১২:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

প্রশাসনিক সমন্বয় ও সংস্কার ছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণ সম্ভব নয় : রিজওয়ানা

ইউএনএ প্রতিবেদক
  • আপডেট: ০৯:৫১:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
  • / 4

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান -ফাইল ফটো

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, প্রশাসনিক সমন্বয় ও সংস্কার ছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণ সম্ভব নয়। প্রকৃত টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রকৃতির সঙ্গে সত্যিকারের সম্প্রীতি জরুরি।

প্রকল্পকে পরিবেশবান্ধব হিসেবে তুলে ধরার জন্য ‘সবুজ প্রলেপ’ বা নিয়মতান্ত্রিক কাজের মতো পরিবেশ সংরক্ষণকে দেখলে টেকসই উন্নয়ন অর্জিত হবে না। টেকসই উন্নয়নের জন্য জনসম্পৃক্ততা, তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার এবং ন্যায়বিচারের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

বৃহস্পতিবার পরিবেশ অধিদফতরের আগারগাঁও কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস (IBD) উপলক্ষে ‘হারমনি উইথ নেচার অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত পরামর্শ কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, শুধু একটি মন্ত্রণালয় পরিবেশ নিয়ে কাজ করলে হবে না সকল মন্ত্রণালয়কে এই দায়িত্ব নিতে হবে।

টেকসই উন্নয়নের জন্য শুধু চেকলিস্ট পূরণ করাই যথেষ্ট নয়। পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ (EIA) প্রতিবেদনগুলো যদি মানুষের ভাষায় লেখা না হয় বা জনসাধারণের সঙ্গে শেয়ার না করা হয় তাহলে সেগুলোর কোনো কার্যকারিতা থাকে না। জনমত শোনা যথেষ্ট নয় তা অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, পরিবেশবিদদের সঙ্গে সরকারি সংস্থাগুলোর দূরত্ব দিনে দিনে বাড়ছে। অনেক সময় প্রকল্প অনুমোদনের সময় পরিবেশগত দিকগুলোকে উপেক্ষা করা হয়। পরিবেশকে ‘পরবর্তীতে ভাবার বিষয়’ হিসেবে দেখা হয়-এই দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমি পরিবেশ অধিদফতরকে নির্দেশ দিয়েছি যেন সকল EIA প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ করে। জনগণের জানার অধিকার আছে। অভিযোগের জবাব দেওয়া দয়া নয় এটা আমাদের দায়িত্ব। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশের পরিবেশগত অবনতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমাদের বায়ু, নদী ও জীববৈচিত্র্য চরম হুমকির মুখে। প্রকৃতিকে উন্নয়নের কেন্দ্রে না রাখলে আমরা এগোতে পারব না।

পরামর্শ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান, এনডিসি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) ড. ফাহমিদা খানম, ইউএনডিপি বাংলাদেশের ডেপুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ সোনালি দয়ারত্নে, খ্যাতিমান বন্যপ্রাণি জীববিজ্ঞানী প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. মো. সোহরাব আলী।

পরিবেশবাদী, নীতিনির্ধারক, শিক্ষাবিদ ও উন্নয়ন সহযোগীদের উপস্থিতিতে আয়োজিত এই কর্মশালায় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও প্রকৃতির সঙ্গে সম্প্রীতির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রশাসনিক সমন্বয় ও সংস্কার ছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণ সম্ভব নয় : রিজওয়ানা

আপডেট: ০৯:৫১:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান -ফাইল ফটো

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, প্রশাসনিক সমন্বয় ও সংস্কার ছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণ সম্ভব নয়। প্রকৃত টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রকৃতির সঙ্গে সত্যিকারের সম্প্রীতি জরুরি।

প্রকল্পকে পরিবেশবান্ধব হিসেবে তুলে ধরার জন্য ‘সবুজ প্রলেপ’ বা নিয়মতান্ত্রিক কাজের মতো পরিবেশ সংরক্ষণকে দেখলে টেকসই উন্নয়ন অর্জিত হবে না। টেকসই উন্নয়নের জন্য জনসম্পৃক্ততা, তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার এবং ন্যায়বিচারের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

বৃহস্পতিবার পরিবেশ অধিদফতরের আগারগাঁও কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস (IBD) উপলক্ষে ‘হারমনি উইথ নেচার অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত পরামর্শ কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, শুধু একটি মন্ত্রণালয় পরিবেশ নিয়ে কাজ করলে হবে না সকল মন্ত্রণালয়কে এই দায়িত্ব নিতে হবে।

টেকসই উন্নয়নের জন্য শুধু চেকলিস্ট পূরণ করাই যথেষ্ট নয়। পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ (EIA) প্রতিবেদনগুলো যদি মানুষের ভাষায় লেখা না হয় বা জনসাধারণের সঙ্গে শেয়ার না করা হয় তাহলে সেগুলোর কোনো কার্যকারিতা থাকে না। জনমত শোনা যথেষ্ট নয় তা অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, পরিবেশবিদদের সঙ্গে সরকারি সংস্থাগুলোর দূরত্ব দিনে দিনে বাড়ছে। অনেক সময় প্রকল্প অনুমোদনের সময় পরিবেশগত দিকগুলোকে উপেক্ষা করা হয়। পরিবেশকে ‘পরবর্তীতে ভাবার বিষয়’ হিসেবে দেখা হয়-এই দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমি পরিবেশ অধিদফতরকে নির্দেশ দিয়েছি যেন সকল EIA প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ করে। জনগণের জানার অধিকার আছে। অভিযোগের জবাব দেওয়া দয়া নয় এটা আমাদের দায়িত্ব। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশের পরিবেশগত অবনতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমাদের বায়ু, নদী ও জীববৈচিত্র্য চরম হুমকির মুখে। প্রকৃতিকে উন্নয়নের কেন্দ্রে না রাখলে আমরা এগোতে পারব না।

পরামর্শ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান, এনডিসি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) ড. ফাহমিদা খানম, ইউএনডিপি বাংলাদেশের ডেপুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ সোনালি দয়ারত্নে, খ্যাতিমান বন্যপ্রাণি জীববিজ্ঞানী প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. মো. সোহরাব আলী।

পরিবেশবাদী, নীতিনির্ধারক, শিক্ষাবিদ ও উন্নয়ন সহযোগীদের উপস্থিতিতে আয়োজিত এই কর্মশালায় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও প্রকৃতির সঙ্গে সম্প্রীতির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

শেয়ার করুন