এনসিপির বিক্ষোভ সমাবেশ
জুলাই সনদে আ.লীগ নিষিদ্ধের কথাটি থাকতে হবে : নাহিদ

- আপডেট: ১১:০৯:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
- / 1
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে আ.লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় – – ছবি সংগৃহীত
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমরা চাই মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে রাষ্ট্র কাঠামোর আমূল পরিবর্তন। শাসন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে মৌলিক সংস্কারের উদ্দেশ্যে জুলাই সনদ কার্যকর করা হবে। জুলাই সনদে সুস্পষ্টভাবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কথাটি থাকতে হবে।
শুক্রবার (২ মে) বিকেলে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগকে জনতার আদালতে নিষিদ্ধ করা হবে। পতনের ৯ মাস হয়ে গেলেও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে আমাদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে। এটা আমাদের সামষ্টিক ব্যর্থতা। বিচার ও সংস্কারের জন্যই মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। গণহত্যা চালানোর দায়ে আওয়ামী লীগকে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও নিষিদ্ধ করতে না পারায় হতাশ বোধ করছি।
তিনি আরো বলেন, বিচার চলাকালে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আইন করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ফলেই কিন্তু আজকে বাংলাদেশে যারা রাজনীতি করছে, যারা ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে; তারা কিন্তু এই শহীদ পরিবার এবং আহত যোদ্ধাদের আত্মত্যাগের ফলেই স্বপ্ন দেখতে পাচ্ছে। ফলে অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে।
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, যেই আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ মানুষের ওপর বারবার গণহত্যা চালিয়েছে তাদের রাজনীতি চলতে পারে না। আওয়ামী লীগের নাম নির্বাচনের খাতা থেকে মুছে সন্ত্রাসীদের খাতায় লিখতে হবে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দায় শুধু এনসিপির নয়। এ দায় সবার।
গত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ও পঙ্গুত্ববরণ করা রোগীরা এখনও হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে আর আহাজারি করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের হাতে যারা নিপীড়িত হয়েছেন তাদের কেউ এখনও বিচার পায়নি। দলটির মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই। বরং তারা আবার নির্বাচনে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে।
হুঁশিয়ার করে ডা. তাসনিম জারা আরও বলেন, আমরা হাল ছাড়ছি না। আওয়ামী লীগের বিচার বাংলাদেশেই হতে হবে। শুধু দল নয় ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর যেসব নেতা এসব অপরাধে জড়িত তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।
সমাবেশে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা মশিউর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে আর রাজনীতি করতে পারবে না; এই সিদ্ধান্ত গত ৫ আগস্ট হয়ে গেছে৷
আরেক কেন্দ্রীয় নেতা আবু সাঈদ মুসা বলেন, আওয়ামী লীগ মাঠে নামার চেষ্টা করলে এনসিপি তাদের রাজপথে মোকাবিলা করবে।
কেন্দ্রীয় নেতা জয়নাল আবেদিন শিশির বলেন, দল হিসেবে আওয়ামী লীগ এবং খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার অবশ্যই হতে হবে৷ এই দাবি আদায়ে এনসিপি মাঠে আছে, থাকবে।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকার বলেছেন, ফাঁসির দড়ি ছাড়া হাসিনার দেশে ফেরার কোনো সুযোগ নেই।
মাহিন সরকার ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানকে ‘বিশ্বের বৃহত্তম ইলেকট্রনিক বিপ্লব’ বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, এই বিপ্লব কেবল বাংলাদেশের নয় কাশ্মীর ও ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মানুষদের প্রতিও এক ধরনের আশার বার্তা।
ঢাকা মহানগরীর আয়োজনে এই সমাবেশে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীরা যোগ দিয়েছেন। সমাবেশে মিছিল নিয়ে দলে দলে যোগ দেন তারা। ঢাকা মহানগরী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা সমাবেশে অংশ নেন। এছাড়া বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষও যোগ দিয়েছেন এনসিপির সমাবেশে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মূখ্য সংগঠক (দক্ষিণ অঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, আব্দুল হান্নান মাসুদ, শামান্তা শারমিন প্রমুখ।