০১:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

আজ বিশ্ব মা দিবস

ইউএনএ প্রতিবেদক
  • আপডেট: ০৮:৫২:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪
  • / 21
প্রতিকী ছবি

আজ বিশ্ব মা দিবস। প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার বিশ্বব্যাপী এই দিবস পালন করা হয়। এ দিনে গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত হন মায়েরা।

যদিও মায়ের প্রতি ভালোবাসার নির্দিষ্ট দিন কিংবা সময়কে ঘিরে প্রকাশ করার মতো নয়। তবু মায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতেই আজকের দিনে পালন করা হয় নানান কর্মসূচি।

জানা যায়, মা দিবসের সূচনা হয়েছিল প্রাচীন গ্রিস। সেখানে প্রচলিত ছিল মাতৃরূপী দেবী সিবেল ও দেবী জুনোর আরাধনা। এছাড়া ইউরোপ এবং যুক্তরাজ্যে প্রচলিত ছিল মাদারিং সানডের মতো বেশ কয়েকটি আচার-অনুষ্ঠান। সরসময় মায়েদের সম্মানে মাদারিং সানডে পালিত হতো নির্দিষ্ট একটি রোববার।

তবে আধুনিক যুগে ১৯০৭ সালের ১২ মে প্রথমবার আমেরিকার ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার গ্রাফটন শহরে ‘মাদার্স ডে’ বা মা দিবস পালিত হয়েছিল। তৎকালীন সময়ে ভার্জিনিয়ায় অ্যান নামে এক শান্তিবাদী সমাজকর্মী ছিলেন। তিনি নারী অধিকার নিয়ে কাজ করতেন। তিনি ‘মাদারস ডে ওয়ার্ক ক্লাব’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ছোট ছোট ওয়ার্ক ক্লাব বানিয়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের এগিয়ে নিতে চেষ্টা করতেন। নারীদের স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করতেন। অ্যান ছিলেন খুবই ধর্মপ্রাণ। অ্যানের একটি মেয়ে ছিল, যার নাম আনা মারিয়া রিভস জার্ভিস।

একদিন ছোট মেয়ের সামনেই অ্যান হাত জোড় করে বলেছিলেন— ‘আমি প্রার্থনা করি, একদিন কেউ না কেউ, কোনো মায়েদের জন্য একটা দিন উৎসর্গ করুক। কারণ তারা প্রতিদিন মনুষ্যত্বের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে চলেছেন। এটি তাদের অধিকার।

মায়ের সেই প্রার্থনা হৃদয়ে নাড়া দিয়ে যায় অ্যানাকে। অ্যানের মৃত্যুর দিনটিকে সারাবিশ্বের প্রতিটি মায়ের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন তিনি। তার পর থেকে মায়েদের প্রতি সম্মানে পালিত হয়ে আসছে মা দিবস। ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে ‘মা দিবস’ ঘোষণা করেন।

এরপর থেকে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার আন্তর্জাতিক মাতৃ দিবস উদযাপন হিসেবে করা হয়ে থাকে। তবে অনেক দেশই অন্যদিনকে উৎসর্গ করেছে মায়েদের জন্য। সাধারণত মার্চ কিংবা মে-তেই পালিত হয় ‘মাদার্স ডে’।

জানা যায়, ১৯১০ সালে পশ্চিম ভার্জিনিয়ায় মায়েদের স্বীকৃতির জন্য একটি আনুষ্ঠানিক ছুটির দিন চালু করে। এক বছর পরে প্রায় প্রতিটি রাজ্যই উদযাপনের দিনটি চিহ্নিত করে । ১৯১৪ সালে প্রেসিডেন্ট উড্রউইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবসের জাতীয় ছুটি হিসাবে ঘোষণা করেন।

এরপর থেকে বিশ্ব মা দিবসে মায়েদের সম্মানে নানান আয়োজন হয়। মাকে নিয়ে দেশীয় সাহিত্যেও অসংখ্য কবিতা, ছড়া, গান, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ লেখা হয়েছে। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, পল্লী কবি জসিম উদ্দিন, কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, কবি আল মাহমুদসহ অসংখ্য কবি সাহিত্যিকরা যুগ যুগ ধরে মাকে গল্প-কবিতায় ঠাঁই দিয়েছেন।

বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হবে ‘বিশ্ব মা দিবস’

রোববার (১২ মে) সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হবে বিশ্ব মা দিবস। সরকারের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকেও বিশ্ব মা দিবস ২০২৪ উদযাপন করতে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

এতে জেলা পর্যায়ে উপপরিচালকদের জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, আবাসিক বা অনাবাসিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং ডে-কেয়ার কর্মকর্তাদেরও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে দিবসটি উদযাপন করতে কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

