শহীদ জিয়ার অবদান দেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে : কাদের গনি চৌধুরী

- আপডেট: ০৪:৫৬:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
- / 6
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী প্রাইভেট ব্যাংকার্স ও ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও খাদ্য বিতরণ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী -ছবি : ফাইল ফটো
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় শহীদ জিয়ার অবদান এ দেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তিনি স্বীয় কীর্তিতে অমর ইতিহাসের মহানায়ক।
শুক্রবার (৩০ মে) দুপুরে স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম)-এর ৪৪তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী প্রাইভেট ব্যাংকার্স ও ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও খাদ্য বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
রোকেয়া স্মরণি এলাকায় অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী প্রাইভেট ব্যাংকার্স ও ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনর আহ্বায়ক শেখ মুহাম্মদ জায়েদ আল ফাত্তাহ (শেখ সাব্বির) ,ব্যাংকার এম এ সাঈদ চৌধুরী, শেখ তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী, রাইসুল আলম, আলিমুল বিন আজিজ, এইচ এম মিজানুর রহমান প্রমুখ।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম, পরিশ্রমপ্রিয়তা ও নেতৃত্বের দৃঢ়তাসহ প্রভৃতি গুণাবলী এদেশের গণমানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছিল। দেশে ঐক্যের রাজনীতি চালু করে সবাইকে এক কাতারে নিয়ে আসেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট জিয়া বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেন। অল্প সময়ের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়ে জিয়া বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন এবং তলাবিহীন ঝুঁড়ির অপবাদ থেকে দেশ-জাতিকে মুক্ত করেন।
বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস জোগান। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে নতুনভাবে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। ঢাকায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত তার স্মরণকালের নামাজে জানাজায় প্রমাণিত তিনি কত জনপ্রিয় ছিলেন।
জিয়া আমাদের জাতিসত্তার রূপকার উল্লেখ করে সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, শহীদ জিয়া প্রকৃত অর্থে গত ৫৪ বছরে বাংলাদেশের একমাত্র স্টেটম্যান।
স্বাধীনতা উত্তর শ্বাপদসঙ্কূল রাজনৈতিক, সামরিক পথপরিক্রমা, দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রে দিশাহীন জাতিকে দেখিয়েছিলেন আলোর পথ। মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়েছেন কৃষি, শিল্প, মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতে স্বনির্ভরতার দিকে। দেশে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ।
জিয়ার বিভিন্ন কীর্তি তুলে ধরে কাদের গনি চৌধুরী বলেন, জিয়াউর রহমান মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। তিনি আধুনিক ও স্বনির্ভর বাংলাদেশের স্থপতি। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রতিষ্ঠাতা। মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার। স্বাধীনতাযুদ্ধে মুক্তি বাহিনীর প্রথম সামরিক ব্রিগেড জেড ফোর্সের অধিনায়ক। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে পারস্পরিক সহযোগিতামূলক শীর্ষ সংগঠন সার্কের স্বপ্নদ্রষ্টা। একজন ভিশনারি, সার্থক ও কীর্তিমান রাষ্ট্রনায়ক। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতীক ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সৎ শাসক।
জিয়াউর রহমানকে যে বিশেষণেই বিশেষায়িত করা হোক না কেন তাতে তার যোগ্যতার পূর্ণ প্রকাশ ঘটে না, কারণ তার কীর্তি বাস্তবিকই বিপুল ও বিশাল। জাতির প্রতিটি সংকটময় মুহূর্তে তিনি বারবার দাঁড়িয়েছেন নির্ভয়ে মাথা উঁচু করে। অসীম সাহসিকতা, দূরদর্শিতা, প্রজ্ঞা ও দেশপ্রেম নিয়ে তিনি সময়ের প্রয়োজনে আলোর দ্যুতি নিয়ে এগিয়ে এসেছেন। বিপর্যস্ত জাতিকে রক্ষা করেছেন সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে। আমাদের অহংকার অধ্যায়কে তিনি আলোকিত ও সমৃদ্ধ করেছেন। অল্প জীবনে বিশাল তার অর্জন। মাত্র ৪৫ বছর বয়সে তিনি কর্মগুণে জ্যোতির্ময় হতে পেরেছিলেন যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
বিএনপি শহীদ জিয়ার এক অনন্য সৃষ্টি উল্লেখ করে সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন,সকল বাধা বিঘ্ন অতিক্রম করে বিএনপি পৌঁছে গেছে সাফল্যের শীর্ষতম বিন্দুতে।
বিএনপি, জিয়া ও বাংলাদেশ পরিণত হয়েছে এক ও অভিন্ন সত্তায়। দেশের এক ক্রান্তিকালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গঠন করেন। যখন আধিপত্যবাদী শক্তি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব খর্ব করতে তৎপর ছিল। যখন দেশের তৎকালীন ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী স্বাধীনতাত্তোর তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় কর্তৃত্বমূলক শাসন জারি করে মানুষের বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, মানবাধিকার কেড়ে নেয়। যখন হত্যা ও খুনের রাজনীতি জাতীয় জীবনের অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়ায়। মানুষের জীবন ও নিরাপত্তা যখন চরমভাবে বিপন্ন ঠিক সেই অরাজক সময়ে বিএনপির জন্ম।
অর্জিত স্বাধীনতাকে আর কেউ যাতে বিপন্ন করতে না পারে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে যেন কোন অপশক্তি ধ্বংস করতে না পারে, সেই দৃঢ়প্রত্যয় নিয়েই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। তার শাসনামলে সামাজিক সুবিচার ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কারণে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি আন্তর্জাতিক মর্যাদা লাভ করে।
জিয়ার প্রতি জনগণের ভালবাসার কারণে বিএনপি শুরু থেকেই জনপ্রিয়তা পায়। পরবর্তীতে বিএনপি গণমুখী কর্মকাণ্ডের কারণে দলটি মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়। তাই জনগণ যখনই ভোট দিয়ে সরকার গঠনের সুযোগ পেয়েছে তখনই বিএনপিকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছে।