১২:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

কালুরঘাটে ১১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য সেতুর ভিত্তিপ্রস্তুর ১৪ মে

ইউএনএ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
  • আপডেট: ০২:৩৮:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
  • / 6

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু-ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের কালুরঘাটে ১১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ১০০ ফুট প্রস্থ নতুন একটি রেল ও সড়ক সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে বুধবার (১৪ মে)। নদীর ওপর মূল সেতুর দৈর্ঘ্য হবে মাত্র ৭০০ মিটার।

কালুরঘাট সেতুর মূল প্রকল্পের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ৭০০ মিটার রেল কাম রোড ব্রিজ নির্মাণ, ৬ দশমিক ২০ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট নির্মাণ, ২ দমমিক ৪০ কিলোমিটার সড়ক ভায়াডাক্ট, ৪ দশমিক ৫৪ কিলোমিটার বাঁধ, ১১ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ এবং আনুষঙ্গিক কাজ।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে উপস্থিত থেকে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করবেন বলে জানালেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সবুক্তগীন।

প্রধান উপদেষ্টা এদিন কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতু যেটি বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলাসহ দক্ষিণ চট্টগ্রাম বিশাল জনগোষ্ঠীর বহুল প্রতীক্ষিত সেতু। তবে ফলকে নাম দিতে চাচ্ছেন না প্রধান উপদেষ্টা। ফলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকারীর নাম ছাড়াই ফলক তৈরি করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। প্রধান উপদেষ্টার ব্যস্ততার কারণে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

মহাব্যবস্থাপক বলেন, কর্ণফুলী নদীর ওপর বহুল আকাঙ্খিত রেল ও সড়ক সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন হবে কাল ১৪ মে। ওইদিন বেলা ১১টা ৪৫ মিনিট থেকে ১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত একটি সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তুর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের মধ্যে নির্বিঘ্ন ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বর্তমান পুরাতন সেতুর পাশে কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর নতুন রেল কাম সড়ক সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। রেলপথ মন্ত্রণালয় ২০৩০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করবে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালে একনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পটির পরামর্শক নিয়োগে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এতে আটটি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়ার পর এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) ডাকা হয়েছে। দুই ধাপে এ নিয়োগ সম্পন্ন করতে প্রায় ছয় মাস সময় লাগবে। এরপর জমি অধিগ্রহণ ও প্রকল্পের ডিটেইল ডিজাইন চূড়ান্ত করে ২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে ভৌতকাজ শুরু করবে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। ৭০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে (মূল সেতু) সেতুটি ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মাণ শেষ করতে চাইছে রেলওয়ে।

ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন সার্ভিস চালু হলেও প্রায় শতবর্ষী কালুরঘাট রেলসেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। সাময়িক মেরামত করে ভারী ইঞ্জিন ও দীর্ঘতম ট্রেন চালানো হলেও ভবিষ্যতে এই রুটে ট্রেন সংখ্যা বাড়াতে একটি নতুন সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল রেলের।

সর্বশেষ একনেক সভায় ১১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ৪ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে সরকার, বাকি ৭ হাজার ১২৫ কোটি টাকা আসবে কোরিয়ান ঋণ থেকে। এক্সট্রা ডোজ টাইপ সেতুটির একপাশে দুটি ডুয়াল গেজ রেলপথ ছাড়াও অন্য পাশে স্ট্যান্ডার্ড মানের দুই লেনের (প্রতিটি লেন ১৮ ফুট) সড়ক ছাড়াও উভয় পাশে সার্ভিস লেনসহ (পাঁচ ফুট করে) পথচারী পারাপারের সুব্যবস্থা রাখা হবে। সেতুটির নদীর অভ্যন্তরে পাঁচটিসহ মোট সাতটি স্প্যান থাকবে।

রেল ভবন সূত্র জানায়, কালুরঘাট নতুন সেতুর পুরো টাকা দক্ষিণ কোরিয়ার। প্রকল্পের ১১ হাজার ৫৬০ কোটি ৭৭ লাখ টাকার মধ্যে ৭ হাজার ১২৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল (ইডিসিএফ) এবং ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট প্রমোশন ফ্যাসিলিটি (ইডিপিএফ)। অবশিষ্ট ৪ হাজার ৪৩৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা বাংলাদেশ সরকারের। ভূমি অধিগ্রহণ সরকারি অর্থায়নে হবে বলে জানা গেছে।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

