১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৩ মে ২০২৫

ভারতকে বৃহত্তর সংঘাত এড়াতে বলল যুক্তরাষ্ট্র

ইউএনএ নিউজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট: ১১:৪১:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
  • / 7

কাশ্মীর সীমান্তের পাহাড়ি এলাকায় ভারতীয় সেনাদের অবস্থান : ফাইল ছবি

জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত চরমে পৌঁছেছে এবং এই উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে।

এমনকি ভারত পাকিস্তানে হামলা করতে পারে বলে গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে জানিয়েছে দেশটি। এমন অবস্থায় ভারতকে এই অঞ্চলে বৃহত্তর সংঘাত এড়াতে বলেছে যুক্তরাষ্ট্র।

দেশটি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র চায় না দক্ষিণ এশিয়ায় আরও বড় কোনও সংঘাত ছড়িয়ে পড়ুক। শুক্রবার (২ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি গ্লোবাল।

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স বৃহস্পতিবার (১ মে) ফক্স নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ভারত এই সন্ত্রাসী হামলার জবাবে এমনভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে যেন তা বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতের দিকে নিয়ে না যায়।

গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে অস্ত্রধারীরা হামলা চালায়। এই ঘটনায় বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন ২৬ পর্যটক। যারা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সেখানে ঘুরতে গিয়েছিলেন। ২০১৯ সালের পর এটি কাশ্মীরে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।

বরাবরের মতো এই হামলার জন্যই দিল্লির নীতি-নির্ধারকরা পাকিস্তানকে দোষারোপ করেন। তারা বলেন, সীমান্তের ওপারের যোগসাজশে সন্ত্রাসীরা এই হামলা চালিয়েছে। ভারত এর জবাবে পাকিস্তানের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় করা সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি বাতিলসহ বিভিন্ন কঠোর পদক্ষেপ নেয়। অন্যদিকে অভিযোগ নাকচ করে ইসলামাবাদও বাতিল করে দুদেশের অখণ্ডতার প্রতি সম্মান রাখা সংক্রান্ত সিমলা চুক্তিসহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক লেনদেন ও কার্যক্রম।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, ইতোমধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে পহেলগাঁও হামলার জবাব দেওয়ার ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছেন।

অন্যদিকে ইসলামাবাদ ৩০ এপ্রিল বলেছে, ভারত ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে হামলার পরিকল্পনা করছে বলে তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আছে। এর মধ্যে দুই দেশের সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) থেমে থেমে গোলাগুলির খবর মিলছে।

পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ভান্স বলেন, সত্যি বলতে কী, আমরা আশা করি পাকিস্তান তাদের পুরো দায়িত্বশীলতা দিয়ে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা করবে, যাতে নিশ্চিত করা যায় যে তাদের ভূখণ্ডে মাঝেমধ্যে যে সন্ত্রাসীরা তৎপরতা চালায়, তাদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ নেতারা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং একে ‘সন্ত্রাস’ ও ‘বিবেকহীন’ কর্মকাণ্ড বলে আখ্যা দিয়েছেন। তারা ভারতের প্রতি সংহতি জানালেও ঘটনাটির জন্য পাকিস্তানকে সরাসরি দোষারোপ করেননি।

এর আগে ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের প্রতিই উত্তেজনা প্রশমনে এবং দায়িত্বশীল সমাধানে পৌঁছাতে কাজ করার আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

ভারতকে বৃহত্তর সংঘাত এড়াতে বলল যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট: ১১:৪১:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫

কাশ্মীর সীমান্তের পাহাড়ি এলাকায় ভারতীয় সেনাদের অবস্থান : ফাইল ছবি

জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত চরমে পৌঁছেছে এবং এই উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে।

এমনকি ভারত পাকিস্তানে হামলা করতে পারে বলে গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে জানিয়েছে দেশটি। এমন অবস্থায় ভারতকে এই অঞ্চলে বৃহত্তর সংঘাত এড়াতে বলেছে যুক্তরাষ্ট্র।

দেশটি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র চায় না দক্ষিণ এশিয়ায় আরও বড় কোনও সংঘাত ছড়িয়ে পড়ুক। শুক্রবার (২ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি গ্লোবাল।

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স বৃহস্পতিবার (১ মে) ফক্স নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ভারত এই সন্ত্রাসী হামলার জবাবে এমনভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে যেন তা বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতের দিকে নিয়ে না যায়।

গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে অস্ত্রধারীরা হামলা চালায়। এই ঘটনায় বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন ২৬ পর্যটক। যারা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সেখানে ঘুরতে গিয়েছিলেন। ২০১৯ সালের পর এটি কাশ্মীরে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।

বরাবরের মতো এই হামলার জন্যই দিল্লির নীতি-নির্ধারকরা পাকিস্তানকে দোষারোপ করেন। তারা বলেন, সীমান্তের ওপারের যোগসাজশে সন্ত্রাসীরা এই হামলা চালিয়েছে। ভারত এর জবাবে পাকিস্তানের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় করা সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি বাতিলসহ বিভিন্ন কঠোর পদক্ষেপ নেয়। অন্যদিকে অভিযোগ নাকচ করে ইসলামাবাদও বাতিল করে দুদেশের অখণ্ডতার প্রতি সম্মান রাখা সংক্রান্ত সিমলা চুক্তিসহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক লেনদেন ও কার্যক্রম।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, ইতোমধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে পহেলগাঁও হামলার জবাব দেওয়ার ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছেন।

অন্যদিকে ইসলামাবাদ ৩০ এপ্রিল বলেছে, ভারত ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে হামলার পরিকল্পনা করছে বলে তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আছে। এর মধ্যে দুই দেশের সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) থেমে থেমে গোলাগুলির খবর মিলছে।

পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ভান্স বলেন, সত্যি বলতে কী, আমরা আশা করি পাকিস্তান তাদের পুরো দায়িত্বশীলতা দিয়ে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা করবে, যাতে নিশ্চিত করা যায় যে তাদের ভূখণ্ডে মাঝেমধ্যে যে সন্ত্রাসীরা তৎপরতা চালায়, তাদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ নেতারা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং একে ‘সন্ত্রাস’ ও ‘বিবেকহীন’ কর্মকাণ্ড বলে আখ্যা দিয়েছেন। তারা ভারতের প্রতি সংহতি জানালেও ঘটনাটির জন্য পাকিস্তানকে সরাসরি দোষারোপ করেননি।

এর আগে ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের প্রতিই উত্তেজনা প্রশমনে এবং দায়িত্বশীল সমাধানে পৌঁছাতে কাজ করার আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র।

শেয়ার করুন