০৭:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
উপদেষ্টা পরিষদের বিবৃতি

‘সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে’

ইউএনএ প্রতিবেদক
  • আপডেট: ১২:১১:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
  • / 2

ছবি : ফাইল ফটো

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই অভ্যুত্থানের জনপ্রত্যাশাকে ধারণ করে। কিন্তু সরকারের স্বকীয়তা, সংস্কার উদ্যোগ, বিচারপ্রক্রিয়া, সুষ্ঠু নির্বাচন ও স্বাভাবিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কর্মকাণ্ড অর্পিত দায়িত্ব পালন করাকে অসম্ভব করে তুললে সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে।

শনিবার (২৪ মে) বিকেলে উপদেষ্টা পরিষদের এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। উপদেষ্টা পরিষদের অনির্ধারিত বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ বিবৃতি পাঠানো হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শত বাধার মধ্যেও গোষ্ঠীস্বার্থকে উপেক্ষা করে অন্তর্বর্তী সরকার তার ওপর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। যদি পরাজিত শক্তির ইন্ধনে এবং বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকারের ওপর আরোপিত দায়িত্ব পালনকে অসম্ভব করে তোলা হয় তবে সরকার সব কারণ জনসমক্ষে উত্থাপন করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।

ক্ষোভ ও হতাশা থেকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে চাইছেন দুই দিন ধরে এমন আলোচনায় আলোড়ন সৃষ্টি হয় সারা দেশে। জানা যায়, প্রধান উপদেষ্টা গত বৃহস্পতিবার (২২ মে) উপদেষ্টা পরিষদের অনির্ধারিত আলোচনায় তার পদত্যাগের ভাবনার কথা বলেন। এ সময় তিনি সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে নানা প্রতিবন্ধকতার কথা বলেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।

বিএনপিসহ গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের মধ্যে ওই দিন রাত থেকেই আলাপ-আলোচনা শুরু হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, অধ্যাপক ইউনূস পদত্যাগ করুন, কোনো দলই সেটা চায় না। তবে দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় চায়।

এরই মধ্যে শনিবার সকালে এনইসি সম্মেলনকক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস। পরে উপদেষ্টা পরিষদের অনির্ধারিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর সোয়া ১২টায় শুরু হয়ে বৈঠক শেষ হয় বেলা সোয়া ২টায়। দুই ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অন্তত ১৯ জন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, উপদেষ্টা পরিষদের অনির্ধারিত বৈঠকে উপদেষ্টাদের বাইরে আর কাউকে রাখা হয়নি। একনেক বৈঠক শেষে একে একে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পরিকল্পনাসচিবসহ সব সরকারি কর্মকর্তাকে এনইসি কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে দেখা গেছে।

উপদেষ্টা পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, একনেকের সভা শেষে উপদেষ্টা পরিষদের অনির্ধারিত বৈঠকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর অর্পিত তিনটি প্রধান দায়িত্ব (নির্বাচন, সংস্কার ও বিচার) বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, এসব দায়িত্ব পালনে বিভিন্ন সময় নানা ধরনের অযৌক্তিক দাবিদাওয়া, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও এখতিয়ারবহির্ভূত বক্তব্য এবং কর্মসূচি দিয়ে যেভাবে স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করে তোলা হচ্ছে এবং জনমনে সংশয় ও সন্দেহ সৃষ্টি করা হচ্ছে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বৈঠকে।

দেশকে স্থিতিশীল রাখতে, নির্বাচন, বিচার ও সংস্কারকাজ এগিয়ে নিতে এবং চিরতরে এ দেশে স্বৈরাচারের আগমন প্রতিহত করতে বৃহত্তর ঐক্য প্রয়োজন বলে মনে করে উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য শুনবে এবং সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

উপদেষ্টা পরিষদের অনির্ধারিত বৈঠক শেষে বের হয়ে আসার পথে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের কাছে সাংবাদিকেরা জানতে চান, প্রধান উপদেষ্টা থাকছেন কি না? জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) চলে যাবেন বলেননি।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সরকারকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা পালন করতে গিয়ে অনেক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। যদিও এসব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে সরকার তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাবে।

দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যেসব প্রতিবন্ধকতা আসছে বৈঠকে সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, প্রত্যেক উপদেষ্টা বিভিন্ন জায়গা থেকে কী ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছেন, মন্ত্রণালয়ের সংস্কারকাজ এগিয়ে নিতে কী ধরনের প্রতিবন্ধকতা এসেছে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আগামী নির্বাচন এবং সুশাসিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরণের ক্ষেত্র তৈরিতেও প্রতিবন্ধকতা আসছে। সেসব প্রতিবন্ধকতা কোথা থেকে আসছে তা চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে সরকার। গণঅভ্যুত্থানের সব শক্তির পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সব সংস্থাকে সরকারের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তার আহ্বান জানান তিনি।