কালুরঘাটে ১১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য সেতুর ভিত্তিপ্রস্তুর ১৪ মে

আপডেট: ০২:৩৮:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু-ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের কালুরঘাটে ১১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ১০০ ফুট প্রস্থ নতুন একটি রেল ও সড়ক সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে বুধবার (১৪ মে)। নদীর ওপর মূল সেতুর দৈর্ঘ্য হবে মাত্র ৭০০ মিটার।

কালুরঘাট সেতুর মূল প্রকল্পের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ৭০০ মিটার রেল কাম রোড ব্রিজ নির্মাণ, ৬ দশমিক ২০ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট নির্মাণ, ২ দমমিক ৪০ কিলোমিটার সড়ক ভায়াডাক্ট, ৪ দশমিক ৫৪ কিলোমিটার বাঁধ, ১১ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ এবং আনুষঙ্গিক কাজ।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে উপস্থিত থেকে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করবেন বলে জানালেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সবুক্তগীন।

প্রধান উপদেষ্টা এদিন কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতু যেটি বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলাসহ দক্ষিণ চট্টগ্রাম বিশাল জনগোষ্ঠীর বহুল প্রতীক্ষিত সেতু। তবে ফলকে নাম দিতে চাচ্ছেন না প্রধান উপদেষ্টা। ফলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকারীর নাম ছাড়াই ফলক তৈরি করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। প্রধান উপদেষ্টার ব্যস্ততার কারণে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

মহাব্যবস্থাপক বলেন, কর্ণফুলী নদীর ওপর বহুল আকাঙ্খিত রেল ও সড়ক সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন হবে কাল ১৪ মে। ওইদিন বেলা ১১টা ৪৫ মিনিট থেকে ১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত একটি সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তুর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের মধ্যে নির্বিঘ্ন ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বর্তমান পুরাতন সেতুর পাশে কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর নতুন রেল কাম সড়ক সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। রেলপথ মন্ত্রণালয় ২০৩০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করবে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালে একনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পটির পরামর্শক নিয়োগে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এতে আটটি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়ার পর এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) ডাকা হয়েছে। দুই ধাপে এ নিয়োগ সম্পন্ন করতে প্রায় ছয় মাস সময় লাগবে। এরপর জমি অধিগ্রহণ ও প্রকল্পের ডিটেইল ডিজাইন চূড়ান্ত করে ২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে ভৌতকাজ শুরু করবে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। ৭০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে (মূল সেতু) সেতুটি ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মাণ শেষ করতে চাইছে রেলওয়ে।

ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন সার্ভিস চালু হলেও প্রায় শতবর্ষী কালুরঘাট রেলসেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। সাময়িক মেরামত করে ভারী ইঞ্জিন ও দীর্ঘতম ট্রেন চালানো হলেও ভবিষ্যতে এই রুটে ট্রেন সংখ্যা বাড়াতে একটি নতুন সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল রেলের।

সর্বশেষ একনেক সভায় ১১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ৪ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে সরকার, বাকি ৭ হাজার ১২৫ কোটি টাকা আসবে কোরিয়ান ঋণ থেকে। এক্সট্রা ডোজ টাইপ সেতুটির একপাশে দুটি ডুয়াল গেজ রেলপথ ছাড়াও অন্য পাশে স্ট্যান্ডার্ড মানের দুই লেনের (প্রতিটি লেন ১৮ ফুট) সড়ক ছাড়াও উভয় পাশে সার্ভিস লেনসহ (পাঁচ ফুট করে) পথচারী পারাপারের সুব্যবস্থা রাখা হবে। সেতুটির নদীর অভ্যন্তরে পাঁচটিসহ মোট সাতটি স্প্যান থাকবে।

রেল ভবন সূত্র জানায়, কালুরঘাট নতুন সেতুর পুরো টাকা দক্ষিণ কোরিয়ার। প্রকল্পের ১১ হাজার ৫৬০ কোটি ৭৭ লাখ টাকার মধ্যে ৭ হাজার ১২৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল (ইডিসিএফ) এবং ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট প্রমোশন ফ্যাসিলিটি (ইডিপিএফ)। অবশিষ্ট ৪ হাজার ৪৩৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা বাংলাদেশ সরকারের। ভূমি অধিগ্রহণ সরকারি অর্থায়নে হবে বলে জানা গেছে।

শেয়ার করুন