নির্বাচন স্থগিত করার প্রতিবাদে সমাবেশ
রুয়ার নির্বাচনের তারিখ অবিলম্বে ঘোষণার দাবি

- আপডেট: ০৮:১৪:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
- / 5
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন স্থগিত করার প্রতিবাদে শুক্রবার (২ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে এক্স স্টুডেন্ট ফোরাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি : ইউএনএ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ঘোষিত সিডিউলে নির্বাচন স্থগিত করার প্রতিবাদে শুক্রবার (২ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে এক্স স্টুডেন্ট ফোরাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন কয়েকশ’ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের লাইফ মেম্বার অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ঘোষিত নির্বাচন স্থগিত করে এডহক কমিটি প্রমাণ করেছে তারা নিদিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের প্রতি আনুগত্যশীল। এই নির্বাচন স্থগিতের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশে নব্য ফ্যাসিবাদের আগ্রাসন দৃশ্যমান। কেন এই নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে সেটি জাতির সামনে স্পষ্ট করতে হবে।
যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের নির্বাচন বানচাল করছে তাদের বিষদাঁত ভেঙে দিতে ব্যর্থ হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হবে না।
নতুন এডহক কমিটি গঠন করে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে ড. হেলাল বলেন, নতুবা এক্স স্টুডেন্টরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিমুখে লংমার্চ করতে বাধ্য হবে। ভিসি সহ সংশ্লিষ্টদের দপ্তর ও বাসভবন ঘেরাও করা হবে। কোন অপশক্তি দ্বারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে বিতর্কিত করা সহ্য করা হবে না।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এক্স স্টুডেন্ট ফোরামের সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন বলেন, রুয়া প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোন নির্বাচন না দিয়ে অবৈধভাবে রুয়া দখল করে রেখেছিলো ফ্যাসিবাদের দোসররা।
ফ্যাসিবাদের পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভালো চিন্তা করে একটি এডহক কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠন করে। গঠিত নির্বাচন কমিশন সিডিউল ঘোষণা করলে সারাদেশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা নিজের পকেটের টাকা খরচ করে লাইফ মেম্বার হলো। মনোনয়ন কিনে যথাযথভাবে ১২৫ জন প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলো। যখন শুধুমাত্র নির্বাচনের দিনক্ষণ অপেক্ষা করছিলো প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ঠিক তখন একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার ভয়ে নির্বাচন স্থগিত করতে নাটকীয়তা শুরু করে।
একটি রাজনৈতিক সংগঠন নিজেদের পরিচয় দিয়ে নির্বাচন বানচালের মত ঘৃণিত কাজ করছে। তাদের এমন কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি এডহক কমিটিকে মেরুদণ্ডহীন দাবি করে বলেন, নির্বাচন স্থগিত করে আপনারা রুয়ার সদস্যদের সাথে তামাশা ও প্রতারণা করেছে। সুতরাং এই কমিটির উপর আর আস্থা ও বিশ্বাস রাখা যায় না। নতুন এডহক কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠন করে রুয়ার নির্বাচন দিতে হবে। নতুবা প্রতারণার দায়ে এডহক কমিটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের পাশাপাশি কঠোর আন্দোলনে যেতে আমরা বাধ্য হবো।
রুয়ার অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদপ্রার্থী পেট্রো বাংলার সাবেক ব্যবস্থপনা পরিচালক এবিএম কামরুজ্জামান পুলক বলেন, রুয়া গঠনের উদ্যোগ নেওয়ার পরপরই ফ্যাসিবাদের দোসররা রুয়া দখল করে নিয়েছে। অনতিবিলম্বে নতুন এডহক কমিটি গঠন করে দ্রুত নির্বাচন সম্পন্ন করার জোর দাবি জানাচ্ছি। নতুবা কঠোর আন্দোলনে যেতে আমরা বাধ্য হবো।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র রাজশাহী বিশবিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি এ.কে.এম কামরুজ্জামান কোরবান বলেন, অতীতে রুয়ার নেতৃত্ব ছিল ফ্যাসিবাদের দোসররা। তারা পরাজিত হয়ে এখন নতুন করে আরেকদলকে হাতিয়ার হিসেবে গ্রহন করেছে। তবে কোন অপচেষ্টা সফল হতে দেওয়া হবে না।
২০০৭-০৮ সেশনের পপুলেশন সাইন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলাম বলেন, একক কোন ব্যক্তি বা দলের স্বার্থ হাসিল করতে দেওয়া হবে না। অনতিবিলম্বে রুয়ার ঘোষিত সিডিউলে নতুন এডহক কমিটি দ্বারা নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।
আইন বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র ঢাকা বারের আইনজীবি আবদুর রাজ্জাক বলেন, অনতিবিলম্বে চলমান এডহক কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে রুয়ার নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।
এছাড়া অনুষ্ঠানে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র ড. ফেরদৌস আলম ও তাফসীর সহ প্রাক্তন ছাত্ররা তাদের বক্তব্যে রুয়ার নির্বাচন স্থগিত করায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অনতিবিলম্বে নতুন এডহক কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠন করে রুয়ার নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার দাবি জানান। অনুষ্ঠানে প্রাক্তন শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান, কামরুল ইসলাম, আব্দুল হান্নান, মোহাইমিন, রাসেল, বোরহানসহ কয়েকশ’ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।