে তিনি সবার ঐক্যের কামনা করেছেন।
জাতীয় নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেছেন, আগামী বছর জুনের মধ্যে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হলে রাজনৈতিক দলগুলো এবং বিনিয়োগকারী উভয়ই প্রস্তুতি নিতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে কথা বলার জন্য ডেকেছেন। সে বৈঠকে তিনি বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন। দুটি বিষয় তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন।
একটি হচ্ছে এই পরিস্থিতি এমন যে এখানে তার পক্ষে কাজ করার ক্ষেত্রে নানা অসুবিধার জায়গা তৈরি হচ্ছে। সেটা এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে যে তিনি কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন কিনা সে নিয়েও তার মধ্যে একটা সংশয় তৈরি হয়েছে। তিনি ভেবেছিলেন কাজ যদি না করা যায় তাহলে দায়িত্বে থাকার প্রয়োজন নেই।
আর দেশবাসীর প্রত্যাশা, রাজনৈতিক দলগুলোসহ জনগণের ভরসার যে জায়গা আছে সেটা উপলব্ধি করে তিনি সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন। কীভাবে এই পরিস্থিতি থেকে একটা কাঙ্ক্ষিত জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায়।
জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা আমাদের পক্ষ থেকে বলেছি, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে ঐতিহাসিক দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, যেখানে একদিকে হত্যাকারীদের বিচার এবং জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করার জন্য যে গণতান্ত্রিক সংস্কারে যাওয়ার প্রয়োজন এতে যে দায়িত্ব নেওয়ার দরকার সেটা আপনার সরকারকেই নিয়ে যেতে হবে অন্যথায় আর কোনো সুযোগ নাই।
তিনি বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি জনগণ একটা দৃশ্যমান বিচার দেখতে চাই। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, বিচারবিভাগকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। বিচারব্যবস্থা যে গতিতে এগোচ্ছে সেখানে যাতে কোনো দীর্ঘ না হয় এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় থাকে সে বিষয়ে তিনি আশা ব্যক্ত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের ক্ষেত্রেও আমরা বলেছি ঐক্যমত কমিশন যেহেতু ১৫ জুলাই পর্যন্ত সময় নিয়েছে তাই এই ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে যে সকল ঐক্য হয় ফরমাল সেগুলোকে জাতীয় সনদ আকারে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকাশিত করতে হবে। এটাই সংস্কারের পদ্ধতি। প্রধান উপদেষ্টাও বলেছেন, এর বাইরে অন্য কোন পদ্ধতি গ্রহণের সুযোগ নেই।
জুলাই অভ্যুত্থানের বিষয়ে কথা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জুলাইয়ের অবস্থান সকলের অবদানে সম্মিলিত অবদানে তৈরি হয়েছে। তবে কোনো একটি পক্ষ এমনভাবে জুলাইয়ের ক্রেডিট দাবি করছে তারা এমনটা বোঝাতে চাচ্ছে যে একদল জুলাইকে ধারণ করে আরেক দল ধারণ করে না। এ সকল বিষয়ে আমরা সরকারকে সচেতন থাকতে বলেছি।
বিএনপি তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনের প্রতিনিধিত্বকারী তিনজন এখানে উপদেষ্টা হিসেবে ছিলেন তার মধ্যে একজন একটা রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। বাকি দুজন উপদেষ্টা এখনো বিদ্যমান। আমরা বলেছি বাকি যে দুইজন সে তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিকল্পনা আছে কিনা। যদি থাকে তাহলে তাদের একটা সময় এখান থেকে সরে যেতে হবে। যেহেতু এটার রাজনৈতিকভাবে গঠিত সরকার না তাই রাজনৈতিক মোটিভ নিয়ে এখানে থাকাটা নিয়ম অনুযায়ী ঠিক হবে না।