চলমান কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য সব রাজনৈতিক দল, প্রশাসন ও বিচার বিভাগের সহায়তা চান ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বৈঠকে জাতীয় নির্বাচনের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলমের অব্যাহতি দাবি করে বিএনপি। একই সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের অব্যাহতির দাবিও তোলে দলটি।

অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী অন্তর্বর্তী সরকারের তিনজন উপদেষ্টা (ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সালেহউদ্দিন আহমেদ ও আসিফ নজরুল) বিএনপির মুখপাত্র উল্লেখ করে তাদের পদত্যাগের বিষয়টি সামনে এনেছেন।

এ বিষয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, তার বিপক্ষে যে কথাগুলো বলা হয়েছে সেটি দলীয় বক্তব্য ছিল নাকি ব্যক্তিগত ছিল সে বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। তাতে দেখা যায়, তা দলীয় বক্তব্য ছিল না।

তিনি বলেন, সে রকম কিছু যদি হতোই তাহলে তো আমরা কেউ স্বপ্রণোদিতভাবে এখানে আসিনি এবং এই দায়িত্ব খুব উপভোগ্য না। কাজেই সে রকম হলে তো আমরা যে কেউ পদত্যাগ করতে পারতাম। কিন্তু আমাকে বলা হয়েছে যে আসলে দলীয়ভাবে এমন কোনো কথা আসেনি।

বর্তমান সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শক্তি এবং সমর্থনে এসেছে উল্লেখ করে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, তাদের ভিত্তিই জুলাই গণঅভ্যুত্থান। সেখানে কাউকে নিয়ে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হলে সেটা সমীচীন হবে না।

এর আগে বৈঠক থেকে বের হওয়ার পথে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সঙ্গে সাংবাদিকদের কথা হয়। তিনি বলেন, বৈঠকে নির্বাচন, সংস্কার ও জুলাই ঘোষণা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় তার সঙ্গে আলাদা বৈঠক করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

 

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

উপদেষ্টা পরিষদের বিবৃতি

‘সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে’

আপডেট: ১২:১১:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

ছবি : ফাইল ফটো

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই অভ্যুত্থানের জনপ্রত্যাশাকে ধারণ করে। কিন্তু সরকারের স্বকীয়তা, সংস্কার উদ্যোগ, বিচারপ্রক্রিয়া, সুষ্ঠু নির্বাচন ও স্বাভাবিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কর্মকাণ্ড অর্পিত দায়িত্ব পালন করাকে অসম্ভব করে তুললে সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে।

শনিবার (২৪ মে) বিকেলে উপদেষ্টা পরিষদের এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। উপদেষ্টা পরিষদের অনির্ধারিত বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ বিবৃতি পাঠানো হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শত বাধার মধ্যেও গোষ্ঠীস্বার্থকে উপেক্ষা করে অন্তর্বর্তী সরকার তার ওপর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। যদি পরাজিত শক্তির ইন্ধনে এবং বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকারের ওপর আরোপিত দায়িত্ব পালনকে অসম্ভব করে তোলা হয় তবে সরকার সব কারণ জনসমক্ষে উত্থাপন করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।

ক্ষোভ ও হতাশা থেকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে চাইছেন দুই দিন ধরে এমন আলোচনায় আলোড়ন সৃষ্টি হয় সারা দেশে। জানা যায়, প্রধান উপদেষ্টা গত বৃহস্পতিবার (২২ মে) উপদেষ্টা পরিষদের অনির্ধারিত আলোচনায় তার পদত্যাগের ভাবনার কথা বলেন। এ সময় তিনি সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে নানা প্রতিবন্ধকতার কথা বলেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।

বিএনপিসহ গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের মধ্যে ওই দিন রাত থেকেই আলাপ-আলোচনা শুরু হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, অধ্যাপক ইউনূস পদত্যাগ করুন, কোনো দলই সেটা চায় না। তবে দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় চায়।

