০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫

পিএসজির জয়ের উৎসব রূপ নেয় সহিংসতায় : নিহত ২

ইউএনএ ডেস্ক
  • আপডেট: ০৭:৩১:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
  • / 2

গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ৫৫৯ জনকে -ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতেছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন (পিএসজি)। এ উপলক্ষে রাজধানী প্যারিসসহ বিভিন্ন স্থানে এই জয়ের উৎসব রূপ নিয়েছে সহিংসতায়। রোববার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (১ জুন) জানিয়েছে, এ ঘটনায় ২ জন নিহত এবং ১৯২ জন আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ৫৫৯ জনকে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনার পার্ক দেস প্রিন্সে বড় পর্দায় পিএসজির খেলা দেখেন প্রায় ৪৮ হাজার সমর্থক। জয়ের পর হাজার হাজার সমর্থক চ্যাম্পস-এলিসি বুলেভার্ডে জড়ো হন। সেখানে তারা আতশবাজি ফোটান এবং গাড়ি থেকে পতাকা নাড়েন। আইফেল টাওয়ার পিএসজির নীল-লাল রঙে আলোকিত হয়।

তবে উৎসবের মাঝেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয় সমর্থকদের। এরপর উত্তেজিত সমর্থকেরা স্থানীয় বাস স্টপেজ ভাঙচুর করেন এবং পুলিশের দিকে পাথর নিক্ষেপ করেন। পরবর্তীকালে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, পিপার স্প্রে এবং জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রোববার সকালের হিসাব অনুযায়ী, প্যারিসে ৪৯১ জনসহ ৫৫৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে যাদের মধ্যে ৩২০ জনকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, উত্তেজিত সমর্থকেরা ৬২৯-এর বেশি জায়গায় আগুন দেন। ২০০টির বেশি গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছেন। নিরাপত্তা বাহিনীর ২২ জন সদস্য ও ফায়ার সার্ভিসের ৭ জন কর্মী এই ঘটনায় আহত হয়েছেন। এক্সের এক পোস্টে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেটাইলো এই ঘটনাকে ‘বর্বরতা’ বলে নিন্দা করেছেন।

ম্যাচের আগে প্যারিসে প্রায় ৫ হাজার ৪০০ পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল। ম্যাচের প্রথমার্ধে স্টেডিয়ামের বাইরে ফ্লেয়ার জ্বালানো নিয়ে পিএসজি-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়, সেখানেও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছিল।

পিএসজির এই জয় ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় মঞ্চে ফ্রান্সের জন্য গৌরবের মুহূর্ত। ম্যাচে ১৯ বছর বয়সী দেসিরে দুয়ে দুই গোল করেন এবং সেনি মায়ুলু গোল করে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতাদের তালিকায় স্থান পান। কোচ লুইস এনরিকের নেতৃত্বে পিএসজি ইউরোপীয় ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে (৫-০) ফাইনাল জিতেছে। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, পিএসজির জন্য গৌরবের দিন! আমরা সবাই গর্বিত। তিনি পিএসজির খেলোয়াড়দের এলিসি প্রাসাদেও আমন্ত্রণ জানান।

তবে প্যারিসে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে উৎসবে সহিংসতা নতুন নয়। ২০১৩ সালে পিএসজির লিগ জয়ের উৎসবে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হন। ২০১৯ সালে আলজেরিয়ার আফ্রিকান কাপ জয়, ২০২১ সালে মরক্কো-আলজেরিয়া ম্যাচ এবং ২০২২ সালে ফ্রান্স ও মরক্কোর বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে উত্তীর্ণ হওয়ার পর চ্যাম্পস-এলিসিতে সহিংসতা হয়।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

পিএসজির জয়ের উৎসব রূপ নেয় সহিংসতায় : নিহত ২

আপডেট: ০৭:৩১:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ৫৫৯ জনকে -ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতেছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন (পিএসজি)। এ উপলক্ষে রাজধানী প্যারিসসহ বিভিন্ন স্থানে এই জয়ের উৎসব রূপ নিয়েছে সহিংসতায়। রোববার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (১ জুন) জানিয়েছে, এ ঘটনায় ২ জন নিহত এবং ১৯২ জন আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ৫৫৯ জনকে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনার পার্ক দেস প্রিন্সে বড় পর্দায় পিএসজির খেলা দেখেন প্রায় ৪৮ হাজার সমর্থক। জয়ের পর হাজার হাজার সমর্থক চ্যাম্পস-এলিসি বুলেভার্ডে জড়ো হন। সেখানে তারা আতশবাজি ফোটান এবং গাড়ি থেকে পতাকা নাড়েন। আইফেল টাওয়ার পিএসজির নীল-লাল রঙে আলোকিত হয়।

তবে উৎসবের মাঝেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয় সমর্থকদের। এরপর উত্তেজিত সমর্থকেরা স্থানীয় বাস স্টপেজ ভাঙচুর করেন এবং পুলিশের দিকে পাথর নিক্ষেপ করেন। পরবর্তীকালে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, পিপার স্প্রে এবং জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রোববার সকালের হিসাব অনুযায়ী, প্যারিসে ৪৯১ জনসহ ৫৫৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে যাদের মধ্যে ৩২০ জনকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, উত্তেজিত সমর্থকেরা ৬২৯-এর বেশি জায়গায় আগুন দেন। ২০০টির বেশি গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছেন। নিরাপত্তা বাহিনীর ২২ জন সদস্য ও ফায়ার সার্ভিসের ৭ জন কর্মী এই ঘটনায় আহত হয়েছেন। এক্সের এক পোস্টে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেটাইলো এই ঘটনাকে ‘বর্বরতা’ বলে নিন্দা করেছেন।

ম্যাচের আগে প্যারিসে প্রায় ৫ হাজার ৪০০ পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল। ম্যাচের প্রথমার্ধে স্টেডিয়ামের বাইরে ফ্লেয়ার জ্বালানো নিয়ে পিএসজি-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়, সেখানেও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছিল।

পিএসজির এই জয় ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় মঞ্চে ফ্রান্সের জন্য গৌরবের মুহূর্ত। ম্যাচে ১৯ বছর বয়সী দেসিরে দুয়ে দুই গোল করেন এবং সেনি মায়ুলু গোল করে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতাদের তালিকায় স্থান পান। কোচ লুইস এনরিকের নেতৃত্বে পিএসজি ইউরোপীয় ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে (৫-০) ফাইনাল জিতেছে। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, পিএসজির জন্য গৌরবের দিন! আমরা সবাই গর্বিত। তিনি পিএসজির খেলোয়াড়দের এলিসি প্রাসাদেও আমন্ত্রণ জানান।

তবে প্যারিসে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে উৎসবে সহিংসতা নতুন নয়। ২০১৩ সালে পিএসজির লিগ জয়ের উৎসবে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হন। ২০১৯ সালে আলজেরিয়ার আফ্রিকান কাপ জয়, ২০২১ সালে মরক্কো-আলজেরিয়া ম্যাচ এবং ২০২২ সালে ফ্রান্স ও মরক্কোর বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে উত্তীর্ণ হওয়ার পর চ্যাম্পস-এলিসিতে সহিংসতা হয়।

শেয়ার করুন