০৫:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৭ মে ২০২৫

দুই পুত্রবধূকে নিয়ে পায়ে হেঁটে ফিরোজায় খালেদা জিয়ার প্রবেশ

ইউএনএ প্রতিবেদক
  • আপডেট: ১০:১৯:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
  • / 1

হেঁটে ফিরোজায় প্রবেশ করেছেন খালেদা জিয়া -ছবি: বিএনপির মিডিয়া সেল

চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় প্রবেশ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দীর্ঘদিনের অসুস্থতায় হুইলচেয়ার নিয়ে চলাচল করা খালেদা জিয়া মঙ্গলবার (৬ মে) গুলশানের বাসা ফিরোজায় গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে ভেতরে প্রবেশ করেন।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান এবং ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি। দীর্ঘদিন পর দলীয় প্রধানকে হাঁটতে দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন নেতাকর্মীরা।

সেখানে ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা। উপস্থিত বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী তখন স্লোগান দিচ্ছিলেন। খালেদা জিয়াকে হাঁটতে দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তারা।

তারা বলছিলেন, গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন। তার নেতৃত্বে আমরা সব বাধা অতিক্রম করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব।

দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগতে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে জনসমক্ষে সাধারণত হুইলচেয়ারে দেখা গেলেও মঙ্গলবার (৬ মে) ছিল এক ভিন্ন চিত্র। সকালে কাতারের একটি রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে সরাসরি গুলশানে ফিরোজায় যান। গাড়ি থেকে নেমে পুত্রবধূসহ অন্যদের সহায়তায় ধীরে ধীরে হেঁটে বাসায় প্রবেশ করেন তিনি।

মুহূর্তটি বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে আবেগের সৃষ্টি করে। অনেকেই বলছেন, খালেদা জিয়ার পায়ে হেঁটে বাসায় প্রবেশ শুধু তার শারীরিক উন্নতির প্রতীক নয় বরং একটি আত্মবিশ্বাসী প্রত্যাবর্তনের বার্তাও হতে পারে।

বিএনপির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, ম্যাডাম আজ নিজে হেঁটে ফিরোজায় ঢুকেছেন এটাই আমাদের কাছে অনেক বড় প্রেরণা। তিনি লড়াকু ছিলেন, আছেন, থাকবেন।

এই প্রত্যাবর্তনের প্রতিটি মুহূর্ত দলীয় নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন ‘নেত্রী ফিরেছেন, নেত্রী হেঁটে এসেছেন’ এই বার্তায়।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশ ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত হলে খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার পথ উন্মুক্ত হয়। গত ৮ জানুয়ারি কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যান তিনি। সেখানে পৌঁছানোর পর তাকে লন্ডন ক্লিনিক নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালটিতে তিনি ১৭ দিন প্রখ্যাত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি এবং অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ২৫ জানুয়ারি থেকে তিনি তার বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন।

লন্ডনে চিকিৎসা শেষে বাংলাদেশ সময় সোমবার (৫ মে) রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে খালেদা জিয়া কাতারের রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান পুত্র তারেক রহমান।

উড়োজাহাজটি মাঝে কাতারের রাজধানী দোহায় যাত্রাবিরতি করে। এরপর বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টা ৫ মিনিটে বিশেষ ওই উড়োজাহাজ দোহা বিমানবন্দর থেকে ঢাকার পথে যাত্রা করে।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

দুই পুত্রবধূকে নিয়ে পায়ে হেঁটে ফিরোজায় খালেদা জিয়ার প্রবেশ

আপডেট: ১০:১৯:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

হেঁটে ফিরোজায় প্রবেশ করেছেন খালেদা জিয়া -ছবি: বিএনপির মিডিয়া সেল

চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় প্রবেশ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দীর্ঘদিনের অসুস্থতায় হুইলচেয়ার নিয়ে চলাচল করা খালেদা জিয়া মঙ্গলবার (৬ মে) গুলশানের বাসা ফিরোজায় গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে ভেতরে প্রবেশ করেন।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান এবং ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি। দীর্ঘদিন পর দলীয় প্রধানকে হাঁটতে দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন নেতাকর্মীরা।

সেখানে ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা। উপস্থিত বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী তখন স্লোগান দিচ্ছিলেন। খালেদা জিয়াকে হাঁটতে দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তারা।

তারা বলছিলেন, গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন। তার নেতৃত্বে আমরা সব বাধা অতিক্রম করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব।

দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগতে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে জনসমক্ষে সাধারণত হুইলচেয়ারে দেখা গেলেও মঙ্গলবার (৬ মে) ছিল এক ভিন্ন চিত্র। সকালে কাতারের একটি রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে সরাসরি গুলশানে ফিরোজায় যান। গাড়ি থেকে নেমে পুত্রবধূসহ অন্যদের সহায়তায় ধীরে ধীরে হেঁটে বাসায় প্রবেশ করেন তিনি।

মুহূর্তটি বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে আবেগের সৃষ্টি করে। অনেকেই বলছেন, খালেদা জিয়ার পায়ে হেঁটে বাসায় প্রবেশ শুধু তার শারীরিক উন্নতির প্রতীক নয় বরং একটি আত্মবিশ্বাসী প্রত্যাবর্তনের বার্তাও হতে পারে।

বিএনপির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, ম্যাডাম আজ নিজে হেঁটে ফিরোজায় ঢুকেছেন এটাই আমাদের কাছে অনেক বড় প্রেরণা। তিনি লড়াকু ছিলেন, আছেন, থাকবেন।

এই প্রত্যাবর্তনের প্রতিটি মুহূর্ত দলীয় নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন ‘নেত্রী ফিরেছেন, নেত্রী হেঁটে এসেছেন’ এই বার্তায়।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশ ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত হলে খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার পথ উন্মুক্ত হয়। গত ৮ জানুয়ারি কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যান তিনি। সেখানে পৌঁছানোর পর তাকে লন্ডন ক্লিনিক নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালটিতে তিনি ১৭ দিন প্রখ্যাত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি এবং অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ২৫ জানুয়ারি থেকে তিনি তার বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন।

লন্ডনে চিকিৎসা শেষে বাংলাদেশ সময় সোমবার (৫ মে) রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে খালেদা জিয়া কাতারের রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান পুত্র তারেক রহমান।

উড়োজাহাজটি মাঝে কাতারের রাজধানী দোহায় যাত্রাবিরতি করে। এরপর বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টা ৫ মিনিটে বিশেষ ওই উড়োজাহাজ দোহা বিমানবন্দর থেকে ঢাকার পথে যাত্রা করে।

শেয়ার করুন