শিশু সন্তানকে বিক্রি করে দিলেন বাবা

- আপডেট: ১০:১৭:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
- / 1
মা সহ শিশু সন্তান -ছবি : নিজস্ব
ফরিদপুরে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে নির্যাতন শেষে মৌখিকভাবে ডিভোর্স দেওয়ার পর তার আট মাসের শিশুকন্যাকে কেড়ে নিয়ে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে।
ঘটনার পর শিশুটির মা পপি বেগম সন্তানকে ফিরে পেতে থানা-পুলিশ থেকে শুরু করে আদালত পর্যন্ত গিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ফুলসুতি ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামে।
এ ঘটনায় ফরিদপুর বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন শিশুটির মা পপি বেগম। ওই মামলায় স্বামী কাইয়ুম বিশ্বাস (৪০), তার তিন বোন মিতা আক্তার, বুলি বেগম, সাগরী আক্তারসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করেছেন। আদালত শিশুটিকে খুঁজে পেতে থানা পুলিশকে নির্দেশ দিলেও পুলিশ খুঁজে পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, তিন বছর আগে মুকসুদপুর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের হান্নান সরদারের মেয়ে পপি বেগমের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী নগরকান্দা উপজেলার ফুলসুতি ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামের মানিক বিশ্বাসের ছেলে কাইয়ুম বিশ্বাসের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। এর মাঝে তাদের একটি কন্যা শিশুর জন্ম হয়। পরবর্তীতে তাদের গত পাঁচ মাস আগে কলহের জের ধরে তালাক হয়। ভুক্তভোগী পপি বেগম জানান, তালাকের সময় জোর করে তার শিশু তানহাকে রেখে দেয়। পরে তার স্বামী ওই শিশুকে একই উপজেলার শাখরাইল গ্রামের কুবাদ শেখের মেয়ে কোহিনুর বেগমের কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেন। আর এই বিক্রির মধ্যস্থতা করেন নগরকান্দার দলিল লেখক আলমগীর তালুকদার।
পপি বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার বাচ্চাডারে দেখবার জন্য রাতে ঘুম হয় না, খাবার খেতে পারি না। আমার কলিজাডা শুকায় গেছে। যার কাছে বাচ্চা বিক্রি করা হয়েছে তার মায়ের পা পর্যন্ত জড়ায় ধরছি তবুও দেখতে দেননি।
ওরা বলছে, আমরা দেড় লাখ টাকা দিয়ে কিনেছি। যে বিক্রি করছে তার কাছে যাও। ঘটনাটি নিয়ে কাইয়ুম বিশ্বাসের বোন মিতা আক্তারের মোবাইলে কল করলে অপর একজন রিসিভ করে মিতার স্বামী পরিচয় দেন এবং ব্যস্ত আছেন বলে কেটে দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ সফর আলী বলেন, আদালত আমাদের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছে। সে অনুযায়ী কাজ চলছে। কিন্তু অভিযোগে বাচ্চাটি বিক্রির যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছে সেখানে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিশুটিকে খুঁজে পেলে আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মা অথবা বাবার কাছে পাঠিয়ে দেবো।