০৪:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

যেসব খাবার খাবেন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে

লাইফস্টাইল ডেস্ক
  • আপডেট: ০৪:০৫:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
  • / 17

ফাইল ছবি

খাদ্যাভ্যাসে যে পরিবর্তনগুলো ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে পারে তার সংখ্যা অনেক। যেমন- বাড়তি চিনি থাকে এমন খাবার ত্যাগ করা, ফল ও সবজি বেশি খাওয়া, মানসিক চাপ কমানো, নিয়মিত শরীরচর্চা ইত্যাদি।

উদ্ভিজ্জ খাবার খাদ্যাভ্যাসে বেশি থাকাটা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায় এর সপক্ষে ফলাফল সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

‘ডায়াবেটোলজিয়া’ শীর্ষক সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণায় ‘ইউরোপিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য স্টাডি অফ ডায়াবেটিস’য়ের গবেষকরা ১০ হাজারেরও বেশি অংশগ্রহণকারীর ‘প্লাজমা মেটাবোলাইট প্রোফাইল’ নিয়ে কাজ করেছেন। ডায়াবেটিস শনাক্ত করার পদ্ধতি এটি।

যাহোক, আজকে আমরা মূলত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে যেসকল খাবার ভূমিকা রাখে তাদের নিয়ে আলোচনা করবো। নিশ্চিত থাকুন, আপনাকে মেপে মেপে খেতে হবেনা। এমনকি খাবার পরেও আপনার ক্ষুধা থেকে যাবেনা।

১. কাঁচা, কিংবা সেদ্ধ করে সবজি খাওয়ার চেষ্টা করুনঃ ডায়াবেটিস রোগীদের পেট ভরে খাওয়া যাবেনা এটি একটি ভুল ধারণা। আমাদের দেশে নানা রকমের সবজি পাওয়া যায়। তারমধ্যে আলু কিংবা শর্করাযুক্ত সবজিগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো। কিন্তু টমেটো, শসা, বেগুন, মাশরুম এবং সবুজ সবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। অধিকাংশ সবজিই কাঁচা কিংবা সেদ্ধ করে খাওয়া যায়। আর যাদের বাসায় ওভেন আছে, তারা চাইলে কিছু সবজি রোস্ট করে নিতে পারেন। বিষয়টি অদ্ভুত বলে অনেকের মনে হতে পারে। কিন্তু আদপে অদ্ভুত না। আমাদের দেশে আগুনের আঁচ দিয়ে বেগুন কিংবা অনেক সবজি সেদ্ধ করে ভর্তা করা হয়। সেভাবেও পুড়িয়ে খেয়ে দেখতে পারেন। অথবা কিছু সবজি যেমন মাশরুম, ফুলকপি এগুলো সেদ্ধ করে খেয়ে দেখতে পারেন।

ওভেনে রোস্ট করার ক্ষেত্রে সচরাচর অলিভ অয়েল ব্যবহার করা ভালো। অলিভ অয়েল এবং খাদ্যপযোগী নারিকেল তেল দিয়েও খাবার রান্না করা যায়। তবে এই তেলগুলোর দাম বেশি বলেই অনেকে কেনার সাহস পায়না।

২.ফাইবারে পরিপূর্ণ খাবার খাবেনঃ যেসকল ফল, সবজিতে প্রচুর আঁশ আছে সেসকল ফসল অনেকটাই শর্করার অভাব মিটিয়ে দিতে পারে। বাদাম, মটরদানা, বা সিম-জাতীয় খাবার, ভুট্টাতে প্রচুর ফাইবার থাকে। তাছাড়া বাঙ্গি, তরমুজ জাতীয় ফলগুলোও এক্ষেত্রে উপকারী হয়। আঁশ জাতীয় খাবার পেটে অনেকক্ষণ থাকে এবং পরিপাকতন্ত্রও সুস্থ রাখে। এমনকি মিষ্টি আলু রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই মিষ্টি আলু খেলে পেট ও ভরবে, এবং ডায়াবেটিস বাড়ার সম্ভাবনাও কমে যাবে।

৩.চিনি ছাড়া চা খাওয়ার অভ্যাসঃ চায়ে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। বিশেষত ব্ল্যাক টি এবং গ্রিন টি বেশ উপকারী এক্ষেত্রে। আমাদের দেশে গ্রিন টি এখন বেশ সুলভ হয়ে উঠেছে। এবং বাজারে ব্ল্যাক টি বিভিন্ন মানের থাকায় এখনো তেমন সুলভ হয়নি। তবে সাধারণ ব্লেন্ড চা দিয়ে রঙ চা বানিয়ে সকাল আর রাতে খেতে পারলে শরীর চাঙা থাকবে।

