০৪:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০১ জুন ২০২৫

হুতি নিয়ন্ত্রিত দুই বন্দরে ইসরায়েলি বিমান হামলা

ইউএনএ ডেস্ক
  • আপডেট: ০১:৩৬:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
  • / 19

বিমান হামলার পর ধোঁয়া উড়ছে -ছবি: টাইমস অব ইসরায়েল

ইয়েমেনের পশ্চিমাঞ্চলে হুতি নিয়ন্ত্রিত দুটি বন্দর লক্ষ্য করে শুক্রবার (১৬ মে) ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে হুতি বিদ্রোহীদের ক্রমাগত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার জবাবে এই অভিযান চালানো হয়।

শনিবার (১৭ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।

অভিযানে মোট ১৫টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয় এবং তারা হোদেইদা ও সালিফ বন্দরে প্রায় ৩৫টি বোমা নিক্ষেপ করে। হামলায় বন্দরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। অভিযানে বিমান রিফুয়েলার ও নজরদারি বিমানও অংশ নেয়।

এই সপ্তাহের শুরুতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী পশ্চিম ইয়েমেনের হোদেইদা, সালিফ ও রাস ইসা এই তিনটি বন্দর থেকে সাধারণ জনগণকে সরে যেতে সতর্কবার্তা দিয়েছিল। তবে শুক্রবারের হামলায় রাস ইসা বন্দরকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি।

হুথি নিয়ন্ত্রিত আল মাসিরাহ টিভিও হোদেইদা ও সালিফ বন্দরে ইসরায়েলি হামলার খবর নিশ্চিত করেছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ এখনও স্পষ্ট নয় এবং এখনো পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এই হামলা এমন সময়ে ঘটল যখন চলতি মাসের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র ও হুথি বিদ্রোহীদের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনের ওপর হামলা বন্ধ করে এবং হুতিরাও রেড সি অঞ্চলে মার্কিন জাহাজে হামলা বন্ধে সম্মত হয়।

তবে ইসরায়েল এই চুক্তির অংশ ছিল না। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহেই ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলের দিকে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়, যেগুলোর বেশিরভাগই প্রতিহত করা হয়েছে।

শুক্রবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেন, এই হামলা কেবল শুরু। হুথিদের হামলার পেছনে রয়েছে ইরান।

তিনি আরও বলেন, আমরা চুপচাপ বসে থাকব না। হুথিদের পক্ষ থেকে আমাদের ওপর হামলা হলে, আমরা তাদের নেতৃত্ব এবং সব ধরনের অবকাঠামো ধ্বংস করে জবাব দেব।

আইডিএফ জানিয়েছে যে এই হামলার উদ্দেশ্য ‘হুথিদের সন্ত্রাসী ক্ষমতার ক্ষতি আরও গভীর করা’ এবং বন্দরগুলিকে ‘নিরপেক্ষ’ করা, যাতে গোষ্ঠীটি আর ইরানি অস্ত্র আনতে না পারে।

সামরিক বাহিনী অনুমান করেছে যে, বন্দরগুলি পুনরুদ্ধার করতে হুথিদের প্রায় এক মাস সময় লাগবে। ততক্ষণ পর্যন্ত তারা সেখানে ৮০ মিটারের বেশি লম্বা জাহাজ নোঙ্গর করতে পারবে না।

হামলার সময় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর ভূগর্ভস্থ কমান্ড সেন্টারে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এবং আইডিএফ চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির একত্রিত হয়েছিলেন।

এক বিবৃতিতে কাটজ হুমকি দিয়েছেন, যদি ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীটি ইসরায়েলের ওপর গুলিবর্ষণ অব্যাহত রাখে, তাহলে হুথি নেতা আব্দুল-মালিক আল-হুথিকে হত্যা করা হবে।

তিনি বলেন, আমরা যেমন বলেছি, যদি হুথিরা ইসরায়েলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ অব্যাহত রাখে তাহলে তারা যন্ত্রণাদায়ক আঘাত ভোগ করবে। আমরা সন্ত্রাসী প্রধানকেও আঘাত করব, ঠিক যেমন আমরা গাজায় দেইফ এবং সিনওয়ারদের ওপর, বৈরুতে নাসরাল্লাহকে এবং তেহরানে হানিয়াহকে আঘাত করেছিলাম।

