০৯:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

সচিবালয়ে আজ থেকে এক ঘণ্টা কর্মবিরতি

ইউএনএ প্রতিবেদক
  • আপডেট: ০৩:২৪:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
  • / 5

প্রতিদিন এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা -ফাইল ফটো

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আজ বৃহস্পতিবার থেকে সচিবালয় ও সচিবালয়ের বাইরে সরকারি দপ্তরগুলোতে প্রতিদিন এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এ কর্মবিরতি পালন করবে তারা।

কর্মচারীদের দাবি প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবীর এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা আমাদের যে ন্যায্য দাবি অবৈধ কালাকানুন বা কালো আইন সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে আমরা মোটামুটি একটি সবুজ সংকেত পেয়েছি। আশা করি আলাপ-আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে যে ফলাফল আসবে এতে তারা (কর্মচারী) সন্তুষ্ট হবেন।

এরই মধ্যে অধ্যাদেশ বাতিলের বিষয়ে উত্থাপিত দাবি নিয়ে সরকারের উচ্চমহলে বিচার-বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অনেকেই বিষয়টির কুফল সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন। এই কালো বা নিবর্তনমূলক আইন রাষ্ট্রের সাধারণ জনগণ ও কর্মচারীদের জন্য নতুন কোনো কিছু বয়ে আনবে না। রাষ্ট্রের স্বার্থ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বিবেচনায় রেখে কর্মচারীদের মান-মর্যাদা ও কর্মস্থলের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ অনুকূল কর্মপরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে আমরা উপদেষ্টামণ্ডলীর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। সচিব পর্যায়েও আমাদের যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।

বাদিউল কবীর বলেন, সাতজন সচিবের সঙ্গে আমাদের যে বৈঠক হয়েছে তার ধারাবাহিকতায় ওই সচিবরা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা করেছেন। আমরা আশা করছি, তাদের এই আলোচনায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইতিবাচক কোনো কিছু আমাদের জন্য এনে দিতে পারবেন।

কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলেই কাঙ্ক্ষিত বিষয়টির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে, ইনশাআল্লাহ। কিন্তু আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, রাষ্ট্রের ক্রান্তিকাল অতিক্রম হতে চলছে। আপনারা জানেন সামনেই কোরবানির ঈদ এবং বাজেট ঘোষণার সময়। যেহেতু আমরা সাধারণ মানুষের সেবক। সাধারণ মানুষের দুঃখ লাঘবে আমরা সেবা প্রদান করে থাকি। সরকারি কর্মচারীরা যাতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কারণ না হয় আমরা সেই বিষয়টিও বিবেচনায় এনেছি।

এই কর্মচারী নেতা বলেন, আমরা সব বিষয় চিন্তা-ভাবনায় রেখে আগামী দিনগুলোতে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে জরুরি সেবার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আমরা সচিবালয়ে শুধু প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি চলতে থাকবে। মাঠ পর্যায়ে সকল দপ্তর, পরিদপ্তর, অধিদপ্তর এবং ডিসি অফিস, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত, আমাদের পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।

কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, এর সঙ্গে সঙ্গে আপনাদের একটি বিষয়ে অবহিত না করলেই নয়। সারা দেশে যেসব জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান আছে, বাজেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং যারা হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন, সেই সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ভাইবোনদের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে আপনারা আপনাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যত কম সময় কর্মবিরতি পালন করতে পারেন, অভ্যন্তরীণভাবে আপনারা সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে আমার প্রস্তাব আধা-ঘণ্টার বেশি নয়। যদি আরও কম সময় আপনারা কর্মবিরতি পালন করে সাধারণ মানুষের সেবাটা নিশ্চিত করতে পারেন সেই বিষয়টি বিবেচনার জন্য আপনাদের প্রতি অনুরোধ রইলো।

আমরা এর মধ্যেই উপদেষ্টাদের কাছে এ বিষয়ে যৌক্তিকতা আরও নিবিড়ভাবে বোঝানোর জন্য ব্যক্তিগত যোগাযোগ এবং স্মারকলিপির মাধ্যমে তাদেরকে বিষয়টি অবহিত করবো। প্রধান উপদেষ্টা না আসা পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্যের সঙ্গে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বাদিউল কবীর।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

