১২:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

হিট স্ট্রোকের মূল কারণ পানিশূন্যতা

ডা. আয়েশা আক্তার
  • আপডেট: ০১:১০:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
  • / 6

অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে হিট স্ট্রোক হয় -ফাইল ফটো

তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক, পানিশূন্যতার মত মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে হিট স্ট্রোক হয়। এর ফলে ঘাম বন্ধ হয়ে গিয়ে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে শুরু করে। বাইরে তাপমাত্রা যাই হোক না কেন আমাদের শরীর স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাপমাত্রা প্রায় স্থির রাখতে সক্ষম। কিন্তু অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কাজ করা বন্ধ করে দিলে তখন তাকে হিট স্ট্রোক বলা হয়। এর ফলে ঘাম বন্ধ হয়ে গিয়ে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে শুরু করে।

ডব্লিউএইচওর পরামর্শে বলা হয়েছে, দিনের যে সময় রোদের তাপ প্রখর থাকে সে সময় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাওয়া এড়ানো এবং কঠোর শারীরিক কাজ এড়িয়ে চলা। সেক্ষেত্রে ভোর ৪টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যে এ ধরনের কাজ করা যেতে পারে। ছায়ায় থাকুন।

হিট স্ট্রোকের মূল কারণ পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন। বয়স্ক, অসুস্থ, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বা শিশুরা অনেক সময়ই বুঝতে পারে না যে শরীর ডিহাইড্রেড হয়ে গেছে। তাই তাদের দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে।

২৫০ শয্যার টিবি হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে মাথা ব্যথা ও মাথা ঘোরা এবং চোখে ঝাপসা দেখা, দুর্বলতা, মাংসে টান ও বমি অনুভব হওয়া এবং একটা পযার্য়ে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে এবং খিঁচুনি হতে পারে।

রাস্তাঘাটে খোলা খাবার খাওয়া যাবে না। এই গরমে ডায়রিয়া অনেক বেশি হয় তাই সবসময় খাবারের দিকটা একটু খেয়াল রাখতে হবে। সহজে হজম হয় এ ধরনের খাবার খেতে হবে। খোলা বাসি খাবার খাওয়া একদমই যাবে না। এগুলো খেলে পাতলা পায়খানা-ডায়রিয়া হবে; শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়বে।

রাস্তায় ও ফুটপাতের অপরিষ্কার, নোংরা পরিবেশে তৈরি শরবত, চা বা অন্যান্য খাবার খাওয়া পরিহার করতে হবে এবং অনিরাপদ পানি পান করা যাবে না।

একটানা রোদের মধ্যে কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যারা শ্রমিক, দিনমজুর তারা এই রোদে টানা বাইরে কাজ করছেন তারা অবশ্যই এক নাগারে কাজ না করে ছায়ার নিচে আধাঘণ্টা বিশ্রাম নিয়ে তারপর আবার কাজ করবেন। বারবার মুখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দেবেন।

অবশ্যই যদি মাথা ঝিমঝিম করে অথবা বমি ভাব পায় বা যেকোনো ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে তৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা না করলে মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেশি।

প্রাথমিকভাবে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে একটু ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে শুইয়ে দিতে হবে। টাইট কাপড়-চোপড় পড়া থাকলে সেগুলো ঢিলা করে দিতে হবে। ফ্যান বা এসির ব্যবস্থা থাকলে দ্রুত তা চালু করতে হবে। ঠান্ডা পানি দিয়ে শরীর মুছতে হবে এবং অতি দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

তীব্র গরম এ হিট স্ট্রোক ছাড়াও জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টের রোগ, নিউমোনিয়া, পানিবাহিত টাইফয়েড ও জন্ডিস এবং চর্ম রোগ বা ফুসকুাড়র প্রকোপ অনেক বেড়ে যায়।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

হিট স্ট্রোকের মূল কারণ পানিশূন্যতা

আপডেট: ০১:১০:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে হিট স্ট্রোক হয় -ফাইল ফটো

তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক, পানিশূন্যতার মত মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে হিট স্ট্রোক হয়। এর ফলে ঘাম বন্ধ হয়ে গিয়ে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে শুরু করে। বাইরে তাপমাত্রা যাই হোক না কেন আমাদের শরীর স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাপমাত্রা প্রায় স্থির রাখতে সক্ষম। কিন্তু অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কাজ করা বন্ধ করে দিলে তখন তাকে হিট স্ট্রোক বলা হয়। এর ফলে ঘাম বন্ধ হয়ে গিয়ে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে শুরু করে।

ডব্লিউএইচওর পরামর্শে বলা হয়েছে, দিনের যে সময় রোদের তাপ প্রখর থাকে সে সময় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাওয়া এড়ানো এবং কঠোর শারীরিক কাজ এড়িয়ে চলা। সেক্ষেত্রে ভোর ৪টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যে এ ধরনের কাজ করা যেতে পারে। ছায়ায় থাকুন।

হিট স্ট্রোকের মূল কারণ পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন। বয়স্ক, অসুস্থ, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বা শিশুরা অনেক সময়ই বুঝতে পারে না যে শরীর ডিহাইড্রেড হয়ে গেছে। তাই তাদের দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে।

২৫০ শয্যার টিবি হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে মাথা ব্যথা ও মাথা ঘোরা এবং চোখে ঝাপসা দেখা, দুর্বলতা, মাংসে টান ও বমি অনুভব হওয়া এবং একটা পযার্য়ে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে এবং খিঁচুনি হতে পারে।

রাস্তাঘাটে খোলা খাবার খাওয়া যাবে না। এই গরমে ডায়রিয়া অনেক বেশি হয় তাই সবসময় খাবারের দিকটা একটু খেয়াল রাখতে হবে। সহজে হজম হয় এ ধরনের খাবার খেতে হবে। খোলা বাসি খাবার খাওয়া একদমই যাবে না। এগুলো খেলে পাতলা পায়খানা-ডায়রিয়া হবে; শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়বে।

রাস্তায় ও ফুটপাতের অপরিষ্কার, নোংরা পরিবেশে তৈরি শরবত, চা বা অন্যান্য খাবার খাওয়া পরিহার করতে হবে এবং অনিরাপদ পানি পান করা যাবে না।

একটানা রোদের মধ্যে কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যারা শ্রমিক, দিনমজুর তারা এই রোদে টানা বাইরে কাজ করছেন তারা অবশ্যই এক নাগারে কাজ না করে ছায়ার নিচে আধাঘণ্টা বিশ্রাম নিয়ে তারপর আবার কাজ করবেন। বারবার মুখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দেবেন।

অবশ্যই যদি মাথা ঝিমঝিম করে অথবা বমি ভাব পায় বা যেকোনো ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে তৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা না করলে মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেশি।

প্রাথমিকভাবে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে একটু ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে শুইয়ে দিতে হবে। টাইট কাপড়-চোপড় পড়া থাকলে সেগুলো ঢিলা করে দিতে হবে। ফ্যান বা এসির ব্যবস্থা থাকলে দ্রুত তা চালু করতে হবে। ঠান্ডা পানি দিয়ে শরীর মুছতে হবে এবং অতি দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

তীব্র গরম এ হিট স্ট্রোক ছাড়াও জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টের রোগ, নিউমোনিয়া, পানিবাহিত টাইফয়েড ও জন্ডিস এবং চর্ম রোগ বা ফুসকুাড়র প্রকোপ অনেক বেড়ে যায়।

শেয়ার করুন