এই বিবৃতি ইসরায়েলি সরকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

হুতি নিয়ন্ত্রিত দুই বন্দরে ইসরায়েলি বিমান হামলা

আপডেট: ০১:৩৬:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

বিমান হামলার পর ধোঁয়া উড়ছে -ছবি: টাইমস অব ইসরায়েল

ইয়েমেনের পশ্চিমাঞ্চলে হুতি নিয়ন্ত্রিত দুটি বন্দর লক্ষ্য করে শুক্রবার (১৬ মে) ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে হুতি বিদ্রোহীদের ক্রমাগত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার জবাবে এই অভিযান চালানো হয়।

শনিবার (১৭ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।

অভিযানে মোট ১৫টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয় এবং তারা হোদেইদা ও সালিফ বন্দরে প্রায় ৩৫টি বোমা নিক্ষেপ করে। হামলায় বন্দরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। অভিযানে বিমান রিফুয়েলার ও নজরদারি বিমানও অংশ নেয়।

এই সপ্তাহের শুরুতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী পশ্চিম ইয়েমেনের হোদেইদা, সালিফ ও রাস ইসা এই তিনটি বন্দর থেকে সাধারণ জনগণকে সরে যেতে সতর্কবার্তা দিয়েছিল। তবে শুক্রবারের হামলায় রাস ইসা বন্দরকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি।

হুথি নিয়ন্ত্রিত আল মাসিরাহ টিভিও হোদেইদা ও সালিফ বন্দরে ইসরায়েলি হামলার খবর নিশ্চিত করেছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ এখনও স্পষ্ট নয় এবং এখনো পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এই হামলা এমন সময়ে ঘটল যখন চলতি মাসের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র ও হুথি বিদ্রোহীদের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনের ওপর হামলা বন্ধ করে এবং হুতিরাও রেড সি অঞ্চলে মার্কিন জাহাজে হামলা বন্ধে সম্মত হয়।

তবে ইসরায়েল এই চুক্তির অংশ ছিল না। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহেই ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলের দিকে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়, যেগুলোর বেশিরভাগই প্রতিহত করা হয়েছে।

শুক্রবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেন, এই হামলা কেবল শুরু। হুথিদের হামলার পেছনে রয়েছে ইরান।

তিনি আরও বলেন, আমরা চুপচাপ বসে থাকব না। হুথিদের পক্ষ থেকে আমাদের ওপর হামলা হলে, আমরা তাদের নেতৃত্ব এবং সব ধরনের অবকাঠামো ধ্বংস করে জবাব দেব।

আইডিএফ জানিয়েছে যে এই হামলার উদ্দেশ্য ‘হুথিদের সন্ত্রাসী ক্ষমতার ক্ষতি আরও গভীর করা’ এবং বন্দরগুলিকে ‘নিরপেক্ষ’ করা, যাতে গোষ্ঠীটি আর ইরানি অস্ত্র আনতে না পারে।

সামরিক বাহিনী অনুমান করেছে যে, বন্দরগুলি পুনরুদ্ধার করতে হুথিদের প্রায় এক মাস সময় লাগবে। ততক্ষণ পর্যন্ত তারা সেখানে ৮০ মিটারের বেশি লম্বা জাহাজ নোঙ্গর করতে পারবে না।

হামলার সময় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর ভূগর্ভস্থ কমান্ড সেন্টারে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এবং আইডিএফ চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির একত্রিত হয়েছিলেন।

এক বিবৃতিতে কাটজ হুমকি দিয়েছেন, যদি ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীটি ইসরায়েলের ওপর গুলিবর্ষণ অব্যাহত রাখে, তাহলে হুথি নেতা আব্দুল-মালিক আল-হুথিকে হত্যা করা হবে।

তিনি বলেন, আমরা যেমন বলেছি, যদি হুথিরা ইসরায়েলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ অব্যাহত রাখে তাহলে তারা যন্ত্রণাদায়ক আঘাত ভোগ করবে। আমরা সন্ত্রাসী প্রধানকেও আঘাত করব, ঠিক যেমন আমরা গাজায় দেইফ এবং সিনওয়ারদের ওপর, বৈরুতে নাসরাল্লাহকে এবং তেহরানে হানিয়াহকে আঘাত করেছিলাম।

এই বিবৃতি ইসরায়েলি সরকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

শেয়ার করুন