এরই মধ্যে শনিবার সকালে এনইসি সম্মেলনকক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস। পরে উপদেষ্টা পরিষদের অনির্ধারিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর সোয়া ১২টায় শুরু হয়ে বৈঠক শেষ হয় বেলা সোয়া ২টায়। দুই ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অন্তত ১৯ জন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, উপদেষ্টা পরিষদের অনির্ধারিত বৈঠকে উপদেষ্টাদের বাইরে আর কাউকে রাখা হয়নি। একনেক বৈঠক শেষে একে একে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পরিকল্পনাসচিবসহ সব সরকারি কর্মকর্তাকে এনইসি কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে দেখা গেছে।

উপদেষ্টা পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, একনেকের সভা শেষে উপদেষ্টা পরিষদের অনির্ধারিত বৈঠকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর অর্পিত তিনটি প্রধান দায়িত্ব (নির্বাচন, সংস্কার ও বিচার) বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, এসব দায়িত্ব পালনে বিভিন্ন সময় নানা ধরনের অযৌক্তিক দাবিদাওয়া, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও এখতিয়ারবহির্ভূত বক্তব্য এবং কর্মসূচি দিয়ে যেভাবে স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করে তোলা হচ্ছে এবং জনমনে সংশয় ও সন্দেহ সৃষ্টি করা হচ্ছে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বৈঠকে।

দেশকে স্থিতিশীল রাখতে, নির্বাচন, বিচার ও সংস্কারকাজ এগিয়ে নিতে এবং চিরতরে এ দেশে স্বৈরাচারের আগমন প্রতিহত করতে বৃহত্তর ঐক্য প্রয়োজন বলে মনে করে উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য শুনবে এবং সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

উপদেষ্টা পরিষদের অনির্ধারিত বৈঠক শেষে বের হয়ে আসার পথে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের কাছে সাংবাদিকেরা জানতে চান, প্রধান উপদেষ্টা থাকছেন কি না? জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) চলে যাবেন বলেননি।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সরকারকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা পালন করতে গিয়ে অনেক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। যদিও এসব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে সরকার তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাবে।

দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যেসব প্রতিবন্ধকতা আসছে বৈঠকে সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, প্রত্যেক উপদেষ্টা বিভিন্ন জায়গা থেকে কী ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছেন, মন্ত্রণালয়ের সংস্কারকাজ এগিয়ে নিতে কী ধরনের প্রতিবন্ধকতা এসেছে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আগামী নির্বাচন এবং সুশাসিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরণের ক্ষেত্র তৈরিতেও প্রতিবন্ধকতা আসছে। সেসব প্রতিবন্ধকতা কোথা থেকে আসছে তা চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে সরকার। গণঅভ্যুত্থানের সব শক্তির পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সব সংস্থাকে সরকারের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তার আহ্বান জানান তিনি।

চলমান কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য সব রাজনৈতিক দল, প্রশাসন ও বিচার বিভাগের সহায়তা চান ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বৈঠকে জাতীয় নির্বাচনের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলমের অব্যাহতি দাবি করে বিএনপি। একই সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের অব্যাহতির দাবিও তোলে দলটি।

অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী অন্তর্বর্তী সরকারের তিনজন উপদেষ্টা (ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সালেহউদ্দিন আহমেদ ও আসিফ নজরুল) বিএনপির মুখপাত্র উল্লেখ করে তাদের পদত্যাগের বিষয়টি সামনে এনেছেন।

এ বিষয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, তার বিপক্ষে যে কথাগুলো বলা হয়েছে সেটি দলীয় বক্তব্য ছিল নাকি ব্যক্তিগত ছিল সে বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। তাতে দেখা যায়, তা দলীয় বক্তব্য ছিল না।

তিনি বলেন, সে রকম কিছু যদি হতোই তাহলে তো আমরা কেউ স্বপ্রণোদিতভাবে এখানে আসিনি এবং এই দায়িত্ব খুব উপভোগ্য না। কাজেই সে রকম হলে তো আমরা যে কেউ পদত্যাগ করতে পারতাম। কিন্তু আমাকে বলা হয়েছে যে আসলে দলীয়ভাবে এমন কোনো কথা আসেনি।

বর্তমান সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শক্তি এবং সমর্থনে এসেছে উল্লেখ করে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, তাদের ভিত্তিই জুলাই গণঅভ্যুত্থান। সেখানে কাউকে নিয়ে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হলে সেটা সমীচীন হবে না।

এর আগে বৈঠক থেকে বের হওয়ার পথে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সঙ্গে সাংবাদিকদের কথা হয়। তিনি বলেন, বৈঠকে নির্বাচন, সংস্কার ও জুলাই ঘোষণা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় তার সঙ্গে আলাদা বৈঠক করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

 

শেয়ার করুন