১১:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

ফরিদপুরের সদরপুর ও ভাঙ্গায় রাসেলস ভাইপার আতঙ্ক

ইউএনএ প্রতিবেদক
  • আপডেট: ০১:১০:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪
  • / 32

পদ্মা পাড়ের মানুষের মাঝে নতুন আতঙ্ক কিলিং মেশিন খ্যাত রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) – ছবি : সংগৃহীত 

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার পদ্মা নদীর তীর ও ভাঙ্গার সীমান্তবর্তী আড়িয়াল খাঁ চরে বসবাস করা মানুষের মধ্যে বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপারের (চন্দ্রবোড়া) আতঙ্ক জেঁকে বসেছে। কৃষক জমির ফসলসহ গবাদি পশুর খাবার সংগ্রহ করতেও ভয় পাচ্ছেন। একের পর এক বিষধর সাপটির দেখা মিলছে উপজেলার নদী তীরবর্তী দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়। ইতিমধ্যে চরাঞ্চলে এই সাপের কামড়ে ছয় মাসে চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গেছে। এদের মধ্যে দুই জন শিশু ও তিন জন প্রাপ্তবয়স্ক।

স্থানীয়রা জানান, সদরপুর উপজেলার দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের পদ্মা নদি সংলগ্ন নন্দ-লালপুর, হাওলাদার কান্দি, চুঙা কান্দি, হকিয়াতপুর, বিশ্বাস কান্দি, কোটি কান্দি, হালিম মাতুব্বরের কান্দি, জব্বর শিকদার কান্দি ও কুদ্দুস মোল্লার কান্দি চর এলাকার শতাধিক কৃষক জমি চাষ করেন। দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়ার বেশির ভাগ জমি নদীগর্ভে বিলীন হয় প্রতি বার। তাই এই চরে কৃষকেরা ভুট্টা, বাদাম, তিল, আমন ও আউশ ধানের চাষ শুরু করেন।

গত শুক্রবার সকালে দুই কৃষক আমন ধানে কেটে রেখে দেন। পরে দুপুরে আঁটি বাঁধা সেই ধান তুলতে গিয়ে রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন। তাদের দুজনকেই আশঙ্কা জনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বলেন, ইউনিয়নে গত কয়েক মাসে রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। চরাঞ্চলের আমার ইউনিয়নের, নন্দ-লালপুর, হাওলাদার কান্দি, কুদ্দুস মোল্লার কান্দি, হালিম মাতুব্বরের কান্দি, জব্বর শিকদার কান্দি, কাঁচিকাটাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে রয়েছে। এ বিষয়ে ইউনিয়নের সব জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত আছে।

গত১৯ জুন সকালে সদরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকা পার্শ্ববর্তী উপজেলা ভাঙ্গার জিক্কার মোড় নামক স্থানে রাসেলস ভাইপার দেখা গিয়েছে এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, এতে ভাঙ্গাবাসীর মধ্যেও রাসেলস ভাইপার সাপের আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সদরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ওমর ফয়সল বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে সাপে কাঁটা রোগীদের অ্যান্টি-ভেনম ইনজেকশন রয়েছে। তিনি আরো বলেন, সাপে কাঁটা রোগী বা পরিবারের কেউ আতঙ্কিত না হয়ে রোগীকে ওঝার কাছে না নিয়ে সরাসরি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসতে হবে। সাপে কাটার পর সময় মতো চিকিত্সা দিতে পারলে রোগী বেঁচে যাবে। ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক কর্মকর্তা ডাক্তার মাইনুদ্দিন সেতু বলেন রাসেল ভাইপারের কামড়ের আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টি ভেনম ঔষধ রয়েছে। আমরা তাত্ক্ষণিক চিকিত্সা দিতে পারব।

সদরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ মোরাদ আলী বলেন, ‘জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে কাজ শুরু করেছি। ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রথম অবস্থায় চরাঞ্চলে কৃষকদের বিশেষ জুতা (গাম-বুট) দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন
ট্যাগ :

