হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ দিলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ

- আপডেট: ১২:২৬:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫
- / 4
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের কাছে গুমের অভিযোগ তুলে দিচ্ছেন সালাহউদ্দিন আহমদ – ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ দায়ের করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। মঙ্গলবার (৩ জুন) সকাল ১১টার দিকে ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের কাছে তিনি অভিযোগ জমা দেন।
এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ, পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম, সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ও একে এম শহীদুল হকসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট শাসনে যারা গুম, খুন এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তারা অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।
অভিযোগ দায়ের করার পর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গুম, খুনের ঘটনা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হিসেবে দায়ের হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনাসহ গুম-খুনের সাথে যারা জড়িত তাদের অবশ্যই বিচার হতে হবে।
এ সময় সালাহউদ্দিন আহমেদ গুমের ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের শাস্তি এবং যারা পালিয়ে গেছেন তাদের খুঁজে বের করার জন্য গুম কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল হাসানসহ গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা উচিত। এই সরকারের দায়িত্ব হলো— সবার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া এবং গুম-খুনের সংস্কৃতি বন্ধ করা।
নিজের গুম হওয়া প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, আমি আগে থেকেই গুম কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাতে উত্তরার একটি বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সশস্ত্র ব্যক্তিরা আমাকে তুলে নিয়ে যায়। প্রায় ৬১ দিন পর, আমাকে অন্য একটি দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি আরো জানান, যত সময় ধরে আমাকে আটক রাখা হয়েছিল, সেই সময়ের অভ্যন্তরীণ পরিবেশসহ অন্যান্য বিষয় গুম কমিশনের কাছে তুলে ধরেছি।
উল্লেখ্য, সালাহউদ্দিন আহমেদ ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে নিখোঁজ হন। প্রায় দুই মাস পর, ১১ মে, ভারতের মেঘালয়ের শিলং শহরে পুলিশ তাকে খুঁজে পায়। তাকে ভারতে বৈধ নথিপত্র ছাড়াই প্রবেশের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় এবং ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা করা হয়। ২০১৮ সালে তিনি ওই মামলায় খালাস পান। তবে ভারত সরকার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তাকে ভারতে থাকতে হয়।
এ ঘটনার পর ২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত সালাহউদ্দিনের নিখোঁজ থাকা অবস্থায় তার পরিবারের সদস্যরা এবং রাজনৈতিক সহকর্মীরা নানা ধরনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন এবং সালাহউদ্দিন নিজেও আন্তর্জাতিক কমিউনিটির কাছে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন।