০৭:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

দুর্গাপুরে রাস্তা খুঁড়েই কাজ বন্ধ , দুর্ভোগে হাজারো মানুষ

সরকার বাবুল,দুর্গাপুর (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি
  • আপডেট: ১১:০৪:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫
  • / 90

নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের চলাচলের অযোগ্য গ্রামীণ সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী– ছবি : ইউএনএ

নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রামের বাসিন্দারা এখন দুর্ভোগে কাতর। আটলা, নন্দেরছটি, ভাদুয়া ও মুন্সিপাড়া এই চার গ্রামের হাজারো মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা ছিল যে গ্রামীণ সড়ক, সেটিই এখন চলাচলের অযোগ্য।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর থেকে মুন্সিপাড়া পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রায় ৮ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয় এলজিইডি। গত ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে শুরু হয় এর কাজ। এরপর ওই রাস্তার মাটি খোঁড়াখোড়ির কাজের পর গত দুই মাস আগে কাজ বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদার। এরপর থেকে রাস্তায় তৈরি হয়েছে কাঁদা আর পানি।

এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কাজ বন্ধের প্রতিবাদে রবিবার (১৫ জুন) ভাদুয়া গ্রামে আয়োজন করা হয় মানববন্ধনের। এতে অংশ নেন শত-শত মানুষ ।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় বাসিন্দা মুফতি হারুনুর রশীদ খান, জিয়াউর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল হাকিম, মাদ্রাসা শিক্ষক মাহমুদ হাসান, ব্যবসায়ী আক্তারুজ্জামান দুলাল,কৃষক বাদল সরকার, অটো চালক হারুনুর রশীদ, মোটরসাইকেল চালক বিল্লাল মিয়া, স্থানীয় বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ,শিক্ষার্থী তাবাসসুমসহ অনেকেই।

স্থানীয় বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ বলেন, রাস্তাটার কাজ যখন শুরু হয়, তখন মনে হয়েছিল আমরা খুব তাড়াতাড়িই স্বস্তি পাব। এখন দেখি আগের চেয়েও বেশি কষ্ট। দ্রুত আমাদের এই রাস্তা চলাচলের উপযোগী চাই।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী মাহমুদ হাসান বলেন, বিদ্যালয়-মাদ্রাসায় যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে গেলে দুর্ভোগে পড়তে হয়। রাস্তার কাজে কিছু সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে জেনেছি। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই দুর্ভোগ থেকে আমাদের রক্ষা করতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

কৃষক বাদল সরকার ক্ষোভের সাথে বলেন , আমাদের ধান বাজার নিতে পারছি না এই রাস্তার জন্য। ধান ঝানজাইল বাজারে নিলে ১২০০ টাকা পাব কিন্তু এখানে ৮০০ টাকা মণ। আমরা অনেক কষ্টে আছি।

স্থানীয় শিক্ষার্থীরা জানায়, রোজ কাঁদা মাড়িয়ে আমাদের স্কুলে যেতে হয়। জামা নষ্ট হয়, বই ভিজে যায়। আমাদের এই রাস্তাটা যেন খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কার করে দেওয়া হয় ।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, টেন্ডারের পর ঠিকাদার বক্সকার্টিংয়ের কাজ শুরু করে। কিন্তু কিছু কাজ পরেই বালু সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেয়, ফলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো, ঠিকাদারকেও তাগিদ দেওয়া হবে যেন দ্রুত কাজ সম্পন্ন করে।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

দুর্গাপুরে রাস্তা খুঁড়েই কাজ বন্ধ , দুর্ভোগে হাজারো মানুষ

আপডেট: ১১:০৪:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫

নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের চলাচলের অযোগ্য গ্রামীণ সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী– ছবি : ইউএনএ

নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রামের বাসিন্দারা এখন দুর্ভোগে কাতর। আটলা, নন্দেরছটি, ভাদুয়া ও মুন্সিপাড়া এই চার গ্রামের হাজারো মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা ছিল যে গ্রামীণ সড়ক, সেটিই এখন চলাচলের অযোগ্য।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর থেকে মুন্সিপাড়া পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রায় ৮ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয় এলজিইডি। গত ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে শুরু হয় এর কাজ। এরপর ওই রাস্তার মাটি খোঁড়াখোড়ির কাজের পর গত দুই মাস আগে কাজ বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদার। এরপর থেকে রাস্তায় তৈরি হয়েছে কাঁদা আর পানি।

এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কাজ বন্ধের প্রতিবাদে রবিবার (১৫ জুন) ভাদুয়া গ্রামে আয়োজন করা হয় মানববন্ধনের। এতে অংশ নেন শত-শত মানুষ ।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় বাসিন্দা মুফতি হারুনুর রশীদ খান, জিয়াউর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল হাকিম, মাদ্রাসা শিক্ষক মাহমুদ হাসান, ব্যবসায়ী আক্তারুজ্জামান দুলাল,কৃষক বাদল সরকার, অটো চালক হারুনুর রশীদ, মোটরসাইকেল চালক বিল্লাল মিয়া, স্থানীয় বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ,শিক্ষার্থী তাবাসসুমসহ অনেকেই।

স্থানীয় বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ বলেন, রাস্তাটার কাজ যখন শুরু হয়, তখন মনে হয়েছিল আমরা খুব তাড়াতাড়িই স্বস্তি পাব। এখন দেখি আগের চেয়েও বেশি কষ্ট। দ্রুত আমাদের এই রাস্তা চলাচলের উপযোগী চাই।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী মাহমুদ হাসান বলেন, বিদ্যালয়-মাদ্রাসায় যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে গেলে দুর্ভোগে পড়তে হয়। রাস্তার কাজে কিছু সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে জেনেছি। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই দুর্ভোগ থেকে আমাদের রক্ষা করতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

কৃষক বাদল সরকার ক্ষোভের সাথে বলেন , আমাদের ধান বাজার নিতে পারছি না এই রাস্তার জন্য। ধান ঝানজাইল বাজারে নিলে ১২০০ টাকা পাব কিন্তু এখানে ৮০০ টাকা মণ। আমরা অনেক কষ্টে আছি।

স্থানীয় শিক্ষার্থীরা জানায়, রোজ কাঁদা মাড়িয়ে আমাদের স্কুলে যেতে হয়। জামা নষ্ট হয়, বই ভিজে যায়। আমাদের এই রাস্তাটা যেন খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কার করে দেওয়া হয় ।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, টেন্ডারের পর ঠিকাদার বক্সকার্টিংয়ের কাজ শুরু করে। কিন্তু কিছু কাজ পরেই বালু সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেয়, ফলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো, ঠিকাদারকেও তাগিদ দেওয়া হবে যেন দ্রুত কাজ সম্পন্ন করে।

শেয়ার করুন