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

ফরিদপুরের সদরপুর ও ভাঙ্গায় রাসেলস ভাইপার আতঙ্ক

আপডেট: ০১:১০:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪

পদ্মা পাড়ের মানুষের মাঝে নতুন আতঙ্ক কিলিং মেশিন খ্যাত রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) – ছবি : সংগৃহীত 

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার পদ্মা নদীর তীর ও ভাঙ্গার সীমান্তবর্তী আড়িয়াল খাঁ চরে বসবাস করা মানুষের মধ্যে বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপারের (চন্দ্রবোড়া) আতঙ্ক জেঁকে বসেছে। কৃষক জমির ফসলসহ গবাদি পশুর খাবার সংগ্রহ করতেও ভয় পাচ্ছেন। একের পর এক বিষধর সাপটির দেখা মিলছে উপজেলার নদী তীরবর্তী দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়। ইতিমধ্যে চরাঞ্চলে এই সাপের কামড়ে ছয় মাসে চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গেছে। এদের মধ্যে দুই জন শিশু ও তিন জন প্রাপ্তবয়স্ক।

স্থানীয়রা জানান, সদরপুর উপজেলার দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের পদ্মা নদি সংলগ্ন নন্দ-লালপুর, হাওলাদার কান্দি, চুঙা কান্দি, হকিয়াতপুর, বিশ্বাস কান্দি, কোটি কান্দি, হালিম মাতুব্বরের কান্দি, জব্বর শিকদার কান্দি ও কুদ্দুস মোল্লার কান্দি চর এলাকার শতাধিক কৃষক জমি চাষ করেন। দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়ার বেশির ভাগ জমি নদীগর্ভে বিলীন হয় প্রতি বার। তাই এই চরে কৃষকেরা ভুট্টা, বাদাম, তিল, আমন ও আউশ ধানের চাষ শুরু করেন।

গত শুক্রবার সকালে দুই কৃষক আমন ধানে কেটে রেখে দেন। পরে দুপুরে আঁটি বাঁধা সেই ধান তুলতে গিয়ে রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন। তাদের দুজনকেই আশঙ্কা জনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বলেন, ইউনিয়নে গত কয়েক মাসে রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। চরাঞ্চলের আমার ইউনিয়নের, নন্দ-লালপুর, হাওলাদার কান্দি, কুদ্দুস মোল্লার কান্দি, হালিম মাতুব্বরের কান্দি, জব্বর শিকদার কান্দি, কাঁচিকাটাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে রয়েছে। এ বিষয়ে ইউনিয়নের সব জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত আছে।

গত১৯ জুন সকালে সদরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকা পার্শ্ববর্তী উপজেলা ভাঙ্গার জিক্কার মোড় নামক স্থানে রাসেলস ভাইপার দেখা গিয়েছে এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, এতে ভাঙ্গাবাসীর মধ্যেও রাসেলস ভাইপার সাপের আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সদরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ওমর ফয়সল বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে সাপে কাঁটা রোগীদের অ্যান্টি-ভেনম ইনজেকশন রয়েছে। তিনি আরো বলেন, সাপে কাঁটা রোগী বা পরিবারের কেউ আতঙ্কিত না হয়ে রোগীকে ওঝার কাছে না নিয়ে সরাসরি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসতে হবে। সাপে কাটার পর সময় মতো চিকিত্সা দিতে পারলে রোগী বেঁচে যাবে। ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক কর্মকর্তা ডাক্তার মাইনুদ্দিন সেতু বলেন রাসেল ভাইপারের কামড়ের আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টি ভেনম ঔষধ রয়েছে। আমরা তাত্ক্ষণিক চিকিত্সা দিতে পারব।

সদরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ মোরাদ আলী বলেন, ‘জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে কাজ শুরু করেছি। ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রথম অবস্থায় চরাঞ্চলে কৃষকদের বিশেষ জুতা (গাম-বুট) দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন