০৩:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

বরেণ্য সংগীতশিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসী মারা গেছেন

ইউএনএ প্রতিবেদক
  • আপডেট: ১২:৪৮:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫
  • / 1

বরেণ্য সংগীতশিল্পী, গবেষক ও লেখক মুস্তাফা জামান আব্বাসী – ফাইল ছবি 

বরেণ্য সংগীতশিল্পী, গবেষক ও লেখক মুস্তাফা জামান আব্বাসী মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যৃকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।

বেশ কিছুদিন ধরে বাধ্যর্কজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন মুস্তাফা জামান আব্বাসী। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।  শনিবার (১০ মে) ভোর সাড়ে পাঁচটায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে শারমিনী আব্বাসী।

দীর্ঘ ৫০ বছর ফোক মিউজিক রিসার্চ গ্রুপের পরিচালক ও সংগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। তার সংগ্রহে ছিল কয়েক হাজার গান। লালনের গান, ভাটিয়ালি, বিচ্ছেদি, ভাওয়াইয়া, চটকাও সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। মুস্তফা জামান সম্পাদিত ‘দুয়ারে আইসাছে পালকি’ ও ‘স্বাধীনতা দিনের গান’ উল্লেখযোগ্য সংকলন গ্রন্থ।

তিনি ‘জার্নাল অব ফোক মিউজিক’–এর সম্পাদক। ‘লোকসঙ্গীতের ইতিহাস’, ‘ভাওয়াইয়ার জন্মভূমি’ (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড), ‘ভাটির দ্যাশের ভাটিয়ালি’ প্রথম খণ্ডে সর্বমোট ৬০০ গান স্বরলিপি–বিবক্ষণসহ প্রকাশিত, দেশে–বিদেশে প্রশংসিত।

মুস্তাফা জামান আব্বাসী ভারতীয় উপমহাদেশের এক প্রখ্যাত সংগীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আব্বাসউদ্দীন আহমদ পল্লীগীতির কিংবদন্তি শিল্পী। চাচা আব্দুল করিম ছিলেন পল্লীগীতি ও ভাওয়াইয়া–ভাটিয়ালির জনপ্রিয় শিল্পী। তার বড় ভাই মোস্তফা কামাল আইনবিশারদ। মোস্তফা কামালের মেয়ে নাশিদ কামালও একজন বরেণ্য শিল্পী। মুস্তফা জামানের বোন ফেরদৌসী রহমান দেশের প্রথিতযশা বহুমাত্রিক প্রতিভার সংগীতজ্ঞ হিসেবে সমাদৃত।

এই শিল্পীর জন্ম ভারতের কোচবিহার জেলার বলরামপুর গ্রামে ১৯৩৬ সালের ৮ ডিসেম্বরে। তার শৈশব ও কৈশোরকাল কেটেছে কলকাতায়। তার পরিবারের সঙ্গে কবি কাজী নজরুল ইসলামের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতা ছিল।

মুস্তাফা জামানের শিক্ষাজীবন কলকাতায় শুরু হলেও উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন ঢাকায়। তিনি ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স এবং ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে এমএ পাস করেন। এ শিল্পী বেতার ও টেলিভিশনে সংগীতবিষয়ক অনেক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন। পত্রপত্রিকাতে তিনি একজন সুখপাঠ্য কলাম লেখক হিসেবেও সুপরিচিত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স ও এমএ, হার্ভার্ড গ্রুপ থেকে মার্কেটিং অধ্যয়ন, দীর্ঘদিন শিল্পগোষ্ঠীর মহাব্যবস্থাপকসহ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

বরেণ্য সংগীতশিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসী মারা গেছেন

আপডেট: ১২:৪৮:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

বরেণ্য সংগীতশিল্পী, গবেষক ও লেখক মুস্তাফা জামান আব্বাসী – ফাইল ছবি 

বরেণ্য সংগীতশিল্পী, গবেষক ও লেখক মুস্তাফা জামান আব্বাসী মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যৃকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।

বেশ কিছুদিন ধরে বাধ্যর্কজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন মুস্তাফা জামান আব্বাসী। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।  শনিবার (১০ মে) ভোর সাড়ে পাঁচটায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে শারমিনী আব্বাসী।

দীর্ঘ ৫০ বছর ফোক মিউজিক রিসার্চ গ্রুপের পরিচালক ও সংগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। তার সংগ্রহে ছিল কয়েক হাজার গান। লালনের গান, ভাটিয়ালি, বিচ্ছেদি, ভাওয়াইয়া, চটকাও সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। মুস্তফা জামান সম্পাদিত ‘দুয়ারে আইসাছে পালকি’ ও ‘স্বাধীনতা দিনের গান’ উল্লেখযোগ্য সংকলন গ্রন্থ।

তিনি ‘জার্নাল অব ফোক মিউজিক’–এর সম্পাদক। ‘লোকসঙ্গীতের ইতিহাস’, ‘ভাওয়াইয়ার জন্মভূমি’ (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড), ‘ভাটির দ্যাশের ভাটিয়ালি’ প্রথম খণ্ডে সর্বমোট ৬০০ গান স্বরলিপি–বিবক্ষণসহ প্রকাশিত, দেশে–বিদেশে প্রশংসিত।

মুস্তাফা জামান আব্বাসী ভারতীয় উপমহাদেশের এক প্রখ্যাত সংগীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আব্বাসউদ্দীন আহমদ পল্লীগীতির কিংবদন্তি শিল্পী। চাচা আব্দুল করিম ছিলেন পল্লীগীতি ও ভাওয়াইয়া–ভাটিয়ালির জনপ্রিয় শিল্পী। তার বড় ভাই মোস্তফা কামাল আইনবিশারদ। মোস্তফা কামালের মেয়ে নাশিদ কামালও একজন বরেণ্য শিল্পী। মুস্তফা জামানের বোন ফেরদৌসী রহমান দেশের প্রথিতযশা বহুমাত্রিক প্রতিভার সংগীতজ্ঞ হিসেবে সমাদৃত।

এই শিল্পীর জন্ম ভারতের কোচবিহার জেলার বলরামপুর গ্রামে ১৯৩৬ সালের ৮ ডিসেম্বরে। তার শৈশব ও কৈশোরকাল কেটেছে কলকাতায়। তার পরিবারের সঙ্গে কবি কাজী নজরুল ইসলামের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতা ছিল।

মুস্তাফা জামানের শিক্ষাজীবন কলকাতায় শুরু হলেও উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন ঢাকায়। তিনি ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স এবং ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে এমএ পাস করেন। এ শিল্পী বেতার ও টেলিভিশনে সংগীতবিষয়ক অনেক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন। পত্রপত্রিকাতে তিনি একজন সুখপাঠ্য কলাম লেখক হিসেবেও সুপরিচিত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স ও এমএ, হার্ভার্ড গ্রুপ থেকে মার্কেটিং অধ্যয়ন, দীর্ঘদিন শিল্পগোষ্ঠীর মহাব্যবস্থাপকসহ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন।

শেয়ার করুন