০৯:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

ফ্রান্সে ইসলামবিদ্বেষী হামলায় মুসলিম তরুণকে হত্যা: প্যারিসে প্রতিবাদ

ইউএনএ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ১১:২৬:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
  • / 11

প্যারিসে প্রতিবাদ – ছবি : নিজস্ব
ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় লা গ্রঁ-কম্বে এলাকায় একটি মসজিদে মুসলিম তরুণ আবুবকরকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারী প্রথমে মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করেন এবং পরে প্রায় ৫০ বার ছুরি মেরে আবুবকরকে হত্যা করেন।

হামলার ঘটনার ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যা দেশে এবং আন্তর্জাতিক মহলে ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি করেছে।

আবুবকর যিনি মালির নাগরিক। মাত্র ২০ বছর বয়সী ছিলেন। তিনি ধর্মীয় অনুসরণের জন্য মসজিদে ছিলেন যখন এই ভয়াবহ হামলা চালানো হয়। হামলাকারী যিনি ফরাসি নাগরিক এবং বসনিয়ান বংশোদ্ভূত। এখনও পলাতক রয়েছেন। তবে কর্তৃপক্ষ হামলাকারীকে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেছেন এবং বলেছেন, ফ্রান্সে ধর্মীয় বিদ্বেষ এবং বর্ণবাদের কোনো স্থান নেই।

প্রধানমন্ত্রীর ভাষ্য অনুসারে, এটি ইসলামবিদ্বেষী নৃশংসতা। ফ্রান্সের মুসলিম ও ইহুদি সংগঠনগুলো এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সকল ধর্মাবলম্বীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছে।

ইসলামোফোবিয়া ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতার প্রতি একাত্মতা জানানোর জন্য আজ প্যারিসের প্লেস দে লা রিপাবলিক চত্বরে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন “লা ফ্রান্স অ্যাঁসুমিস” দলের নেতা জঁ-লুক মেলাঁশঁ, যিনি বলেন, আমরা এসেছি আবুবাকারের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাতে এবং এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে হতবাক ও আতঙ্কিত সকল বিশ্বাসীর পাশে দাঁড়াতে।

মেলাঁশঁ আরও বলেন, আমাদের বার্তা স্পষ্ট: সকল বিশ্বাসীকে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। বিদ্রোহীরা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, উপাসনা ও বিবেকের স্বাধীনতার ওপর আঘাতকারী সকল সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়বে।

এখনই সময় নিজেদের সংগঠিত করার। ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠে প্রতিবাদ জানানোর এবং এই সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণের।

সমাবেশে উপস্থিত জনতা তার আহ্বানকে সম্মতি জানিয়ে এক মিনিটের নীরবতা পালন করে। তারা ভ্রাতৃত্ব ও মানবতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একত্রিত হয়েছে। যা এক জাতির শক্তিশালী ঐক্যের প্রতীক হিসেবে দেখা যাচ্ছে।

এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ফ্রান্সের সমাজের বিভিন্ন স্তরে শোক ও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষত মুসলিম জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও ধর্মীয় সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।

এদিকে ফরাসি প্রশাসন ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও মানবাধিকার রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য চাপের মধ্যে রয়েছে।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

ফ্রান্সে ইসলামবিদ্বেষী হামলায় মুসলিম তরুণকে হত্যা: প্যারিসে প্রতিবাদ

আপডেট: ১১:২৬:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

প্যারিসে প্রতিবাদ – ছবি : নিজস্ব
ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় লা গ্রঁ-কম্বে এলাকায় একটি মসজিদে মুসলিম তরুণ আবুবকরকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারী প্রথমে মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করেন এবং পরে প্রায় ৫০ বার ছুরি মেরে আবুবকরকে হত্যা করেন।

হামলার ঘটনার ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যা দেশে এবং আন্তর্জাতিক মহলে ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি করেছে।

আবুবকর যিনি মালির নাগরিক। মাত্র ২০ বছর বয়সী ছিলেন। তিনি ধর্মীয় অনুসরণের জন্য মসজিদে ছিলেন যখন এই ভয়াবহ হামলা চালানো হয়। হামলাকারী যিনি ফরাসি নাগরিক এবং বসনিয়ান বংশোদ্ভূত। এখনও পলাতক রয়েছেন। তবে কর্তৃপক্ষ হামলাকারীকে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেছেন এবং বলেছেন, ফ্রান্সে ধর্মীয় বিদ্বেষ এবং বর্ণবাদের কোনো স্থান নেই।

প্রধানমন্ত্রীর ভাষ্য অনুসারে, এটি ইসলামবিদ্বেষী নৃশংসতা। ফ্রান্সের মুসলিম ও ইহুদি সংগঠনগুলো এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সকল ধর্মাবলম্বীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছে।

ইসলামোফোবিয়া ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতার প্রতি একাত্মতা জানানোর জন্য আজ প্যারিসের প্লেস দে লা রিপাবলিক চত্বরে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন “লা ফ্রান্স অ্যাঁসুমিস” দলের নেতা জঁ-লুক মেলাঁশঁ, যিনি বলেন, আমরা এসেছি আবুবাকারের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাতে এবং এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে হতবাক ও আতঙ্কিত সকল বিশ্বাসীর পাশে দাঁড়াতে।

মেলাঁশঁ আরও বলেন, আমাদের বার্তা স্পষ্ট: সকল বিশ্বাসীকে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। বিদ্রোহীরা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, উপাসনা ও বিবেকের স্বাধীনতার ওপর আঘাতকারী সকল সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়বে।

এখনই সময় নিজেদের সংগঠিত করার। ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠে প্রতিবাদ জানানোর এবং এই সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণের।

সমাবেশে উপস্থিত জনতা তার আহ্বানকে সম্মতি জানিয়ে এক মিনিটের নীরবতা পালন করে। তারা ভ্রাতৃত্ব ও মানবতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একত্রিত হয়েছে। যা এক জাতির শক্তিশালী ঐক্যের প্রতীক হিসেবে দেখা যাচ্ছে।

এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ফ্রান্সের সমাজের বিভিন্ন স্তরে শোক ও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষত মুসলিম জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও ধর্মীয় সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।

এদিকে ফরাসি প্রশাসন ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও মানবাধিকার রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য চাপের মধ্যে রয়েছে।

শেয়ার করুন