অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ চ্যাম্পিয়ন
টাইব্রেকারে হৃদয় ভাঙল বাংলাদেশের : চ্যাম্পিয়ন ভারত

- আপডেট: ০২:০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
- / 3
ছবি: বাফুফে
টাইব্রেকারে প্রথম তিন শটের সবগুলোতেই গোল করে বাংলাদেশ। চতুর্থ শট নিতে আসা অধিনায়ক নাজমুল হুদা ফয়সাল পোস্টের ওপর দিয়ে বল মারেন। সালাহ উদ্দিন শাহেদের পঞ্চম শটটি ঠেকিয়ে দেন ভারত গোলরক্ষক সুরাজ সিংহ। ভারতের হয়ে সিংগামায়ুম শামির শট জালে জড়াতেই দুই রকমের দৃশ্য অবতারণা অরুণাচলের গোল্ডেন জুবিলি স্টেডিয়ামে। ভারতীয়দের উচ্ছ্বাসের বিপরীতে শিশুর মতো কাঁদতে থাকেন মোর্শেদ আলী-নাজমুল হুদারা। পেনাল্টি শুট আউটে এগিয়ে থেকেও শেষ দুই শটে তালগোল পাকানো বাংলাদেশের যুবারা পারেনি চ্যাম্পিয়ন হতে।
রোববার অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের কাছে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হেরে রানার্সআপ হয়েছে বাংলাদেশ। বয়সভিত্তিক এ সাফে টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জিতেছে ভারত। নির্ধারিত ৯০ মিনিট খেলা ১-১ গোলে ড্র ছিল।
গোলরক্ষক ইসমাইল হোসেন মাহিনের হাস্যকর ভুলে শুরুতে পিছিয়ে পড়া গোলাম রব্বানী ছোটনের দল দ্বিতীয়ার্ধে দেখায় অসাধারণ ফুটবল শৈলী। ম্যাচের ২ মিনিটে সিংগামায়ুম শামির উড়ন্ত ফ্রি কিক বাংলাদেশ গোলরক্ষক ইসমাঈল হোসেন মাহিনের পিচ্ছিল হাতে শুরুতেই লিড নেয় ভারত।
এরপর আরও কয়েকবার ভুল করেন গোলপোস্টের নিচে দাঁড়ানো মাহিন। পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ ৪১ মিনিটে ভারতের জালে বল পাঠায়। কিন্তু রেফারি ফাউলের বাঁশি বাজান। বিরতির পর গোল পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে বাংলাদেশের যুবারা। তার ফল আসে ম্যাচের ৬১ মিনিটে। কর্নার থেকে আসা বল জটলার মধ্যে পড়ে।
ভারতের বক্সের মধ্যে থেকে বদলি জয় আহমেদের শট চলে যায় জালে। সমতা ফেরানোর উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠা লাল-সবুজের দলটি ফিরে পায় হারানো আত্মবিশ্বাসও। প্রথমার্ধে তিনটি ভুল করা গোলরক্ষক মাহিন বেশ কয়েকটি অসাধারণ সেভ করে দলকে রক্ষা করেন।
ম্যাচের ৯১ মিনিটে যেভাবে নিজের জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে দলকে রক্ষা করেছেন মাহিন; তা ছিল অসাধারণ। আর ৯৫ মিনিটে গোললাইন থেকে বল ফিরিয়ে খেলা টাইব্রেকারে নিয়ে যান বাংলাদেশের সুমন সোরান।
পেনাল্টি শুট আউটে মিঠু চৌধুরী প্রথম শটেই গোল করেন। ভারতের আরবাশের নেয়া শটও জাল কাঁপায়। পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা মোর্শেদ আলীর দ্বিতীয় শটে বোকা বনে যান ভারত গোলরক্ষক। ভারতের রোহেনের শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন গোলরক্ষক মাহিন। জয় আহমেদ তৃতীয় শটে গোল করেন। ভারত বাকি শটগুলোতে গোল করলেও বাংলাদেশের নাজমুল আর শাহেদ পারেননি। তাতেই গড়ে দেয় ফাইনালের ভাগ্য। সাফের বয়সভিত্তিক এ প্রতিযোগিতায় ভারতের বিপক্ষে তিনবারের লড়াইয়ের সবগুলোতেই হেরেছে বাংলাদেশ।
নির্ধারিত সময় শেষে ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র হলে টুর্নামেন্টের বাইলজ অনুযায়ী টাইব্রেকারে গড়ায়। তাতে ভারতের ফরোয়ার্ড রোহেনের বল আটকিয়ে দিয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখান ইসমাইল। কিন্তু চতুর্থ শট নিতে এসে বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হুদা ফয়সাল বারের ওপর দিয়ে বল মারেন। শেষ শট নিতে এসে সালাহ উদ্দিন শাহেদও ব্যর্থ হন। তার শট সেভ করে দেন ভারতের গোলরক্ষক সুরজ। অন্যদিকে ভারতের অধিনায়ক শামি শট নিয়ে পুরো স্টেডিয়ামকে আনন্দে ভাসান। তাতে ৪-৩ ব্যবধানে যুব চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত।