০৪:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে ইরানে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট: ০২:৩৩:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪
  • / 17

ছবি-সংগৃহীত

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চলছে ভোটগ্রহণ। শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল আটটা থেকে শুরু হওয়া ভোট গ্রহণ চলবে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। তবে দুই ঘণ্টা করে করে মধ্যরাত পর্যন্ত কয়েক দফায় সময় বাড়ানো হতে পারে।

নিয়ম অনুযায়ী, ইরানে আগামী বছরের জুনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট হওয়ার কথা ছিল। অর্থাৎ ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের চার বছরের মেয়াদ শেষে ভোট অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু গত ১৯ মে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হওয়ায় প্রেসিডেন্ট পদটি শূন্য হয়ে পড়ায় আগাম নির্বাচন হচ্ছে। সংবিধান অনুযায়ী, ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

নির্বাচনে ছয়জনকে প্রার্থী হওয়ার অনুমতি দিয়েছিল ইরান কর্তৃপক্ষ। পরে দুজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।

নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী চার প্রার্থী হলেন- পার্লামেন্ট স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ, আইনপ্রণেতা মাসুদ পেজেশকিয়ান, জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাইদ জালিলি এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোস্তফা পুরমোহাম্মদি।

ধারণা করা হচ্ছে, নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি খুব বেশি হবে না। নির্বাচনে সংস্কারপন্থীদের প্রার্থিতা না দেওয়া, নানা অর্থনৈতিক সংকট এবং ইরানজুড়ে চলা প্রাণঘাতী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ভোটারদের মধ্যে হতাশা রয়েছে। এর আগে ২০২১ সালের নির্বাচনে ৪৮ শতাংশের কিছু বেশি ভোটার উপস্থিতি ছিল, যা ইরানের কোনো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সর্বনিম্ন ভোটার উপস্থিতি। আগামীকাল শনিবার ফল ঘোষণার কথা রয়েছে।

তবে ভোটগ্রহণের পর যেহেতু ব্যালটগুলো ম্যানুয়ালি গণনা করা হয়, তাই চূড়ান্ত ফলাফল আগামী দুই দিনের মধ্যে ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও ফলাফলের প্রাথমিক প্রবণতা বা প্রাথমিক পরিসংখ্যান শিগগিরই সামনে আসতে পারে।

যদি কোনো প্রার্থী শূন্য ভোটসহ প্রদত্ত সমস্ত ব্যালট থেকে কমপক্ষে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে না জিততে পারেন, তবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর প্রথম শুক্রবার শীর্ষ দুই প্রার্থীর মধ্যে ফের রান-অফ রাউন্ডের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

নির্বাচনে প্রতিদন্দ্বিতা করা প্রার্থীদের মধ্যে তিনজন কট্টরপন্থি এবং একজন তুলনামূলক মধ্যপন্থি। মধ্যপন্থি ওই প্রার্থীকে সংস্কারবাদী দল সমর্থন করছে।

ইরানের গার্ডিয়ান কাউন্সিলের মুখপাত্র বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, শুক্রবার বিশ্বের ৯৫টি দেশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। মূলত ওইসব দেশে অবস্থানকারী ইরানি নাগরিকেরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের প্রেসিডেন্টের ভূমিকা বড় করে দেখা হলেও দেশের প্রকৃত ক্ষমতা থাকে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার হাতে। পররাষ্ট্র বা পারমাণবিক নীতি ও সরকারের বিভিন্ন শাখার নিয়ন্ত্রণ, সামরিক, গণমাধ্যম ও বিভিন্ন আর্থিক সম্পদের বিষয়ে তিনিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেন। ধারণা করা হচ্ছে, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ কেউ এই নির্বাচনে জয় পাবেন। অর্থাৎ এ নির্বাচনের ফল খামেনির উত্তরাধিকারকে প্রভাবিত করবে।

খামেনির বর্তমান বয়স ৮৫ বছর। ধারণা করা হচ্ছে, যিনি ইরানের প্রেসিডেন্ট হবেন, তিনি পরবর্তী সময়ে খামেনির উত্তরসূরি নির্বাচনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত।

 

