০১:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

বেলুচিস্তানে স্কুলবাসে আত্মঘাতী হামলায় নিহত ৪ শিশু

ইউএনএ ডেস্ক
  • আপডেট: ০১:১১:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
  • / 4

 স্কুলবাসে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত চার শিশু নিহত -ফাইল ছবি

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশের খুজদার জেলায় একটি স্কুলবাসে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত চার শিশু নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ৩৮ জন। এর মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

খুজদারের সরকারি কর্মকর্তা ইয়াসির ইকবাল দাশতি আলজাজিরাকে জানান, স্কুলবাসটি আর্মি পাবলিক স্কুলের। বুধবার সকালবেলা শিক্ষার্থীদের তুলছিল। তখনই আত্মঘাতী হামলাকারী হামলা চালায়।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে বলেন, শত্রুরা নিরপরাধ শিশুদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। এটি দেশের স্থিতিশীলতা নষ্টের গভীর ষড়যন্ত্র। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিতের নির্দেশ দেন।

স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহতদের মধ্যে অনেকেই শিশু এবং তাদের কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বেলুচিস্তান পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় অঞ্চল হলেও জনসংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে ছোট। খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ এই অঞ্চলটি কয়েক দশক ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদ, সন্ত্রাসবাদ এবং নিরাপত্তাহীনতায় জর্জরিত। এই অঞ্চলে সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর উপস্থিতি ব্যাপক, এবং আর্মি পাবলিক স্কুলের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এসব বাহিনীর পরিবারের সন্তানদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে।

এই হামলাটি ২০১৪ সালে পেশোয়ারের সামরিক স্কুলে সংঘটিত ভয়াবহ হামলার স্মৃতি আবারও ফিরিয়ে দিয়েছে। সেবার তেহরিকে তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামের নিষিদ্ধ ঘোষিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী একটি সামরিক স্কুলে হামলা চালিয়ে ১৩০ জনেরও বেশি শিশুকে হত্যা করেছিল। কেউ বুধবারের হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে তদন্তকারীরা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উগ্রপন্থি গোষ্ঠীগুলোর সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখছেন।

সরকারি ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং তদন্ত শুরু করেছে। শহরের বিভিন্ন স্কুলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এবং পাকিস্তানের নাগরিক সমাজ এই হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়েছে এবং শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে সোচ্চার হয়েছে।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

বেলুচিস্তানে স্কুলবাসে আত্মঘাতী হামলায় নিহত ৪ শিশু

আপডেট: ০১:১১:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

 স্কুলবাসে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত চার শিশু নিহত -ফাইল ছবি

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশের খুজদার জেলায় একটি স্কুলবাসে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত চার শিশু নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ৩৮ জন। এর মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

খুজদারের সরকারি কর্মকর্তা ইয়াসির ইকবাল দাশতি আলজাজিরাকে জানান, স্কুলবাসটি আর্মি পাবলিক স্কুলের। বুধবার সকালবেলা শিক্ষার্থীদের তুলছিল। তখনই আত্মঘাতী হামলাকারী হামলা চালায়।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে বলেন, শত্রুরা নিরপরাধ শিশুদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। এটি দেশের স্থিতিশীলতা নষ্টের গভীর ষড়যন্ত্র। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিতের নির্দেশ দেন।

স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহতদের মধ্যে অনেকেই শিশু এবং তাদের কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বেলুচিস্তান পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় অঞ্চল হলেও জনসংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে ছোট। খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ এই অঞ্চলটি কয়েক দশক ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদ, সন্ত্রাসবাদ এবং নিরাপত্তাহীনতায় জর্জরিত। এই অঞ্চলে সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর উপস্থিতি ব্যাপক, এবং আর্মি পাবলিক স্কুলের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এসব বাহিনীর পরিবারের সন্তানদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে।

এই হামলাটি ২০১৪ সালে পেশোয়ারের সামরিক স্কুলে সংঘটিত ভয়াবহ হামলার স্মৃতি আবারও ফিরিয়ে দিয়েছে। সেবার তেহরিকে তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামের নিষিদ্ধ ঘোষিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী একটি সামরিক স্কুলে হামলা চালিয়ে ১৩০ জনেরও বেশি শিশুকে হত্যা করেছিল। কেউ বুধবারের হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে তদন্তকারীরা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উগ্রপন্থি গোষ্ঠীগুলোর সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখছেন।

সরকারি ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং তদন্ত শুরু করেছে। শহরের বিভিন্ন স্কুলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এবং পাকিস্তানের নাগরিক সমাজ এই হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়েছে এবং শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে সোচ্চার হয়েছে।

শেয়ার করুন