০৭:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

বাংলাদেশ এড়িয়ে সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গে বিকল্প সংযোগ প্রকল্প অনুমোদন

ইউএনএ ডেস্ক
  • আপডেট: ১২:৩৮:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
  • / 3

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশকে এড়িয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চল বা সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গে সরাসরি সমুদ্রপথে কলকাতাসহ বাকি অংশের বিকল্প সংযোগের চিন্তা করছে ভারত। এ জন্য দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সম্প্রতি ২২ হাজার ৮৬৪ কোটি রুপি ব্যয়ের শিলং-শিলচর মহাসড়ক প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। প্রস্তাবিত এই মহাসড়ক (হাইওয়ে) হলো মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ মাল্টি মডেল পরিবহন প্রকল্পের সম্প্রসারণ।

বর্তমানে উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যের সঙ্গে ভারতের বাকি অংশের জন্য একমাত্র প্রবেশপথ হলো শিলিগুড়ি করিডোর যা ‘চিকেনস নেক’ নামেও পরিচিত। অন্য দুটি প্রবেশপথ হলো– বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে অনেক কম সময়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে যাওয়া যায়।

সম্প্রতি বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে প্রবেশাধিকার সীমিত করায় বিকল্প পথের কথা ভাবছে ভারত। এ জন্য মিয়ানমারের যৌথভাবে কালাদান প্রকল্পকে চিহ্নিত করেছে দিল্লির সরকার। শিলং-শিলচর মহাসড়কের কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগেই এই কালাদান প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার আশা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে পূর্বাঞ্চলে ভারতের ভূরাজনৈতিক অবস্থানও অনেক মজবুত হবে।

গত ৩০ এপ্রিল ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা শিলং-শিলচর মহাসড়ক প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের ১৪৪.৮ কিলোমিটার মেঘালয়ে ও ২২ কিলোমিটার আসামে অবস্থিত। এই মহাসড়কটি চালু হলে সেভেন সিস্টার্সে ভ্রমণ সাড়ে ৮ ঘণ্টা থেকে কমে ৫ ঘণ্টায় নেমে আসবে।

ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন এই বিকল্প সংযোগ রক্ষাকারী প্রকল্পটিকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে।

গত মার্চ মাসে বেইজিং সফরকালে ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ বা উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, ‘সেভেন সিস্টার্স স্থলবেষ্টিত। তাদের সমুদ্রে কোনো অ্যাকসেস নেই। আমরাই এই গোটা অঞ্চলে সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক। ইউনূসের ওই বক্তব্য ভালোভাবে নেয়নি ভারত।

শিলংয়ের কাছে মাওলিনখুং থেকে শিলচরের কাছে পাঁচগ্রাম পর্যন্ত এনএইচ-৬ বরাবর ১৬৬ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই চার লেনের মহাসড়কটি উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম উচ্চগতির করিডর প্রকল্প। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এটি বাস্তবায়ন করছে এনএইচআইডিসিএল। ২০৩০ সালের মধ্যে মহাসড়কের কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে মিয়ানমারে কালাদান মাল্টি-মডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প হচ্ছে ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে। এটি কলকাতা সমুদ্রবন্দরকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তে বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করে। এই সিত্তে বন্দর কালাদান নদীর মাধ্যমে মিয়ানমারের পালেতওয়া এবং সেখান থেকে সড়কপথে মিজোরামের জোরিনপুইয়ের সঙ্গে যুক্ত।

এনএইচআইডিসিএল-এর কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এনএইচআইডিসিএল এই প্রকল্পটি জোরিনপুই থেকে মিজোরামের লংলাই হয়ে আইজল পর্যন্ত নিয়ে যাবে। এটি শুধুমাত্র উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম উচ্চগতির করিডর নয় পাহাড়ি অঞ্চলেরও এমন প্রকল্প প্রথম। শিলং-শিলচর গুরুত্বপূর্ণ কারণ শিলচর হলো মিজোরাম, ত্রিপুরা ও মণিপুর এবং আসামের বরাক উপত্যকার সংযোগস্থল। ফলে এটি সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য একটি প্রধান সংযোগকারী পথ হয়ে উঠবে এবং ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির জন্য এই অঞ্চলকে প্রবেশদ্বার হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, কালাদান প্রকল্পের সহায়তায় পণ্যসামগ্রী বাংলাদেশের ওপর নির্ভর না করে (ওডিশার) বিশাখাপত্তনম এবং (পশ্চিমবঙ্গের) কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে পৌঁছাবে। এরপর এই উচ্চগতির করিডর সড়কপথে পণ্য পরিবহনের নিশ্চয়তা দেবে, যা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করবে।