সচিবালয়ে আজ থেকে এক ঘণ্টা কর্মবিরতি

আপডেট: ০৩:২৪:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

প্রতিদিন এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা -ফাইল ফটো

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আজ বৃহস্পতিবার থেকে সচিবালয় ও সচিবালয়ের বাইরে সরকারি দপ্তরগুলোতে প্রতিদিন এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এ কর্মবিরতি পালন করবে তারা।

কর্মচারীদের দাবি প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবীর এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা আমাদের যে ন্যায্য দাবি অবৈধ কালাকানুন বা কালো আইন সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে আমরা মোটামুটি একটি সবুজ সংকেত পেয়েছি। আশা করি আলাপ-আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে যে ফলাফল আসবে এতে তারা (কর্মচারী) সন্তুষ্ট হবেন।

এরই মধ্যে অধ্যাদেশ বাতিলের বিষয়ে উত্থাপিত দাবি নিয়ে সরকারের উচ্চমহলে বিচার-বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অনেকেই বিষয়টির কুফল সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন। এই কালো বা নিবর্তনমূলক আইন রাষ্ট্রের সাধারণ জনগণ ও কর্মচারীদের জন্য নতুন কোনো কিছু বয়ে আনবে না। রাষ্ট্রের স্বার্থ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বিবেচনায় রেখে কর্মচারীদের মান-মর্যাদা ও কর্মস্থলের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ অনুকূল কর্মপরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে আমরা উপদেষ্টামণ্ডলীর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। সচিব পর্যায়েও আমাদের যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।

বাদিউল কবীর বলেন, সাতজন সচিবের সঙ্গে আমাদের যে বৈঠক হয়েছে তার ধারাবাহিকতায় ওই সচিবরা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা করেছেন। আমরা আশা করছি, তাদের এই আলোচনায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইতিবাচক কোনো কিছু আমাদের জন্য এনে দিতে পারবেন।

কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলেই কাঙ্ক্ষিত বিষয়টির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে, ইনশাআল্লাহ। কিন্তু আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, রাষ্ট্রের ক্রান্তিকাল অতিক্রম হতে চলছে। আপনারা জানেন সামনেই কোরবানির ঈদ এবং বাজেট ঘোষণার সময়। যেহেতু আমরা সাধারণ মানুষের সেবক। সাধারণ মানুষের দুঃখ লাঘবে আমরা সেবা প্রদান করে থাকি। সরকারি কর্মচারীরা যাতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কারণ না হয় আমরা সেই বিষয়টিও বিবেচনায় এনেছি।

এই কর্মচারী নেতা বলেন, আমরা সব বিষয় চিন্তা-ভাবনায় রেখে আগামী দিনগুলোতে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে জরুরি সেবার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আমরা সচিবালয়ে শুধু প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি চলতে থাকবে। মাঠ পর্যায়ে সকল দপ্তর, পরিদপ্তর, অধিদপ্তর এবং ডিসি অফিস, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত, আমাদের পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।

কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, এর সঙ্গে সঙ্গে আপনাদের একটি বিষয়ে অবহিত না করলেই নয়। সারা দেশে যেসব জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান আছে, বাজেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং যারা হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন, সেই সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ভাইবোনদের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে আপনারা আপনাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যত কম সময় কর্মবিরতি পালন করতে পারেন, অভ্যন্তরীণভাবে আপনারা সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে আমার প্রস্তাব আধা-ঘণ্টার বেশি নয়। যদি আরও কম সময় আপনারা কর্মবিরতি পালন করে সাধারণ মানুষের সেবাটা নিশ্চিত করতে পারেন সেই বিষয়টি বিবেচনার জন্য আপনাদের প্রতি অনুরোধ রইলো।

আমরা এর মধ্যেই উপদেষ্টাদের কাছে এ বিষয়ে যৌক্তিকতা আরও নিবিড়ভাবে বোঝানোর জন্য ব্যক্তিগত যোগাযোগ এবং স্মারকলিপির মাধ্যমে তাদেরকে বিষয়টি অবহিত করবো। প্রধান উপদেষ্টা না আসা পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্যের সঙ্গে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বাদিউল কবীর।

শেয়ার করুন