৪.সামান্য একটু চর্বি জাতীয় খাবারঃ ডায়াবেটিস রোগীদের যে চর্বি জাতীয় খাবার খেতে নেই এমন কোনো বাধা নেই। তবে অবশ্যই অতিরিক্ত এবং ক্ষতিকর চর্বি শরীরে প্রবেশ করানো যাবেনা। অলিভ অয়েল দিয়ে কিছু সালাদ কিংবা হালকা রোস্ট করা লিন মিট খাওয়া যেতে পারে। এতে আপনার কোনো ক্ষতি হবে না।

৫.প্রোটিনেও মানা নেইঃ ডায়াবেটিস রোগীদের প্রোটিনেও মানা নেই। তবে আপনি কেমন মাংস খাচ্ছেন সেটাই মুখ্য বিষয়। লাল মাংস যেমন গরুর মাংস একেবারেই খাওয়া চলবে না। তবে লিন মিট যেমন মুরগীর মাংস, কোয়েলের মাংস এমনকি কবুতরের মাংস খাওয়া গেলে ভালো হয়। বাজারে পিনাট বাটার পাওয়া যায়। তবে বাদাম খেতে পারলে ডায়াবেটিস রোগীরাও প্রোটিন পাবেন।

৬.সামান্য একটু শরবতও খেয়ে দেখতে পারেনঃ মাঝেমধ্যে আপনারও শরবত খাওয়ার ইচ্ছে হতে পারে। তবে সচরাচর সব ফলের শরবত খাওয়া সম্ভব হয়না। এক্ষেত্রে অনেকের অপছন্দ হলেও বাঙ্গির শরবত কিংবা লেবু চিপে শরবত করা গেলে ভালো হয়। অবশ্যই চিনি মেশানো যাবেনা। পানি সবসময়ই শরীরের জন্য উপকারী। কিন্তু লেবু, বিট লবণের ফ্লেভারে আপনার জুস খাওয়ার ইচ্ছেটাও পূরণ হতে পারে।

 

শেয়ার করুন
ট্যাগ :

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

যেসব খাবার খাবেন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে

আপডেট: ০৪:০৫:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

ফাইল ছবি

খাদ্যাভ্যাসে যে পরিবর্তনগুলো ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে পারে তার সংখ্যা অনেক। যেমন- বাড়তি চিনি থাকে এমন খাবার ত্যাগ করা, ফল ও সবজি বেশি খাওয়া, মানসিক চাপ কমানো, নিয়মিত শরীরচর্চা ইত্যাদি।

উদ্ভিজ্জ খাবার খাদ্যাভ্যাসে বেশি থাকাটা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায় এর সপক্ষে ফলাফল সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

‘ডায়াবেটোলজিয়া’ শীর্ষক সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণায় ‘ইউরোপিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য স্টাডি অফ ডায়াবেটিস’য়ের গবেষকরা ১০ হাজারেরও বেশি অংশগ্রহণকারীর ‘প্লাজমা মেটাবোলাইট প্রোফাইল’ নিয়ে কাজ করেছেন। ডায়াবেটিস শনাক্ত করার পদ্ধতি এটি।

যাহোক, আজকে আমরা মূলত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে যেসকল খাবার ভূমিকা রাখে তাদের নিয়ে আলোচনা করবো। নিশ্চিত থাকুন, আপনাকে মেপে মেপে খেতে হবেনা। এমনকি খাবার পরেও আপনার ক্ষুধা থেকে যাবেনা।

১. কাঁচা, কিংবা সেদ্ধ করে সবজি খাওয়ার চেষ্টা করুনঃ ডায়াবেটিস রোগীদের পেট ভরে খাওয়া যাবেনা এটি একটি ভুল ধারণা। আমাদের দেশে নানা রকমের সবজি পাওয়া যায়। তারমধ্যে আলু কিংবা শর্করাযুক্ত সবজিগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো। কিন্তু টমেটো, শসা, বেগুন, মাশরুম এবং সবুজ সবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। অধিকাংশ সবজিই কাঁচা কিংবা সেদ্ধ করে খাওয়া যায়। আর যাদের বাসায় ওভেন আছে, তারা চাইলে কিছু সবজি রোস্ট করে নিতে পারেন। বিষয়টি অদ্ভুত বলে অনেকের মনে হতে পারে। কিন্তু আদপে অদ্ভুত না। আমাদের দেশে আগুনের আঁচ দিয়ে বেগুন কিংবা অনেক সবজি সেদ্ধ করে ভর্তা করা হয়। সেভাবেও পুড়িয়ে খেয়ে দেখতে পারেন। অথবা কিছু সবজি যেমন মাশরুম, ফুলকপি এগুলো সেদ্ধ করে খেয়ে দেখতে পারেন।