বর্তমানে ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের যোগাযোগের একমাত্র পথ শিলিগুড়ি করিডর যা চিকেন’স নেক নামেও পরিচিত। অন্য দুটি প্রবেশ পথ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে। তবে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে প্রবেশাধিকার সীমিত করেছে এবং এই অঞ্চলে জলপথের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। তাই বিকল্প হিসেবে ভারত ও মিয়ানমার যৌথভাবে কালাদান প্রকল্প চিহ্নিত করেছে। আশা করা হচ্ছে, শিলং-শিলচর মহাসড়কের কাজ শেষ হওয়ার আগেই এই সংযোগটি পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে।

জানা গেছে, গত ৩০ এপ্রিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ২২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্যের মধ্যে মেঘালয়ে ১৪৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার এবং আসামে ২২ কিলোমিটার। এই নতুন পথটি চালু হলে ভ্রমণের সময় সাড়ে আট ঘণ্টা থেকে কমে হবে মাত্র পাঁচ ঘণ্টা।

এনএইচআইডিসিএল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই নতুন মহাসড়কটি শিলিগুড়ি করিডরের ওপর নির্ভরতা কমাবে। তার কথায়, এই প্রকল্পটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি অন্যতম চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প হতে চলেছে। কারণ এখানকার ভূখণ্ড খুবই কঠিন এবং বিদ্যমান রাস্তার অবস্থাও ভালো নয়।

শিলং-শিলচর প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) একটি রূপ হাইব্রিড অ্যানুইটি মোডে (এইচএএম) বাস্তবায়িত হবে। এতে ১৯টি বড় সেতু, ১৫৩টি ছোট সেতু, ৩২৬টি কালভার্ট, ২২টি আন্ডারপাস, ২৬টি ওভারপাস, আটটি সীমিত উচ্চতার সাবওয়ে এবং ৩৪টি ভায়াডাক্ট থাকবে।

এর আগে বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে রেল সংযোগ প্রকল্পের অর্থায়ন ও নির্মাণকাজ স্থগিত করেছে ভারত। এই সিদ্ধান্তের ফলে অন্তত তিনটি চলমান প্রকল্প থেমে গেছে এবং আরও পাঁচটি প্রকল্পের জরিপ কাজও বন্ধ হয়ে গেছে। এই প্রকল্পগুলোর মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করা।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

বাংলাদেশ এড়িয়ে সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গে বিকল্প সংযোগ প্রকল্প অনুমোদন

আপডেট: ১২:৩৮:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশকে এড়িয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চল বা সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গে সরাসরি সমুদ্রপথে কলকাতাসহ বাকি অংশের বিকল্প সংযোগের চিন্তা করছে ভারত। এ জন্য দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সম্প্রতি ২২ হাজার ৮৬৪ কোটি রুপি ব্যয়ের শিলং-শিলচর মহাসড়ক প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। প্রস্তাবিত এই মহাসড়ক (হাইওয়ে) হলো মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ মাল্টি মডেল পরিবহন প্রকল্পের সম্প্রসারণ।

বর্তমানে উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যের সঙ্গে ভারতের বাকি অংশের জন্য একমাত্র প্রবেশপথ হলো শিলিগুড়ি করিডোর যা ‘চিকেনস নেক’ নামেও পরিচিত। অন্য দুটি প্রবেশপথ হলো– বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে অনেক কম সময়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে যাওয়া যায়।

সম্প্রতি বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে প্রবেশাধিকার সীমিত করায় বিকল্প পথের কথা ভাবছে ভারত। এ জন্য মিয়ানমারের যৌথভাবে কালাদান প্রকল্পকে চিহ্নিত করেছে দিল্লির সরকার। শিলং-শিলচর মহাসড়কের কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগেই এই কালাদান প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার আশা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে পূর্বাঞ্চলে ভারতের ভূরাজনৈতিক অবস্থানও অনেক মজবুত হবে।

গত ৩০ এপ্রিল ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা শিলং-শিলচর মহাসড়ক প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের ১৪৪.৮ কিলোমিটার মেঘালয়ে ও ২২ কিলোমিটার আসামে অবস্থিত। এই মহাসড়কটি চালু হলে সেভেন সিস্টার্সে ভ্রমণ সাড়ে ৮ ঘণ্টা থেকে কমে ৫ ঘণ্টায় নেমে আসবে।

ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন এই বিকল্প সংযোগ রক্ষাকারী প্রকল্পটিকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে।

