০১:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫

সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় : ড. বদিউল আলম মজুমদার

ইউএনএ প্রতিবেদক
  • আপডেট: ০২:০৯:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
  • / 2

সুজন আয়োজিত ‘জাতীয় সনদ ও নাগরিক প্রত্যাশা’ র্শীষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার -ফাইল ফটো

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকেও সংস্কার কাজ চালিয়ে যেতে হবে। নির্বাচনের জন্য কাদের মনোয়ন দেবে সেই প্রার্থী যাচাই-বাছাই শুরু করতে হবে। তারা হলফনামা প্রার্থীদের কাছে বিতরণ করে তাদের যাচাই-বাছাইসহ সৎ, যোগ্য, জনকল্যাণে নিবেদিত ব্যক্তিদের নির্বাচন করতে পারবেন। সেইসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।

শনিবার (৩১ মে) দুপুরে আরডিআরএস হলরুমে সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন আয়োজিত ‘জাতীয় সনদ ও নাগরিক প্রত্যাশা’ র্শীষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন

তিনি আরো বলেন, আবু সাঈদসহ ছাত্ররা প্রাণ দিয়েছিল দেশের মৌলিক সংস্কারের জন্য। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে স্বৈরাচারী ব্যবস্থায় দেশ ফিরে আসার আশংঙ্কা থেকে যায়। সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় গেলেও শাসক আবারও দানবে পরিণত হতে পারে। এজন্য সংস্কার প্রয়োজন। আমরা আশা করছি, আবু সাঈদের শহীদ দিবসে সংবিধান সংস্কারসহ গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বর্তমান সরকার অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে কিছু সংস্কার কাজ শুরু করতে পারবে। কিন্তু কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলের সম্মতি লাগবে। তা আমরা জাতীয় সনদে অর্ন্তভুক্ত করেছি। জাতীয় সনদের বিষয় নিয়ে আপনাদের সবাইকে সচেতন ও সোচ্চার হতে হবে।

ছাত্র রাজনীতি নিয়ে তিনি বলেন, ছাত্ররা রাজনীতি করবে, সাংষ্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেবে। লাঠিয়াল বাহিনী হলে তারা দলের ভেতরে হবে। হাসিনার পতন শুরু হয়েছিল যেদিন ছাত্রলীগকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল। এই ধরনের লাঠিয়ালের রাজনীতি স্বৈরাচার সৃষ্টিতে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে। আমরা ছাত্র রাজনীতি বন্ধ চাই না, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি, পেশাজীবী সংগঠন বন্ধ হওয়া দরকার।

সংসদ বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে দুই কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ প্রয়োজন। উচ্চকক্ষ করার উদ্দেশ্য হলো সমাজের সব স্তরের মানুষ যেন প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। আমার প্রস্তাব রয়েছে, উচ্চকক্ষ হবে অর্ধেক দলীয় ও অর্ধেক নির্দলীয় এবং সখ্যানুপাতিক হারে। নিম্নকক্ষে জনস্বার্থবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে উচ্চকক্ষ তার ওপর নজরদারি রাখতে পারবে।

তিনি বলেন, সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকেও সংস্কার কাজ চালিয়ে যেতে হবে। নির্বাচনের জন্য কাদের মনোয়ন দেবে, সেই প্রার্থী যাচাই-বাছাই শুরু করতে হবে। তারা হলফনামা প্রার্থীদের কাছে বিতরণ করে তাদের যাচাই-বাছাইসহ সৎ, যোগ্য, জনকল্যাণে নিবেদিত ব্যক্তিদের নির্বাচন করতে পারবেন। সেইসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।

মহানগর সুজনের সভাপতি অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলিপ সরকার, দি হাঙ্গার প্রজেক্টের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শশাঙ্ক বরণ রায়, আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রাজেশ দে রাজু, আইনজীবী ও সংগঠক অ্যাডভোকেট জোবাইদুল ইসলাম, মাহে আলম, সমাজকর্মী মঞ্জুশ্রী সাহাসহ অন্যরা।

আলোচনা সভায় শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ অংশীজনরা আগামীর বাংলাদেশ বির্নিমানে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক চর্চা, নারী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্র চর্চা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখাসহ নানা সুপারিশ তুলে ধরেন।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় : ড. বদিউল আলম মজুমদার

