০৩:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কলমবিরতি সাময়িক স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট: ০৭:৪২:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
  • / 5

সংবাদ সম্মেলনে কলমবিরতি কর্মসূচি সাময়িক প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয় -ছবি : ইউএনএ

অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনার প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে কলমবিরতি সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করেছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।

সোমবার (১৯ মে) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে সংবাদ সম্মেলনে কলমবিরতি কর্মসূচি সাময়িক প্রত্যাহারের কথা জানান শুল্ক ক্যাডারের উপকমিশনার ইমাম গাজ্জালি।

পরে ঐক্য পরিষদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টার সানুগ্রহ নির্দেশনায় সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে কলমবিরতি সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে প্রণীত রাজস্ব অধ্যাদেশ বাতিল এবং টেকসই রাজস্ব সংস্কারের দাবিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকে সোমবারও কলমবিরতি পালন করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পঞ্চম দিনের মতো সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টা কাস্টমস, ভ্যাট ও ট্যাক্স বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাব এসেছে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটায় এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। অর্থ উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টামণ্ডলীর কয়েকজন সদস্য এতে অংশ নেবেন।

আমাদের একটি প্রতিনিধিদল সে আলোচনায় অংশগ্রহণ করবে বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই আলোচনার আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কর্মসূচি আগামীকাল সাময়িক বিরতি থাকবে এবং মঙ্গলবারের আলোচনার অগ্রগতির ভিত্তিতে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের মতামত গ্রহণ না করে, সরকার কর্তৃক গঠিত সংস্কার কমিটির সুপারিশ প্রকাশ না করে এবং তা আলোচনা-পর্যালোচনার সুযোগ না দিয়ে, সবাইকে অন্ধকারে রেখে নজিরবিহীন দ্রুততা ও গোপনীয়তার সঙ্গে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। অংশীজনদের মতামত গ্রহণ না করে একতরফাভাবে গৃহীত এই সংস্কারের উদ্দেশ্য ও কার্যকারিতা নিয়ে এরই মধ্যে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ব্যবসায়ী মহল, পলিসি থিংক-ট্যাংকসহ বিভিন্ন মহল প্রশ্ন তুলেছেন।

রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কারের নামে একশো বছরের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান এনবিআরকে বিলুপ্ত করে দেওয়া হয়েছে কোনো কারণ ছাড়াই। যেখানে দেশের রাজস্ব এজেন্সিকে সংস্কারের মাধ্যমে শক্তিশালী করা প্রয়োজন সেখানে এটিকে বিলুপ্ত করে রাজস্ব কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে দুটি বিভাগ সৃষ্টি করা হচ্ছে, যা রাজস্ব ব্যবস্থাপনার আন্তর্জাতিক রীতিনীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থি।

এতে বলা হয়, এনবিআর বিলুপ্ত নয় বরং এনবিআরকে স্বতন্ত্র ও শক্তিশালী এজেন্সি হিসেবে রেখেই রাজস্ব সংস্কার করতে হবে। আমরা সবসময়ই বলে আসছি যে, আমরা সবাই সংস্কারের পক্ষে। রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনার পৃথকীকরণ রাজস্ব ব্যবস্থার পূর্নাঙ্গ সংস্কারের জন্য আমরা বদ্ধপরিকর। আমরা বলছি, এই সংস্কার হতে হবে বাস্তবমুখী, অংশীজনের মতামতভিত্তিক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার সর্বোচ্চ মূল্যায়নের মাধ্যমে।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দাবিগুলো হলো-
১। জারিকৃত অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে;
২। রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
৩। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক প্রস্তাবিত খসড়া এবং পরামর্শক কমিটির সুপারিশ আলোচনা-পর্যালোচনাপূর্বক প্রত্যাশী সংস্থাসমূহ, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের মতামত নিয়ে উপযুক্ত ও টেকসই রাজস্ব প্রশাসন সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কলমবিরতি সাময়িক স্থগিত