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে ইরানে

আপডেট: ০২:৩৩:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪

ছবি-সংগৃহীত

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চলছে ভোটগ্রহণ। শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল আটটা থেকে শুরু হওয়া ভোট গ্রহণ চলবে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। তবে দুই ঘণ্টা করে করে মধ্যরাত পর্যন্ত কয়েক দফায় সময় বাড়ানো হতে পারে।

নিয়ম অনুযায়ী, ইরানে আগামী বছরের জুনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট হওয়ার কথা ছিল। অর্থাৎ ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের চার বছরের মেয়াদ শেষে ভোট অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু গত ১৯ মে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হওয়ায় প্রেসিডেন্ট পদটি শূন্য হয়ে পড়ায় আগাম নির্বাচন হচ্ছে। সংবিধান অনুযায়ী, ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

নির্বাচনে ছয়জনকে প্রার্থী হওয়ার অনুমতি দিয়েছিল ইরান কর্তৃপক্ষ। পরে দুজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।

নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী চার প্রার্থী হলেন- পার্লামেন্ট স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ, আইনপ্রণেতা মাসুদ পেজেশকিয়ান, জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাইদ জালিলি এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোস্তফা পুরমোহাম্মদি।

ধারণা করা হচ্ছে, নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি খুব বেশি হবে না। নির্বাচনে সংস্কারপন্থীদের প্রার্থিতা না দেওয়া, নানা অর্থনৈতিক সংকট এবং ইরানজুড়ে চলা প্রাণঘাতী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ভোটারদের মধ্যে হতাশা রয়েছে। এর আগে ২০২১ সালের নির্বাচনে ৪৮ শতাংশের কিছু বেশি ভোটার উপস্থিতি ছিল, যা ইরানের কোনো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সর্বনিম্ন ভোটার উপস্থিতি। আগামীকাল শনিবার ফল ঘোষণার কথা রয়েছে।

তবে ভোটগ্রহণের পর যেহেতু ব্যালটগুলো ম্যানুয়ালি গণনা করা হয়, তাই চূড়ান্ত ফলাফল আগামী দুই দিনের মধ্যে ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও ফলাফলের প্রাথমিক প্রবণতা বা প্রাথমিক পরিসংখ্যান শিগগিরই সামনে আসতে পারে।

যদি কোনো প্রার্থী শূন্য ভোটসহ প্রদত্ত সমস্ত ব্যালট থেকে কমপক্ষে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে না জিততে পারেন, তবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর প্রথম শুক্রবার শীর্ষ দুই প্রার্থীর মধ্যে ফের রান-অফ রাউন্ডের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

নির্বাচনে প্রতিদন্দ্বিতা করা প্রার্থীদের মধ্যে তিনজন কট্টরপন্থি এবং একজন তুলনামূলক মধ্যপন্থি। মধ্যপন্থি ওই প্রার্থীকে সংস্কারবাদী দল সমর্থন করছে।

ইরানের গার্ডিয়ান কাউন্সিলের মুখপাত্র বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, শুক্রবার বিশ্বের ৯৫টি দেশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। মূলত ওইসব দেশে অবস্থানকারী ইরানি নাগরিকেরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের প্রেসিডেন্টের ভূমিকা বড় করে দেখা হলেও দেশের প্রকৃত ক্ষমতা থাকে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার হাতে। পররাষ্ট্র বা পারমাণবিক নীতি ও সরকারের বিভিন্ন শাখার নিয়ন্ত্রণ, সামরিক, গণমাধ্যম ও বিভিন্ন আর্থিক সম্পদের বিষয়ে তিনিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেন। ধারণা করা হচ্ছে, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ কেউ এই নির্বাচনে জয় পাবেন। অর্থাৎ এ নির্বাচনের ফল খামেনির উত্তরাধিকারকে প্রভাবিত করবে।

খামেনির বর্তমান বয়স ৮৫ বছর। ধারণা করা হচ্ছে, যিনি ইরানের প্রেসিডেন্ট হবেন, তিনি পরবর্তী সময়ে খামেনির উত্তরসূরি নির্বাচনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত।

 

শেয়ার করুন