১২:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫

পুশইন প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছি : বিজিবি ডিজি

ইউএনএ প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা
  • আপডেট: ০৯:১৯:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
  • / 13

বক্তব্য রাখছেন বিজিবি ডিজি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী -ছবি : ইউএনএ

পুশইন প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছি বলে জানান বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ভারতের পুশইন প্রতিরোধে জনগণের সহযোগিতা লাগবে। সীমান্তে বসবাসরত স্থানীয় জনগণ খেয়াল করে বিজিবির টিমকে খবর দিলে টহল টিম দ্রুত যাবে সেখানে।

শনিবার (১৭ মে) সুন্দরবন শ্যামনগরে বিজিবির ‘বয়েসিং ভাসমান বিওপি’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। বিজিবির ‘বয়েসিং ভাসমান বিওপি’ উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, মূলত পুশইন যে এলাকাগুলো দিয়ে হচ্ছে এটা সিলেটের বিয়ানীবাজার, শ্রীমঙ্গল, হবিগঞ্জ ওই এলাকায়। আর এদিকে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী, যেদিকে চর এলাকা, প্রত্যন্ত এলাকা, সেদিক দিয়ে মূলত হচ্ছে। আর পার্বত্য চট্টগ্রামের যেদিকে জনবসতি নাই সেদিকে কিছুটা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এটা প্রতিরোধ করার আমরা চেষ্টা করছি। সত্যি কথা বলতে আজ সকালেও কিছু পুশইন হয়েছে। আমাদের বর্ডারটা এত বিস্তৃত, আসলে প্রতিটি জায়গা গার্ড করা সম্ভব না। এজন্য আমরা জনগণের সাহায্য চেয়েছি। আনসারের সাহায্য নিচ্ছি।

পুশইনকে নিয়ম বহির্ভূত কাজ মন্তব্য করে বিজিবি ডিজি বলেন, আমরা চাই এটা যদি বাংলাদেশি নাগরিক হয় সেটা যেন একটা নিয়মমাফিকভাবে আমরা হস্তান্তর-গ্রহণের মাধ্যমে নিতে পারি।

বিষয়টি আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এবং সীমান্তে বিজিবির ‘সার্বিক চেষ্টার’ কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ফ্ল্যাগ মিটিং, প্রতিবাদলিপি এবং এ ধরনের রুটিন কাজ যেগুলো আছে সেগুলো চলছে।

জনসাধারণকে এ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, স্থানীয় জনগণও যদি খেয়াল রাখে তাহলে কারও পুশইন করার সুযোগ নেই। এটা যদি স্থানীয় জনগণ খেয়াল করে আমাদের পেট্রোলকে খবর দিলে ওদিকে কুইকলি যেতে পারে।

এছাড়া নিজেদের টহল ও জনবল বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে জনসাধারণের কাছে তথ্য সহায়তা চেয়েছেন মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, তারা মূলত বাংলাদেশি, যারা গত কয়েক বছর থেক ২০-৩০ বছর আগেও ভারতে বিভিন্নভাবে গমন করেছিল। আবারও পূনরাবৃত্তি করতে চায়, যারাই গমণ করে এটা হস্তান্তর-গ্রহণের একটা প্রক্রিয়া আছে সুনির্দিষ্ট। সেটা ফলো করা হলে দুই দেশের জন্যই ভালো হবে।

যারা আসছে তাদের অনেকের মৌখিক ভাষ্য, তাদের আইডিকার্ড, আধারকার্ড ছিল যেটা রেখে দেওয়া হয়েছে। এ তথ্য জানিয়ে বিজিবি ডিজি বলেন, এর প্রমাণতো আমরা করতে পারছি না।

ভারতের পুশইনের মধ্যে অপরাধীরা দেশে প্রবেশের আশংকা আছে কি না জানতে চাইলে মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, কোনো কিছুর সম্ভাবনাকেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সব দিক থেকে সব সম্ভাবনা রয়ে যায়। তবে আমাদের দেশের জন্য, জাতির জন্য ক্ষতিকর হবে এমন কিছুই যাতে না হয় সেজন্য আমরা জোরদার নিরাপত্তা নিশ্চিতের চেষ্টা করছি।

বিজিবির রিভারাইন বর্ডার গার্ড কোম্পানিটি মূলত সুন্দরবন এলাকায় ‘পাহারা দেওয়া, টহল করা, চোরাচালান প্রতিরোধ করা, যে কোনো ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ করতে কাজ করছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, এখানে রায়মঙ্গল নদী, এরসঙ্গে বোয়েসিং যে চ্যানেলটি আছে এটি দিয়ে চোরাচালানের বেশ বড় একটা চক্র সক্রিয় ছিল। এটা প্রতিরোধ করার জন্য আমি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি তৃতীয় ভাসমান বিওপিটা এখানে স্থাপন করবো।

এই ভাসমান বিওপিটি দেশেই নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডে তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে বিজিবি ডিজি বলেন, এটা আমরা এখানে স্থাপন করে কার্যক্রম শুরু করেছি। আমরা এর মাধ্যমে এ এলাকায় অপরাধ এবং চোরাচালান আরও সুন্দরভাবে প্রতিহত করার আশা রাখি।

বিজিবি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিজিবির যশোর রিজিয়ন কমান্ডার, খুলনা সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার, নীলডুমুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক, আরবিজি কোম্পানির অধিনায়ক, বিজিবির অন্যান্য পদবীর কর্মকর্তা ও সৈনিকরা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