ওভেনে রোস্ট করার ক্ষেত্রে সচরাচর অলিভ অয়েল ব্যবহার করা ভালো। অলিভ অয়েল এবং খাদ্যপযোগী নারিকেল তেল দিয়েও খাবার রান্না করা যায়। তবে এই তেলগুলোর দাম বেশি বলেই অনেকে কেনার সাহস পায়না।

২.ফাইবারে পরিপূর্ণ খাবার খাবেনঃ যেসকল ফল, সবজিতে প্রচুর আঁশ আছে সেসকল ফসল অনেকটাই শর্করার অভাব মিটিয়ে দিতে পারে। বাদাম, মটরদানা, বা সিম-জাতীয় খাবার, ভুট্টাতে প্রচুর ফাইবার থাকে। তাছাড়া বাঙ্গি, তরমুজ জাতীয় ফলগুলোও এক্ষেত্রে উপকারী হয়। আঁশ জাতীয় খাবার পেটে অনেকক্ষণ থাকে এবং পরিপাকতন্ত্রও সুস্থ রাখে। এমনকি মিষ্টি আলু রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই মিষ্টি আলু খেলে পেট ও ভরবে, এবং ডায়াবেটিস বাড়ার সম্ভাবনাও কমে যাবে।

৩.চিনি ছাড়া চা খাওয়ার অভ্যাসঃ চায়ে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। বিশেষত ব্ল্যাক টি এবং গ্রিন টি বেশ উপকারী এক্ষেত্রে। আমাদের দেশে গ্রিন টি এখন বেশ সুলভ হয়ে উঠেছে। এবং বাজারে ব্ল্যাক টি বিভিন্ন মানের থাকায় এখনো তেমন সুলভ হয়নি। তবে সাধারণ ব্লেন্ড চা দিয়ে রঙ চা বানিয়ে সকাল আর রাতে খেতে পারলে শরীর চাঙা থাকবে।

৪.সামান্য একটু চর্বি জাতীয় খাবারঃ ডায়াবেটিস রোগীদের যে চর্বি জাতীয় খাবার খেতে নেই এমন কোনো বাধা নেই। তবে অবশ্যই অতিরিক্ত এবং ক্ষতিকর চর্বি শরীরে প্রবেশ করানো যাবেনা। অলিভ অয়েল দিয়ে কিছু সালাদ কিংবা হালকা রোস্ট করা লিন মিট খাওয়া যেতে পারে। এতে আপনার কোনো ক্ষতি হবে না।

৫.প্রোটিনেও মানা নেইঃ ডায়াবেটিস রোগীদের প্রোটিনেও মানা নেই। তবে আপনি কেমন মাংস খাচ্ছেন সেটাই মুখ্য বিষয়। লাল মাংস যেমন গরুর মাংস একেবারেই খাওয়া চলবে না। তবে লিন মিট যেমন মুরগীর মাংস, কোয়েলের মাংস এমনকি কবুতরের মাংস খাওয়া গেলে ভালো হয়। বাজারে পিনাট বাটার পাওয়া যায়। তবে বাদাম খেতে পারলে ডায়াবেটিস রোগীরাও প্রোটিন পাবেন।

৬.সামান্য একটু শরবতও খেয়ে দেখতে পারেনঃ মাঝেমধ্যে আপনারও শরবত খাওয়ার ইচ্ছে হতে পারে। তবে সচরাচর সব ফলের শরবত খাওয়া সম্ভব হয়না। এক্ষেত্রে অনেকের অপছন্দ হলেও বাঙ্গির শরবত কিংবা লেবু চিপে শরবত করা গেলে ভালো হয়। অবশ্যই চিনি মেশানো যাবেনা। পানি সবসময়ই শরীরের জন্য উপকারী। কিন্তু লেবু, বিট লবণের ফ্লেভারে আপনার জুস খাওয়ার ইচ্ছেটাও পূরণ হতে পারে।

 

শেয়ার করুন