গত মার্চ মাসে বেইজিং সফরকালে ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ বা উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, ‘সেভেন সিস্টার্স স্থলবেষ্টিত। তাদের সমুদ্রে কোনো অ্যাকসেস নেই। আমরাই এই গোটা অঞ্চলে সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক। ইউনূসের ওই বক্তব্য ভালোভাবে নেয়নি ভারত।

শিলংয়ের কাছে মাওলিনখুং থেকে শিলচরের কাছে পাঁচগ্রাম পর্যন্ত এনএইচ-৬ বরাবর ১৬৬ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই চার লেনের মহাসড়কটি উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম উচ্চগতির করিডর প্রকল্প। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এটি বাস্তবায়ন করছে এনএইচআইডিসিএল। ২০৩০ সালের মধ্যে মহাসড়কের কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে মিয়ানমারে কালাদান মাল্টি-মডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প হচ্ছে ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে। এটি কলকাতা সমুদ্রবন্দরকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তে বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করে। এই সিত্তে বন্দর কালাদান নদীর মাধ্যমে মিয়ানমারের পালেতওয়া এবং সেখান থেকে সড়কপথে মিজোরামের জোরিনপুইয়ের সঙ্গে যুক্ত।

এনএইচআইডিসিএল-এর কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এনএইচআইডিসিএল এই প্রকল্পটি জোরিনপুই থেকে মিজোরামের লংলাই হয়ে আইজল পর্যন্ত নিয়ে যাবে। এটি শুধুমাত্র উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম উচ্চগতির করিডর নয় পাহাড়ি অঞ্চলেরও এমন প্রকল্প প্রথম। শিলং-শিলচর গুরুত্বপূর্ণ কারণ শিলচর হলো মিজোরাম, ত্রিপুরা ও মণিপুর এবং আসামের বরাক উপত্যকার সংযোগস্থল। ফলে এটি সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য একটি প্রধান সংযোগকারী পথ হয়ে উঠবে এবং ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির জন্য এই অঞ্চলকে প্রবেশদ্বার হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, কালাদান প্রকল্পের সহায়তায় পণ্যসামগ্রী বাংলাদেশের ওপর নির্ভর না করে (ওডিশার) বিশাখাপত্তনম এবং (পশ্চিমবঙ্গের) কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে পৌঁছাবে। এরপর এই উচ্চগতির করিডর সড়কপথে পণ্য পরিবহনের নিশ্চয়তা দেবে, যা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করবে।

বর্তমানে ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের যোগাযোগের একমাত্র পথ শিলিগুড়ি করিডর যা চিকেন’স নেক নামেও পরিচিত। অন্য দুটি প্রবেশ পথ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে। তবে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে প্রবেশাধিকার সীমিত করেছে এবং এই অঞ্চলে জলপথের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। তাই বিকল্প হিসেবে ভারত ও মিয়ানমার যৌথভাবে কালাদান প্রকল্প চিহ্নিত করেছে। আশা করা হচ্ছে, শিলং-শিলচর মহাসড়কের কাজ শেষ হওয়ার আগেই এই সংযোগটি পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে।

জানা গেছে, গত ৩০ এপ্রিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ২২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্যের মধ্যে মেঘালয়ে ১৪৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার এবং আসামে ২২ কিলোমিটার। এই নতুন পথটি চালু হলে ভ্রমণের সময় সাড়ে আট ঘণ্টা থেকে কমে হবে মাত্র পাঁচ ঘণ্টা।

এনএইচআইডিসিএল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই নতুন মহাসড়কটি শিলিগুড়ি করিডরের ওপর নির্ভরতা কমাবে। তার কথায়, এই প্রকল্পটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি অন্যতম চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প হতে চলেছে। কারণ এখানকার ভূখণ্ড খুবই কঠিন এবং বিদ্যমান রাস্তার অবস্থাও ভালো নয়।

শিলং-শিলচর প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) একটি রূপ হাইব্রিড অ্যানুইটি মোডে (এইচএএম) বাস্তবায়িত হবে। এতে ১৯টি বড় সেতু, ১৫৩টি ছোট সেতু, ৩২৬টি কালভার্ট, ২২টি আন্ডারপাস, ২৬টি ওভারপাস, আটটি সীমিত উচ্চতার সাবওয়ে এবং ৩৪টি ভায়াডাক্ট থাকবে।

এর আগে বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে রেল সংযোগ প্রকল্পের অর্থায়ন ও নির্মাণকাজ স্থগিত করেছে ভারত। এই সিদ্ধান্তের ফলে অন্তত তিনটি চলমান প্রকল্প থেমে গেছে এবং আরও পাঁচটি প্রকল্পের জরিপ কাজও বন্ধ হয়ে গেছে। এই প্রকল্পগুলোর মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করা।

শেয়ার করুন