০৬:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

‘পানিতে ভেজানো কিশমিশ’ খেলে কী হয়?

লাইফস্টাইল ডেস্ক
  • আপডেট: ০৭:০৯:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪
  • / 18

সংগৃহীত ছবি

কিশমিশ আদিকাল থেকে কর্মশক্তির চমৎকার উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কারণ মিষ্টি এ শুকনো ফলটিতে আছে বিশেষ কিছু জাদুকরী গুণ বা উপকারিতা যা আপনার জীবনকে বদলে দিতে পারে। নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে এক মুঠো ভেষজ ঔষধি কিশমিশ। কিশমিশ রোদে বা ড্রায়ারে শুকানো আঙুর।

ভেজানো কিশমিশ স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ভেজানো কিশমিশগুলো খেয়ে নিলেও পানিটা ফেলে দেন। এখানেই কিন্তু ভুল করেন। কিসমিস না-খেয়ে শুধু কিসমিসের পানি খেলেও ভিটামিন ও মিনারেল শরীরে প্রবেশ করে।

১.হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ হজম নিয়ে কোনো ধরনের সমস্যায় ভুগলে নিশ্চিন্তে খেতে পারেন কিশমিশ ভেজানো পানি। কারণ সপ্তাহে মাত্র তিন দিন এই পানীয় পান করলে তা আপনার হজম ক্ষমতা বাড়াবে এবং সেইসঙ্গে দূর করবে কোষ্ঠকাঠিন্যও। তাই ভালো হজমের জন্য এদিকে মনোযোগ দিন।

২.হাইড্রেশনঃ গরমের সময়ে তো বটেই, সারাবছরই আমাদের হাইড্রেশন বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কিশমিশ ভেজানো পানি পা করলে করলে তা শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়া পানির ঘাটতি পূরণে কাজ করে। তাই ডিহাইড্রেশন রোধে এই পানীয় আপনার সকালের খাবারের তালিকায় যুক্ত করে নিন। সপ্তাহে তিন দিন খালি পেটে এই পানীয় পান করলেই পাবেন উপকার।

৩.হার্ট ভালো রাখেঃ হার্ট ভালো রাখার জন্য খাবারের দিকে মনোযোগ দেওয়া জরুরি। সেজন্য খেতে হবে সহায়ক সব খাবার ও পানীয়। তেমনই একটি পানীয় হলো কিশমিশ ভেজানো পানি। কিশমিশে থাকে প্রচুর পটাশিয়াম যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হাটের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কাজ করে। সেইসঙ্গে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল দূর করতেও কাজ করে এটি।

৪.রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ আজকাল অনেকেরই রক্তস্বল্পতার সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এই সমস্যা দূর করতে উপকারী সব খাবার রাখতে হবে তালিকায়। আমাদের বাড়িতে থাকা কিশমিশ কিন্তু এ ধরনের সমস্যা দূর করতে বেশ সহায়ক। নিয়মিত কিশমিশ ভেজানো পানি পান করলে শরীরে রক্ত তৈরি হয়। যে কারণে দূর হয় রক্তস্বল্পতার মতো সমস্যাও।

৫. হাড়ের সুরক্ষা: বোরন হাড় গঠনের জন্য প্রয়োজন, যা কিশমিশে প্রচুর পরিমাণে থাকে। এতে আরও রয়েছে ক্যালসিয়াম ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট। প্রতিদিন ভেজা কিশমিশ খাওয়া হাড় সুস্থ ও সুদৃঢ় রাখতে সাহায্য করে।

৬. মুখের দুর্গন্ধ দূর: কিশমিশে আছে অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান, যা মুখের স্বাস্থ্য রক্ষায় ও দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।

৭. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি: কিশমিশ ভিটামিন বি এবং সি সমৃদ্ধ। তাই এই শুকনো ফলটি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় এবং সম্ভাব্য সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। এর প্রদাহনাশক উপাদান জ্বর, সংক্রমণ ও অন্যান্য দুর্বলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।

৮. শক্তি জোগায়: কিশমিশে থাকা প্রাকৃতিক গ্লুকোজ কর্মশক্তি বাড়ায়। পরিমিত কিশমিশ খাওয়া দুর্বলভাব কমায় ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।

৯. অন্ধত্ব ও কোলেস্ট্রেরল দূর: কিশমিশে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে। কিশমিশের দ্রবণীয় ফাইবার লিভার থেকে কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে।

১০. অনিদ্রা: কিশমিশে রয়েছে প্রচুর আয়রন, যা মানুষের অনিদ্রার সমস্যা দূর করতে সহায়ক। তাই প্রতিদিনই সকালে খালি পেটে ২টি করে কিশমিশ খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

১১. দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি: কিশমিশে থাকা ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, যা শিশুদের জন্য বিশেষ উপকারী।

১২. মনোযোগ ও বুদ্ধির বিকাশ: শিশুদের বুদ্ধির বিকাশে দারুণ কাজ করে কিশমিশ। এতে থাকা উপকারী উপাদান বোরন যেকোনো কাজে মনোযোগী হতে সাহায্য করে।

১৩. মানসিক প্রশান্তি: কিশমিশে থাকা আয়রন গভীর ঘুমের জন্য বিশেষ উপকারী। তা ছাড়া নিয়মিত কিশমিশ খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে অবসাদ দূর হতে পারে, যা মানসিক প্রশান্তি আনতে দারুণ কাজ করে।

শেয়ার করুন
ট্যাগ :

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

‘পানিতে ভেজানো কিশমিশ’ খেলে কী হয়?

