১২:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫

ধান ও গমের পাশাপাশি ভুট্টা চাষে আশাজাগানিয়া সাফল্য

ইউএনএ প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার
  • আপডেট: ০৭:২৩:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
  • / 4

ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা-ছবি: সংগৃহীত

ভুট্টা একটি লাভজনক ফসল। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ধান ও গমের পাশাপাশি ভুট্টা চাষে আশাজাগানিয়া সাফল্য দেখা দিয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় ৩২ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩২০ মেট্রিক টন।

জানা যায়, ভুট্টা চাষে স্বল্প সময়ে অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়া যায় বলে এ অঞ্চলের কৃষকরা ধান ও গম চাষের পাশাপাশি ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এভাবেই দিন দিন কৃষকদের মাঝে ভুট্টা চাষের আগ্রহ বাড়ছে।

কৃষকরা জানান, গত বছর বাজারে ভুট্টার দাম বেশি থাকায় তারা অধিক লাভবান হয়েছেন। এ কারণে প্রণোদনা কর্মসূচির বাইরেও অনেক কৃষক তাদের জমিতে এ মৌসুমে ভুট্টার আবাদ করেছেন। এ ছাড়া ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধি ও ফলন ভালো হওয়ার জন্য কৃষকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা করছে কৃষি বিভাগ।

কৃষক হাফিজ জানান, ডিসেম্বরের দিকে বীজ বপনের পর ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই চারা লাগাতে হয়। নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার, সেচ ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। সাধারণত সাড়ে চার থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়।

কৃষক আবির বলেন, কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা পেয়ে চলতি মৌসুমে ৩০ শতাংশ জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। খরচ হয়েছে মাত্র ১০ হাজার টাকা। খরচ বাদে ৩০ হাজার টাকা আয় হবে আশা করছেন।

আরেক কৃষক জানান, ভুট্টার গাছে গাছে ফুল ও ফল এসেছে। মাস খানেকের মধ্যে ভুট্টা উত্তোলন করতে পারবো। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না এলে ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশা করছি।

আরো কয়েকজন কৃষক জানান, ফলন বাম্পার হয়েছে। যদি খরা না হতো আরও বেশি ফলন হতো। ভুট্টা চাষ আগে এ রকম দেখা যায়নি। ৩ থেকে ৪ বছর ধরে ফলন ভালো হচ্ছে, দেখতেও সুন্দর লাগছে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বীজ বপনের ১৫ থেকে ২০ দিন পর থেকে প্রায় ৯০ দিন পর্যন্ত চার দফা সেচ দেওয়া প্রয়োজন হয়। মাঝে মাঝে পাতার দাগ, মোচা বা দানা পচা, ক্যাপচা ও পোকামাকড়ের আক্রমণ হতে পারে, যা ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক প্রয়োগে দমনযোগ্য। সঠিক পরিচর্যায় কম পরিশ্রমে দ্বিগুণ লাভের সম্ভাবনা রয়েছে ভুট্টায়। রহিমপুর ইউনিয়নে ৬ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার বলেন, ভুট্টা চাষে খরচ কম কিন্তু দাম অনেক বেশি। সেই সঙ্গে ভুট্টার গাছ গোখাদ্য ও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে বাজারে ভুট্টার চাহিদাও অনেক বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

 

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

ধান ও গমের পাশাপাশি ভুট্টা চাষে আশাজাগানিয়া সাফল্য

আপডেট: ০৭:২৩:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা-ছবি: সংগৃহীত

ভুট্টা একটি লাভজনক ফসল। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ধান ও গমের পাশাপাশি ভুট্টা চাষে আশাজাগানিয়া সাফল্য দেখা দিয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় ৩২ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩২০ মেট্রিক টন।

জানা যায়, ভুট্টা চাষে স্বল্প সময়ে অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়া যায় বলে এ অঞ্চলের কৃষকরা ধান ও গম চাষের পাশাপাশি ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এভাবেই দিন দিন কৃষকদের মাঝে ভুট্টা চাষের আগ্রহ বাড়ছে।

কৃষকরা জানান, গত বছর বাজারে ভুট্টার দাম বেশি থাকায় তারা অধিক লাভবান হয়েছেন। এ কারণে প্রণোদনা কর্মসূচির বাইরেও অনেক কৃষক তাদের জমিতে এ মৌসুমে ভুট্টার আবাদ করেছেন। এ ছাড়া ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধি ও ফলন ভালো হওয়ার জন্য কৃষকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা করছে কৃষি বিভাগ।

কৃষক হাফিজ জানান, ডিসেম্বরের দিকে বীজ বপনের পর ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই চারা লাগাতে হয়। নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার, সেচ ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। সাধারণত সাড়ে চার থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়।

কৃষক আবির বলেন, কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা পেয়ে চলতি মৌসুমে ৩০ শতাংশ জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। খরচ হয়েছে মাত্র ১০ হাজার টাকা। খরচ বাদে ৩০ হাজার টাকা আয় হবে আশা করছেন।

আরেক কৃষক জানান, ভুট্টার গাছে গাছে ফুল ও ফল এসেছে। মাস খানেকের মধ্যে ভুট্টা উত্তোলন করতে পারবো। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না এলে ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশা করছি।

আরো কয়েকজন কৃষক জানান, ফলন বাম্পার হয়েছে। যদি খরা না হতো আরও বেশি ফলন হতো। ভুট্টা চাষ আগে এ রকম দেখা যায়নি। ৩ থেকে ৪ বছর ধরে ফলন ভালো হচ্ছে, দেখতেও সুন্দর লাগছে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বীজ বপনের ১৫ থেকে ২০ দিন পর থেকে প্রায় ৯০ দিন পর্যন্ত চার দফা সেচ দেওয়া প্রয়োজন হয়। মাঝে মাঝে পাতার দাগ, মোচা বা দানা পচা, ক্যাপচা ও পোকামাকড়ের আক্রমণ হতে পারে, যা ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক প্রয়োগে দমনযোগ্য। সঠিক পরিচর্যায় কম পরিশ্রমে দ্বিগুণ লাভের সম্ভাবনা রয়েছে ভুট্টায়। রহিমপুর ইউনিয়নে ৬ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার বলেন, ভুট্টা চাষে খরচ কম কিন্তু দাম অনেক বেশি। সেই সঙ্গে ভুট্টার গাছ গোখাদ্য ও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে বাজারে ভুট্টার চাহিদাও অনেক বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

 

শেয়ার করুন