০৪:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০১ জুন ২০২৫

জালিয়াতিতে সম্পৃক্ততার দায়ে ইসলামী ব্যাংকের বিতর্কিত এমডিকে অপসারণ

ইউএনএ প্রতিবেদক
  • আপডেট: ০৯:০২:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
  • / 14

এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা -ছবি : সংগৃহীত

বিভিন্ন জালিয়াতিতে সম্পৃক্ততার দায়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের বিতর্কিত এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে অপসারণ করা হয়েছে। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক মঙ্গলবার এতে অনাপত্তি দিয়েছে। আগামী এক মাস পর তথা ২০ জুন এ অপসারণাদেশ কার্যকর হবে। এর আগে গত ৬ এপ্রিল তাকে বাধ্যতামূলকভাবে তিন মাসের ছুটিতে পাঠিয়েছিল ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ।

জানা গেছে, মুনিরুল মওলাকে অপসারণের পাশাপাশি পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তার অনিয়ম–জালিয়াতির নথি পাঠানো হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। এখন বিধি অনুযায়ী সংস্থাটি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ইসলামী ব্যাংকের সাম্প্রতিক অডিটে বিভিন্ন জালিয়াতির সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। সে আলোকে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়েছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাতে অনাপত্তি দিয়েছে।

ইসলামী ব্যাংকের একজন পরিচালক বলেন, অপসারণের মানে তিনি দায়মুক্তি পাবে তেমন না। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে দুদকসহ সরকারের অন্য সংস্থা। এ জন্য যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা নিয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে বক্তব্যের জন্য মনিরুল মওলাকে ফোন করে বন্ধ পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংক দখল করে এস আলম গ্রুপ। বিভিন্ন উপায়ে শুধু এই ব্যাংক থেকে ৯১ হাজার কোটি টাকা বের করে নেওয়ার তথ্য পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এস আলম ইসলামী ব্যাংক দখলে নেওয়ার পর ব্যাংকটিতে প্রভাবশালী হয়ে উঠেন মনিরুল মওলা। দ্রুততার সঙ্গে তাকে পদোন্নতি দিয়ে প্রথমে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এমডি নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ব্যাংকটির পর্ষদের বেশিরভাগ সদস্য ও অধিকাংশ ডিএমডি আত্মগোপনে চলে যান। অদৃশ্য কারণে মনিরুল মওলা বহাল তবিয়তে ছিলেন।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের প্রকৃত খেলাপি ঋণ ঠেকেছে ৬৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। মোট ঋণের যা ৪২ দশমিক ২২ শতাংশ। এতে করে নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ৮১৬ কোটি টাকা। প্রভিশন সংরক্ষণের জন্য ব্যাংকটি এখন ২০ বছর সময় চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করেছে। অবশ্য ইসলামী ব্যাংক ডিসেম্বর ভিত্তিক যে তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিয়েছিল সেখানে খেলাপি ঋণ দেখানো হয় ৩২ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। ওই সময় পর্যন্ত বিতরণ করা এক লাখ ৫৫ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা ঋণের যা ছিল ২১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

জালিয়াতিতে সম্পৃক্ততার দায়ে ইসলামী ব্যাংকের বিতর্কিত এমডিকে অপসারণ

আপডেট: ০৯:০২:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা -ছবি : সংগৃহীত

বিভিন্ন জালিয়াতিতে সম্পৃক্ততার দায়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের বিতর্কিত এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে অপসারণ করা হয়েছে। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক মঙ্গলবার এতে অনাপত্তি দিয়েছে। আগামী এক মাস পর তথা ২০ জুন এ অপসারণাদেশ কার্যকর হবে। এর আগে গত ৬ এপ্রিল তাকে বাধ্যতামূলকভাবে তিন মাসের ছুটিতে পাঠিয়েছিল ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ।

জানা গেছে, মুনিরুল মওলাকে অপসারণের পাশাপাশি পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তার অনিয়ম–জালিয়াতির নথি পাঠানো হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। এখন বিধি অনুযায়ী সংস্থাটি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ইসলামী ব্যাংকের সাম্প্রতিক অডিটে বিভিন্ন জালিয়াতির সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। সে আলোকে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়েছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাতে অনাপত্তি দিয়েছে।

ইসলামী ব্যাংকের একজন পরিচালক বলেন, অপসারণের মানে তিনি দায়মুক্তি পাবে তেমন না। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে দুদকসহ সরকারের অন্য সংস্থা। এ জন্য যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা নিয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে বক্তব্যের জন্য মনিরুল মওলাকে ফোন করে বন্ধ পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংক দখল করে এস আলম গ্রুপ। বিভিন্ন উপায়ে শুধু এই ব্যাংক থেকে ৯১ হাজার কোটি টাকা বের করে নেওয়ার তথ্য পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এস আলম ইসলামী ব্যাংক দখলে নেওয়ার পর ব্যাংকটিতে প্রভাবশালী হয়ে উঠেন মনিরুল মওলা। দ্রুততার সঙ্গে তাকে পদোন্নতি দিয়ে প্রথমে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এমডি নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ব্যাংকটির পর্ষদের বেশিরভাগ সদস্য ও অধিকাংশ ডিএমডি আত্মগোপনে চলে যান। অদৃশ্য কারণে মনিরুল মওলা বহাল তবিয়তে ছিলেন।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের প্রকৃত খেলাপি ঋণ ঠেকেছে ৬৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। মোট ঋণের যা ৪২ দশমিক ২২ শতাংশ। এতে করে নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ৮১৬ কোটি টাকা। প্রভিশন সংরক্ষণের জন্য ব্যাংকটি এখন ২০ বছর সময় চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করেছে। অবশ্য ইসলামী ব্যাংক ডিসেম্বর ভিত্তিক যে তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিয়েছিল সেখানে খেলাপি ঋণ দেখানো হয় ৩২ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। ওই সময় পর্যন্ত বিতরণ করা এক লাখ ৫৫ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা ঋণের যা ছিল ২১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।

শেয়ার করুন