আপডেট: ০৭:০৯:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

সংগৃহীত ছবি

কিশমিশ আদিকাল থেকে কর্মশক্তির চমৎকার উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কারণ মিষ্টি এ শুকনো ফলটিতে আছে বিশেষ কিছু জাদুকরী গুণ বা উপকারিতা যা আপনার জীবনকে বদলে দিতে পারে। নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে এক মুঠো ভেষজ ঔষধি কিশমিশ। কিশমিশ রোদে বা ড্রায়ারে শুকানো আঙুর।

ভেজানো কিশমিশ স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ভেজানো কিশমিশগুলো খেয়ে নিলেও পানিটা ফেলে দেন। এখানেই কিন্তু ভুল করেন। কিসমিস না-খেয়ে শুধু কিসমিসের পানি খেলেও ভিটামিন ও মিনারেল শরীরে প্রবেশ করে।

১.হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ হজম নিয়ে কোনো ধরনের সমস্যায় ভুগলে নিশ্চিন্তে খেতে পারেন কিশমিশ ভেজানো পানি। কারণ সপ্তাহে মাত্র তিন দিন এই পানীয় পান করলে তা আপনার হজম ক্ষমতা বাড়াবে এবং সেইসঙ্গে দূর করবে কোষ্ঠকাঠিন্যও। তাই ভালো হজমের জন্য এদিকে মনোযোগ দিন।

২.হাইড্রেশনঃ গরমের সময়ে তো বটেই, সারাবছরই আমাদের হাইড্রেশন বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কিশমিশ ভেজানো পানি পা করলে করলে তা শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়া পানির ঘাটতি পূরণে কাজ করে। তাই ডিহাইড্রেশন রোধে এই পানীয় আপনার সকালের খাবারের তালিকায় যুক্ত করে নিন। সপ্তাহে তিন দিন খালি পেটে এই পানীয় পান করলেই পাবেন উপকার।

৩.হার্ট ভালো রাখেঃ হার্ট ভালো রাখার জন্য খাবারের দিকে মনোযোগ দেওয়া জরুরি। সেজন্য খেতে হবে সহায়ক সব খাবার ও পানীয়। তেমনই একটি পানীয় হলো কিশমিশ ভেজানো পানি। কিশমিশে থাকে প্রচুর পটাশিয়াম যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হাটের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কাজ করে। সেইসঙ্গে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল দূর করতেও কাজ করে এটি।

৪.রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ আজকাল অনেকেরই রক্তস্বল্পতার সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এই সমস্যা দূর করতে উপকারী সব খাবার রাখতে হবে তালিকায়। আমাদের বাড়িতে থাকা কিশমিশ কিন্তু এ ধরনের সমস্যা দূর করতে বেশ সহায়ক। নিয়মিত কিশমিশ ভেজানো পানি পান করলে শরীরে রক্ত তৈরি হয়। যে কারণে দূর হয় রক্তস্বল্পতার মতো সমস্যাও।

৫. হাড়ের সুরক্ষা: বোরন হাড় গঠনের জন্য প্রয়োজন, যা কিশমিশে প্রচুর পরিমাণে থাকে। এতে আরও রয়েছে ক্যালসিয়াম ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট। প্রতিদিন ভেজা কিশমিশ খাওয়া হাড় সুস্থ ও সুদৃঢ় রাখতে সাহায্য করে।

৬. মুখের দুর্গন্ধ দূর: কিশমিশে আছে অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান, যা মুখের স্বাস্থ্য রক্ষায় ও দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।

৭. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি: কিশমিশ ভিটামিন বি এবং সি সমৃদ্ধ। তাই এই শুকনো ফলটি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় এবং সম্ভাব্য সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। এর প্রদাহনাশক উপাদান জ্বর, সংক্রমণ ও অন্যান্য দুর্বলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।

৮. শক্তি জোগায়: কিশমিশে থাকা প্রাকৃতিক গ্লুকোজ কর্মশক্তি বাড়ায়। পরিমিত কিশমিশ খাওয়া দুর্বলভাব কমায় ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।

৯. অন্ধত্ব ও কোলেস্ট্রেরল দূর: কিশমিশে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে। কিশমিশের দ্রবণীয় ফাইবার লিভার থেকে কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে।

১০. অনিদ্রা: কিশমিশে রয়েছে প্রচুর আয়রন, যা মানুষের অনিদ্রার সমস্যা দূর করতে সহায়ক। তাই প্রতিদিনই সকালে খালি পেটে ২টি করে কিশমিশ খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

১১. দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি: কিশমিশে থাকা ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, যা শিশুদের জন্য বিশেষ উপকারী।

১২. মনোযোগ ও বুদ্ধির বিকাশ: শিশুদের বুদ্ধির বিকাশে দারুণ কাজ করে কিশমিশ। এতে থাকা উপকারী উপাদান বোরন যেকোনো কাজে মনোযোগী হতে সাহায্য করে।

১৩. মানসিক প্রশান্তি: কিশমিশে থাকা আয়রন গভীর ঘুমের জন্য বিশেষ উপকারী। তা ছাড়া নিয়মিত কিশমিশ খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে অবসাদ দূর হতে পারে, যা মানসিক প্রশান্তি আনতে দারুণ কাজ করে।

শেয়ার করুন