০৬:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫

১ দিনের জন্য সচিবালয়ের কর্মচারীদের আন্দোলন স্থগিত : অচলাবস্থা থেকে আপাতত মুক্তি

ইউএনএ প্রতিবেদক
  • আপডেট: ০৯:১৭:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
  • / 12

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ -ছবি: সংগৃহীত

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল করার বিষয়ে কর্মচারীদের দাবি কাল বুধবার মন্ত্রিপরিষদসচিবের কাছে তুলে ধরবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবেরা। এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলন কর্মসূচি একদিনের জন্য স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্মচারীরা।

মঙ্গলবার (২৭ মে) সচিবদের সঙ্গে বৈঠক শেষে উভয়পক্ষ প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানায়। এতে করে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলনের কারণে সচিবালয়ে অনেকটা অচলাবস্থার তৈরি হলেও তার থেকে আপাতত মুক্তি মিলেছে।

আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ বলেন, আমরা কয়েকজন সচিব বসে তাদের (আন্দোলনকারী) বক্তব্য শুনেছি। আসলে আমরা উভয়পক্ষই সরকারের কর্মচারী। সরকার একটা আইন করেছে। তারা এ বিষয়ে সংক্ষুব্ধ হয়েছে। আইনটি বাতিল চেয়েছে। আমরা তাদের দাবির সারাংশ বুধবার (২৮ মে) মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে উপস্থাপন করব। পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। এসময় আন্দোলনকারীদের পক্ষে দুজন কথা বলেন, তারাও আন্দোলন স্থগিতের বিষয়ে সম্মত হয়েছেন বলে জানান।

এদিন বিকেল পৌনে ৩টায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে ভূমি সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদের সভাপতিত্বে বৈঠক শুরু হয়। সভায় আরও পাঁচজন সচিব অংশ নেন। এছাড়া সচিবালয়ে আন্দোলনরত কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা সভায় যোগ দেন।

আন্দোলনকারীদের একজন নেতা বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান ও সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি মুহা. নুরুল ইসলাম এ সময় জানান, তারা বুধবারের কোনো কর্মসূচি পালন করবেন না। এ সময় আন্দোলনকারী নেতাদের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন বাদিউল কবির, নজরুল ইসলাম।

গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া অনুমোদন হয়। এরপর থেকে এই অধ্যাদেশের বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা।

এদিকে আন্দোলনের মধ্যেই গত রোববার সন্ধ্যায় সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করে সরকার। এই অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মঙ্গলবারসহ টানা চার দিন সচিবালয়ের ভেতরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। নিজেদের দফতর ছেড়ে বিপুলসংখ্যক কর্মচারী এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।

এতে সারাদেশের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও এই দাবিতে মাঠে নামার আহ্বান জানানো হয়।

কর্মচারীদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সচিবালয়ে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। সচিবালয়ের প্রধান ফটকে বিশেষায়িত বাহিনী সোয়াট মোতায়েন করা হয়। এ ছাড়া বিজিবি, র‍্যাবও মোতায়েন করা হয়। সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া কেউ ঢুকতে পারেননি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্যেই মঙ্গলবার সচিবালয়ের ভেতরে বিক্ষোভ করেন কর্মচারীরা। দুপুর একটা পর্যন্ত সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশের অনুমোদন দেওয়া হয়নি।

কর্মচারীদের মঙ্গলবার বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর দুপুর একটার পর সাংবাদিকদের সচিবালয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে অনুমোদন দেওয়া হয়।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

১ দিনের জন্য সচিবালয়ের কর্মচারীদের আন্দোলন স্থগিত : অচলাবস্থা থেকে আপাতত মুক্তি

আপডেট: ০৯:১৭:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ -ছবি: সংগৃহীত

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল করার বিষয়ে কর্মচারীদের দাবি কাল বুধবার মন্ত্রিপরিষদসচিবের কাছে তুলে ধরবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবেরা। এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলন কর্মসূচি একদিনের জন্য স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্মচারীরা।

মঙ্গলবার (২৭ মে) সচিবদের সঙ্গে বৈঠক শেষে উভয়পক্ষ প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানায়। এতে করে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলনের কারণে সচিবালয়ে অনেকটা অচলাবস্থার তৈরি হলেও তার থেকে আপাতত মুক্তি মিলেছে।

আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ বলেন, আমরা কয়েকজন সচিব বসে তাদের (আন্দোলনকারী) বক্তব্য শুনেছি। আসলে আমরা উভয়পক্ষই সরকারের কর্মচারী। সরকার একটা আইন করেছে। তারা এ বিষয়ে সংক্ষুব্ধ হয়েছে। আইনটি বাতিল চেয়েছে। আমরা তাদের দাবির সারাংশ বুধবার (২৮ মে) মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে উপস্থাপন করব। পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। এসময় আন্দোলনকারীদের পক্ষে দুজন কথা বলেন, তারাও আন্দোলন স্থগিতের বিষয়ে সম্মত হয়েছেন বলে জানান।

এদিন বিকেল পৌনে ৩টায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে ভূমি সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদের সভাপতিত্বে বৈঠক শুরু হয়। সভায় আরও পাঁচজন সচিব অংশ নেন। এছাড়া সচিবালয়ে আন্দোলনরত কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা সভায় যোগ দেন।

আন্দোলনকারীদের একজন নেতা বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান ও সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি মুহা. নুরুল ইসলাম এ সময় জানান, তারা বুধবারের কোনো কর্মসূচি পালন করবেন না। এ সময় আন্দোলনকারী নেতাদের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন বাদিউল কবির, নজরুল ইসলাম।

গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া অনুমোদন হয়। এরপর থেকে এই অধ্যাদেশের বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা।

এদিকে আন্দোলনের মধ্যেই গত রোববার সন্ধ্যায় সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করে সরকার। এই অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মঙ্গলবারসহ টানা চার দিন সচিবালয়ের ভেতরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। নিজেদের দফতর ছেড়ে বিপুলসংখ্যক কর্মচারী এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।

এতে সারাদেশের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও এই দাবিতে মাঠে নামার আহ্বান জানানো হয়।

কর্মচারীদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সচিবালয়ে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। সচিবালয়ের প্রধান ফটকে বিশেষায়িত বাহিনী সোয়াট মোতায়েন করা হয়। এ ছাড়া বিজিবি, র‍্যাবও মোতায়েন করা হয়। সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া কেউ ঢুকতে পারেননি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্যেই মঙ্গলবার সচিবালয়ের ভেতরে বিক্ষোভ করেন কর্মচারীরা। দুপুর একটা পর্যন্ত সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশের অনুমোদন দেওয়া হয়নি।

কর্মচারীদের মঙ্গলবার বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর দুপুর একটার পর সাংবাদিকদের সচিবালয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে অনুমোদন দেওয়া হয়।

শেয়ার করুন