শেয়ার করুন
ট্যাগ :

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

আজ বিশ্ব মা দিবস

আপডেট: ০৮:৫২:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪
প্রতিকী ছবি

আজ বিশ্ব মা দিবস। প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার বিশ্বব্যাপী এই দিবস পালন করা হয়। এ দিনে গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত হন মায়েরা।

যদিও মায়ের প্রতি ভালোবাসার নির্দিষ্ট দিন কিংবা সময়কে ঘিরে প্রকাশ করার মতো নয়। তবু মায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতেই আজকের দিনে পালন করা হয় নানান কর্মসূচি।

জানা যায়, মা দিবসের সূচনা হয়েছিল প্রাচীন গ্রিস। সেখানে প্রচলিত ছিল মাতৃরূপী দেবী সিবেল ও দেবী জুনোর আরাধনা। এছাড়া ইউরোপ এবং যুক্তরাজ্যে প্রচলিত ছিল মাদারিং সানডের মতো বেশ কয়েকটি আচার-অনুষ্ঠান। সরসময় মায়েদের সম্মানে মাদারিং সানডে পালিত হতো নির্দিষ্ট একটি রোববার।

তবে আধুনিক যুগে ১৯০৭ সালের ১২ মে প্রথমবার আমেরিকার ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার গ্রাফটন শহরে ‘মাদার্স ডে’ বা মা দিবস পালিত হয়েছিল। তৎকালীন সময়ে ভার্জিনিয়ায় অ্যান নামে এক শান্তিবাদী সমাজকর্মী ছিলেন। তিনি নারী অধিকার নিয়ে কাজ করতেন। তিনি ‘মাদারস ডে ওয়ার্ক ক্লাব’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ছোট ছোট ওয়ার্ক ক্লাব বানিয়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের এগিয়ে নিতে চেষ্টা করতেন। নারীদের স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করতেন। অ্যান ছিলেন খুবই ধর্মপ্রাণ। অ্যানের একটি মেয়ে ছিল, যার নাম আনা মারিয়া রিভস জার্ভিস।

একদিন ছোট মেয়ের সামনেই অ্যান হাত জোড় করে বলেছিলেন— ‘আমি প্রার্থনা করি, একদিন কেউ না কেউ, কোনো মায়েদের জন্য একটা দিন উৎসর্গ করুক। কারণ তারা প্রতিদিন মনুষ্যত্বের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে চলেছেন। এটি তাদের অধিকার।

মায়ের সেই প্রার্থনা হৃদয়ে নাড়া দিয়ে যায় অ্যানাকে। অ্যানের মৃত্যুর দিনটিকে সারাবিশ্বের প্রতিটি মায়ের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন তিনি। তার পর থেকে মায়েদের প্রতি সম্মানে পালিত হয়ে আসছে মা দিবস। ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে ‘মা দিবস’ ঘোষণা করেন।

এরপর থেকে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার আন্তর্জাতিক মাতৃ দিবস উদযাপন হিসেবে করা হয়ে থাকে। তবে অনেক দেশই অন্যদিনকে উৎসর্গ করেছে মায়েদের জন্য। সাধারণত মার্চ কিংবা মে-তেই পালিত হয় ‘মাদার্স ডে’।

জানা যায়, ১৯১০ সালে পশ্চিম ভার্জিনিয়ায় মায়েদের স্বীকৃতির জন্য একটি আনুষ্ঠানিক ছুটির দিন চালু করে। এক বছর পরে প্রায় প্রতিটি রাজ্যই উদযাপনের দিনটি চিহ্নিত করে । ১৯১৪ সালে প্রেসিডেন্ট উড্রউইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবসের জাতীয় ছুটি হিসাবে ঘোষণা করেন।

এরপর থেকে বিশ্ব মা দিবসে মায়েদের সম্মানে নানান আয়োজন হয়। মাকে নিয়ে দেশীয় সাহিত্যেও অসংখ্য কবিতা, ছড়া, গান, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ লেখা হয়েছে। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, পল্লী কবি জসিম উদ্দিন, কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, কবি আল মাহমুদসহ অসংখ্য কবি সাহিত্যিকরা যুগ যুগ ধরে মাকে গল্প-কবিতায় ঠাঁই দিয়েছেন।

বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হবে ‘বিশ্ব মা দিবস’

রোববার (১২ মে) সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হবে বিশ্ব মা দিবস। সরকারের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকেও বিশ্ব মা দিবস ২০২৪ উদযাপন করতে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

এতে জেলা পর্যায়ে উপপরিচালকদের জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, আবাসিক বা অনাবাসিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং ডে-কেয়ার কর্মকর্তাদেরও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে দিবসটি উদযাপন করতে কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

শেয়ার করুন