আপডেট: ০২:০৯:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

সুজন আয়োজিত ‘জাতীয় সনদ ও নাগরিক প্রত্যাশা’ র্শীষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার -ফাইল ফটো

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকেও সংস্কার কাজ চালিয়ে যেতে হবে। নির্বাচনের জন্য কাদের মনোয়ন দেবে সেই প্রার্থী যাচাই-বাছাই শুরু করতে হবে। তারা হলফনামা প্রার্থীদের কাছে বিতরণ করে তাদের যাচাই-বাছাইসহ সৎ, যোগ্য, জনকল্যাণে নিবেদিত ব্যক্তিদের নির্বাচন করতে পারবেন। সেইসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।

শনিবার (৩১ মে) দুপুরে আরডিআরএস হলরুমে সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন আয়োজিত ‘জাতীয় সনদ ও নাগরিক প্রত্যাশা’ র্শীষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন

তিনি আরো বলেন, আবু সাঈদসহ ছাত্ররা প্রাণ দিয়েছিল দেশের মৌলিক সংস্কারের জন্য। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে স্বৈরাচারী ব্যবস্থায় দেশ ফিরে আসার আশংঙ্কা থেকে যায়। সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় গেলেও শাসক আবারও দানবে পরিণত হতে পারে। এজন্য সংস্কার প্রয়োজন। আমরা আশা করছি, আবু সাঈদের শহীদ দিবসে সংবিধান সংস্কারসহ গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বর্তমান সরকার অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে কিছু সংস্কার কাজ শুরু করতে পারবে। কিন্তু কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলের সম্মতি লাগবে। তা আমরা জাতীয় সনদে অর্ন্তভুক্ত করেছি। জাতীয় সনদের বিষয় নিয়ে আপনাদের সবাইকে সচেতন ও সোচ্চার হতে হবে।

ছাত্র রাজনীতি নিয়ে তিনি বলেন, ছাত্ররা রাজনীতি করবে, সাংষ্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেবে। লাঠিয়াল বাহিনী হলে তারা দলের ভেতরে হবে। হাসিনার পতন শুরু হয়েছিল যেদিন ছাত্রলীগকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল। এই ধরনের লাঠিয়ালের রাজনীতি স্বৈরাচার সৃষ্টিতে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে। আমরা ছাত্র রাজনীতি বন্ধ চাই না, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি, পেশাজীবী সংগঠন বন্ধ হওয়া দরকার।

সংসদ বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে দুই কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ প্রয়োজন। উচ্চকক্ষ করার উদ্দেশ্য হলো সমাজের সব স্তরের মানুষ যেন প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। আমার প্রস্তাব রয়েছে, উচ্চকক্ষ হবে অর্ধেক দলীয় ও অর্ধেক নির্দলীয় এবং সখ্যানুপাতিক হারে। নিম্নকক্ষে জনস্বার্থবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে উচ্চকক্ষ তার ওপর নজরদারি রাখতে পারবে।

তিনি বলেন, সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকেও সংস্কার কাজ চালিয়ে যেতে হবে। নির্বাচনের জন্য কাদের মনোয়ন দেবে, সেই প্রার্থী যাচাই-বাছাই শুরু করতে হবে। তারা হলফনামা প্রার্থীদের কাছে বিতরণ করে তাদের যাচাই-বাছাইসহ সৎ, যোগ্য, জনকল্যাণে নিবেদিত ব্যক্তিদের নির্বাচন করতে পারবেন। সেইসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।

মহানগর সুজনের সভাপতি অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলিপ সরকার, দি হাঙ্গার প্রজেক্টের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শশাঙ্ক বরণ রায়, আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রাজেশ দে রাজু, আইনজীবী ও সংগঠক অ্যাডভোকেট জোবাইদুল ইসলাম, মাহে আলম, সমাজকর্মী মঞ্জুশ্রী সাহাসহ অন্যরা।

আলোচনা সভায় শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ অংশীজনরা আগামীর বাংলাদেশ বির্নিমানে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক চর্চা, নারী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্র চর্চা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখাসহ নানা সুপারিশ তুলে ধরেন।

শেয়ার করুন