পুশইন প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছি : বিজিবি ডিজি

আপডেট: ০৯:১৯:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

বক্তব্য রাখছেন বিজিবি ডিজি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী -ছবি : ইউএনএ

পুশইন প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছি বলে জানান বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ভারতের পুশইন প্রতিরোধে জনগণের সহযোগিতা লাগবে। সীমান্তে বসবাসরত স্থানীয় জনগণ খেয়াল করে বিজিবির টিমকে খবর দিলে টহল টিম দ্রুত যাবে সেখানে।

শনিবার (১৭ মে) সুন্দরবন শ্যামনগরে বিজিবির ‘বয়েসিং ভাসমান বিওপি’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। বিজিবির ‘বয়েসিং ভাসমান বিওপি’ উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, মূলত পুশইন যে এলাকাগুলো দিয়ে হচ্ছে এটা সিলেটের বিয়ানীবাজার, শ্রীমঙ্গল, হবিগঞ্জ ওই এলাকায়। আর এদিকে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী, যেদিকে চর এলাকা, প্রত্যন্ত এলাকা, সেদিক দিয়ে মূলত হচ্ছে। আর পার্বত্য চট্টগ্রামের যেদিকে জনবসতি নাই সেদিকে কিছুটা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এটা প্রতিরোধ করার আমরা চেষ্টা করছি। সত্যি কথা বলতে আজ সকালেও কিছু পুশইন হয়েছে। আমাদের বর্ডারটা এত বিস্তৃত, আসলে প্রতিটি জায়গা গার্ড করা সম্ভব না। এজন্য আমরা জনগণের সাহায্য চেয়েছি। আনসারের সাহায্য নিচ্ছি।

পুশইনকে নিয়ম বহির্ভূত কাজ মন্তব্য করে বিজিবি ডিজি বলেন, আমরা চাই এটা যদি বাংলাদেশি নাগরিক হয় সেটা যেন একটা নিয়মমাফিকভাবে আমরা হস্তান্তর-গ্রহণের মাধ্যমে নিতে পারি।

বিষয়টি আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এবং সীমান্তে বিজিবির ‘সার্বিক চেষ্টার’ কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ফ্ল্যাগ মিটিং, প্রতিবাদলিপি এবং এ ধরনের রুটিন কাজ যেগুলো আছে সেগুলো চলছে।

জনসাধারণকে এ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, স্থানীয় জনগণও যদি খেয়াল রাখে তাহলে কারও পুশইন করার সুযোগ নেই। এটা যদি স্থানীয় জনগণ খেয়াল করে আমাদের পেট্রোলকে খবর দিলে ওদিকে কুইকলি যেতে পারে।

এছাড়া নিজেদের টহল ও জনবল বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে জনসাধারণের কাছে তথ্য সহায়তা চেয়েছেন মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, তারা মূলত বাংলাদেশি, যারা গত কয়েক বছর থেক ২০-৩০ বছর আগেও ভারতে বিভিন্নভাবে গমন করেছিল। আবারও পূনরাবৃত্তি করতে চায়, যারাই গমণ করে এটা হস্তান্তর-গ্রহণের একটা প্রক্রিয়া আছে সুনির্দিষ্ট। সেটা ফলো করা হলে দুই দেশের জন্যই ভালো হবে।

যারা আসছে তাদের অনেকের মৌখিক ভাষ্য, তাদের আইডিকার্ড, আধারকার্ড ছিল যেটা রেখে দেওয়া হয়েছে। এ তথ্য জানিয়ে বিজিবি ডিজি বলেন, এর প্রমাণতো আমরা করতে পারছি না।

ভারতের পুশইনের মধ্যে অপরাধীরা দেশে প্রবেশের আশংকা আছে কি না জানতে চাইলে মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, কোনো কিছুর সম্ভাবনাকেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সব দিক থেকে সব সম্ভাবনা রয়ে যায়। তবে আমাদের দেশের জন্য, জাতির জন্য ক্ষতিকর হবে এমন কিছুই যাতে না হয় সেজন্য আমরা জোরদার নিরাপত্তা নিশ্চিতের চেষ্টা করছি।

বিজিবির রিভারাইন বর্ডার গার্ড কোম্পানিটি মূলত সুন্দরবন এলাকায় ‘পাহারা দেওয়া, টহল করা, চোরাচালান প্রতিরোধ করা, যে কোনো ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ করতে কাজ করছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, এখানে রায়মঙ্গল নদী, এরসঙ্গে বোয়েসিং যে চ্যানেলটি আছে এটি দিয়ে চোরাচালানের বেশ বড় একটা চক্র সক্রিয় ছিল। এটা প্রতিরোধ করার জন্য আমি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি তৃতীয় ভাসমান বিওপিটা এখানে স্থাপন করবো।

এই ভাসমান বিওপিটি দেশেই নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডে তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে বিজিবি ডিজি বলেন, এটা আমরা এখানে স্থাপন করে কার্যক্রম শুরু করেছি। আমরা এর মাধ্যমে এ এলাকায় অপরাধ এবং চোরাচালান আরও সুন্দরভাবে প্রতিহত করার আশা রাখি।

বিজিবি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিজিবির যশোর রিজিয়ন কমান্ডার, খুলনা সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার, নীলডুমুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক, আরবিজি কোম্পানির অধিনায়ক, বিজিবির অন্যান্য পদবীর কর্মকর্তা ও সৈনিকরা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন