বিয়ের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো মানে কাউকে সন্দেহ করা নয়

- আপডেট: ১০:৫১:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
- / 3
ছবি : সংগৃহীত
বিয়ে হল একটি সামাজিক বন্ধন বা বৈধ চুক্তি যার মাধ্যমে দু’জন মানুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপিত হয়। এটি জীবনের একটি নতুন অধ্যায় যেখানে দুটি মানুষ কেবল একে অপরকে নয় বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও পারিবারিক জীবনকেও গড়ে তোলেন। বিয়ে মানেই ভালোবাসা আর ভালোবাসার ভিত্তি হোক স্বাস্থ্য, সচেতনতা ও শ্রদ্ধা। এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কের আগে নিজেদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানা ও সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
বিয়ের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো মানে কাউকে সন্দেহ করা নয় বরং এটি ভালোবাসা ও সম্পর্কের প্রতি দায়িত্বশীলতার একটি প্রতীক। দাম্পত্য জীবনের শুরুতেই যদি স্বচ্ছতা, সচেতনতা ও স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় তবে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক হবে আরও দৃঢ় ও সুখকর। তাই বিয়ের আগে এই সাতটি জরুরি টেস্ট করিয়ে নিন।
বর্তমানে অনেক চিকিৎসকই বিয়ের আগে কিছু নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন। একে বলা হয় Premarital Medical Check-Up বা বিয়ের পূর্ববর্তী স্বাস্থ্য পরীক্ষা। এই পরীক্ষা কেবল দাম্পত্য জীবনের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুরক্ষাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিয়ের আগে করিয়ে নিতে হবে যে ৭টি গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট করে নেয়া উচিত। নিজের ও প্রিয়জনের জন্য গড়ে তুলুন এক সুস্থ, সুন্দর ভালোবাসার ভিত্তি।
১. হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফোরেসিস : এ টেস্টের মাধ্যমে জানা যায়, কেউ থ্যালাসেমিয়ার বাহক কি না। বর ও কনে দুজনেই যদি এই রোগের বাহক হন, তবে সন্তানের মধ্যে মারাত্মক রক্তজনিত সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্থতার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২. ব্লাড গ্রুপিং ও Rh টাইপিং : দুজনের রক্তের গ্রুপ ও Rh ফ্যাক্টর জানা জরুরি। কারণ, মা Rh-নেগেটিভ এবং বাবা Rh-পজিটিভ হলে অনাগত সন্তানের মধ্যে মারাত্মক রোগের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। তবে আগেভাগে এই তথ্য জানা থাকলে চিকিৎসার মাধ্যমে তা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
৩. যৌনবাহিত রোগের টেস্ট (HIV, হেপাটাইটিস B ও C, সিফিলিস) : এসব রোগ যৌন সম্পর্ক ও রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়। বিয়ের আগে পরীক্ষা করিয়ে জানা গেলে চিকিৎসা নিয়ে উভয়েই নিরাপদ থাকতে পারেন এবং ভবিষ্যৎ সন্তানের সংক্রমণও ঠেকানো যায়।
৪. বন্ধ্যত্ব সংক্রান্ত পরীক্ষা : দুজনেরই সন্তান ধারণে সক্ষমতা আছে কি না, তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। পুরুষের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতিশীলতা এবং নারীর ক্ষেত্রে হরমোন পরীক্ষা ও আলট্রাসনোগ্রাফি করিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।
৫. বংশগত রোগের স্ক্রিনিং : বিশেষ করে আত্মীয়ের সঙ্গে বিয়ের ক্ষেত্রে বংশগত রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই জিনগত রোগ স্ক্রিনিং জরুরি।
৬. দীর্ঘমেয়াদি রোগের পরীক্ষা (ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড): এই ধরনের রোগ সম্পর্কে আগে থেকেই জানা থাকলে চিকিৎসা ও জীবনযাপনের মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়, যা ভবিষ্যৎ দাম্পত্য জীবনে সহায়ক।
৭. মানসিক স্বাস্থ্য মূল্যায়ন : সিজোফ্রেনিয়া, বিষণ্ণতা বা বাইপোলার ডিজঅর্ডারের মতো মানসিক রোগ যদি থাকে, তাহলে বিয়ের আগে তা চিহ্নিত করে সঠিক চিকিৎসা নেওয়া উচিত। কারণ মানসিক সুস্থতা ছাড়া সুস্থ সম্পর্ক গড়ে তোলা কঠিন।