আপডেট: ০৭:৪২:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

সংবাদ সম্মেলনে কলমবিরতি কর্মসূচি সাময়িক প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয় -ছবি : ইউএনএ

অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনার প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে কলমবিরতি সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করেছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।

সোমবার (১৯ মে) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে সংবাদ সম্মেলনে কলমবিরতি কর্মসূচি সাময়িক প্রত্যাহারের কথা জানান শুল্ক ক্যাডারের উপকমিশনার ইমাম গাজ্জালি।

পরে ঐক্য পরিষদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টার সানুগ্রহ নির্দেশনায় সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে কলমবিরতি সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে প্রণীত রাজস্ব অধ্যাদেশ বাতিল এবং টেকসই রাজস্ব সংস্কারের দাবিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকে সোমবারও কলমবিরতি পালন করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পঞ্চম দিনের মতো সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টা কাস্টমস, ভ্যাট ও ট্যাক্স বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাব এসেছে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটায় এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। অর্থ উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টামণ্ডলীর কয়েকজন সদস্য এতে অংশ নেবেন।

আমাদের একটি প্রতিনিধিদল সে আলোচনায় অংশগ্রহণ করবে বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই আলোচনার আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কর্মসূচি আগামীকাল সাময়িক বিরতি থাকবে এবং মঙ্গলবারের আলোচনার অগ্রগতির ভিত্তিতে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের মতামত গ্রহণ না করে, সরকার কর্তৃক গঠিত সংস্কার কমিটির সুপারিশ প্রকাশ না করে এবং তা আলোচনা-পর্যালোচনার সুযোগ না দিয়ে, সবাইকে অন্ধকারে রেখে নজিরবিহীন দ্রুততা ও গোপনীয়তার সঙ্গে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। অংশীজনদের মতামত গ্রহণ না করে একতরফাভাবে গৃহীত এই সংস্কারের উদ্দেশ্য ও কার্যকারিতা নিয়ে এরই মধ্যে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ব্যবসায়ী মহল, পলিসি থিংক-ট্যাংকসহ বিভিন্ন মহল প্রশ্ন তুলেছেন।

রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কারের নামে একশো বছরের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান এনবিআরকে বিলুপ্ত করে দেওয়া হয়েছে কোনো কারণ ছাড়াই। যেখানে দেশের রাজস্ব এজেন্সিকে সংস্কারের মাধ্যমে শক্তিশালী করা প্রয়োজন সেখানে এটিকে বিলুপ্ত করে রাজস্ব কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে দুটি বিভাগ সৃষ্টি করা হচ্ছে, যা রাজস্ব ব্যবস্থাপনার আন্তর্জাতিক রীতিনীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থি।

এতে বলা হয়, এনবিআর বিলুপ্ত নয় বরং এনবিআরকে স্বতন্ত্র ও শক্তিশালী এজেন্সি হিসেবে রেখেই রাজস্ব সংস্কার করতে হবে। আমরা সবসময়ই বলে আসছি যে, আমরা সবাই সংস্কারের পক্ষে। রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনার পৃথকীকরণ রাজস্ব ব্যবস্থার পূর্নাঙ্গ সংস্কারের জন্য আমরা বদ্ধপরিকর। আমরা বলছি, এই সংস্কার হতে হবে বাস্তবমুখী, অংশীজনের মতামতভিত্তিক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার সর্বোচ্চ মূল্যায়নের মাধ্যমে।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দাবিগুলো হলো-
১। জারিকৃত অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে;
২। রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
৩। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক প্রস্তাবিত খসড়া এবং পরামর্শক কমিটির সুপারিশ আলোচনা-পর্যালোচনাপূর্বক প্রত্যাশী সংস্থাসমূহ, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের মতামত নিয়ে উপযুক্ত ও টেকসই রাজস্ব প্রশাসন সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে।

শেয়ার করুন