০৪:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

হাসিনার পতনের এই বাস্তবতা ভারতকে মেনে নিতেই হবে : ফারুকী

ইউএনএ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ০৩:০১:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 17

– সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী। ছবি : সংগৃহীত

গত আগস্টে বাংলাদেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ভারত পলায়নের পর দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যকার সম্পর্ক এখন তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। বলা বাহুল্য, বাংলাদেশ-ভারতের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এখন ভঙ্গুর অবস্থায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের বৈরিতা নিয়ে মুখ খুলেছেন জনপ্রিয় নির্মাতা ও অন্তর্বর্তী সরকারের সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী।

বৈষ্যম্যবিরোধী আন্দোলন থেকে অভ্যুত্থান এরপর সরকার পতন, এখন পর্যন্ত দেশের প্রায় প্রতিটি ইস্যুতে নিজের অবস্থান থেকে সাদাকে সাদা ও কালোকে কালো চেনানোর চেষ্টা করে গেছেন ফারুকী। এবার স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, হাসিনার পতনের এই বাস্তবতা ভারতকে মেনে নিতেই হবে। শুধু তাই নয়, ভারত চাইলেই নতুন করে বাংলাদেশের সঙ্গে সেতুবন্ধন গড়তে পারত; অথচ তারা হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশিদের আঘাত করেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ( ৫ ডিসেম্বর ) রাতে এক ফেসবুক পোস্টে এমনটিই জানালেন ফারুকী। শুরুতেই নির্মাতা পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘হাসিনার অধ্যায় শেষ হওয়ার বাস্তবতা মেনে নেওয়ার সময় এসেছে ভারতের। বাংলাদেশের মানুষ সেই অধ্যায় চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছে। ভারতীয় বন্ধুদের বোঝা উচিত যে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত একজন খুনিকে আতিথ্য করা বাংলাদেশি জনগণের অনুভূতিতে আঘাতের শামিল।’

ফারুকী লেখেন, ‘এমনকি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো যত সব বিভ্রান্তিমূলক প্রচারে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। অথচ এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি নতুন সম্পর্কের সেতু গড়তে পারত ভারত; যেটি বুদ্ধিদীপ্তের পরিচয় হতো।’

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী ভারতীয় মুসলমান এবং খ্রিস্টানদের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় আছেন বলেও উল্লেখ করেন ফারুকী। ‘এ প্রসঙ্গে নির্মাতা লেখেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ সরকার খুব ভাবছে। আগের সরকারের তুলনায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সংক্রান্ত ঘটনার সংখ্যা প্রকৃতপক্ষে কমে গেছে। আমরা আন্তরিকভাবে সমস্ত শীর্ষ আন্তর্জাতিক সংবাদ প্ল্যাটফর্মের সাংবাদিকদের স্বাগত জানাই দেশের বাস্তব চিত্র তুলে ধরার জন্য। ইতোমধ্যে বিবিসি, আল জাজিরার মতো স্বনামধন্য গণমাধ্যমগুলো ভারতীয় মিডিয়ার ভুয়া খবরগুলোও নজরে এনেছে।’

সবশেষ ফারুকী লেখেন, ‘ভারতীয় বন্ধুদের মনে রাখা দরকার যে তারা এমন একজনকে আশ্রয় দিয়েছে, যিনি ছিলেন একজন অত্যাচারী। যিনি টানা তিনটি নির্বাচনে ভোটের অধিকার ছিনতাই করেছে, ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন, তার মতের বাইরে যাওয়া হাজারও মানুষকে হত্যা করেছে। গত জুলাইতেই যার সংখ্যা ছিল দেড় হাজার। আরও অসংখ্য মানুষকে গুম করা হয়েছে, যারা এখনও ফিরে আসেনি। তাহলে ভারত কেন আশা করে, আমরা তাকে (হাসিনাকে) ভালোবাসব। ভারতীয়রা কি আশা করে যে জার্মানরা হিটলারকে ভালোবাসবে?’

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

হাসিনার পতনের এই বাস্তবতা ভারতকে মেনে নিতেই হবে : ফারুকী

আপডেট: ০৩:০১:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪

– সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী। ছবি : সংগৃহীত

গত আগস্টে বাংলাদেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ভারত পলায়নের পর দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যকার সম্পর্ক এখন তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। বলা বাহুল্য, বাংলাদেশ-ভারতের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এখন ভঙ্গুর অবস্থায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের বৈরিতা নিয়ে মুখ খুলেছেন জনপ্রিয় নির্মাতা ও অন্তর্বর্তী সরকারের সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী।

বৈষ্যম্যবিরোধী আন্দোলন থেকে অভ্যুত্থান এরপর সরকার পতন, এখন পর্যন্ত দেশের প্রায় প্রতিটি ইস্যুতে নিজের অবস্থান থেকে সাদাকে সাদা ও কালোকে কালো চেনানোর চেষ্টা করে গেছেন ফারুকী। এবার স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, হাসিনার পতনের এই বাস্তবতা ভারতকে মেনে নিতেই হবে। শুধু তাই নয়, ভারত চাইলেই নতুন করে বাংলাদেশের সঙ্গে সেতুবন্ধন গড়তে পারত; অথচ তারা হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশিদের আঘাত করেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ( ৫ ডিসেম্বর ) রাতে এক ফেসবুক পোস্টে এমনটিই জানালেন ফারুকী। শুরুতেই নির্মাতা পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘হাসিনার অধ্যায় শেষ হওয়ার বাস্তবতা মেনে নেওয়ার সময় এসেছে ভারতের। বাংলাদেশের মানুষ সেই অধ্যায় চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছে। ভারতীয় বন্ধুদের বোঝা উচিত যে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত একজন খুনিকে আতিথ্য করা বাংলাদেশি জনগণের অনুভূতিতে আঘাতের শামিল।’

ফারুকী লেখেন, ‘এমনকি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো যত সব বিভ্রান্তিমূলক প্রচারে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। অথচ এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি নতুন সম্পর্কের সেতু গড়তে পারত ভারত; যেটি বুদ্ধিদীপ্তের পরিচয় হতো।’

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী ভারতীয় মুসলমান এবং খ্রিস্টানদের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় আছেন বলেও উল্লেখ করেন ফারুকী। ‘এ প্রসঙ্গে নির্মাতা লেখেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ সরকার খুব ভাবছে। আগের সরকারের তুলনায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সংক্রান্ত ঘটনার সংখ্যা প্রকৃতপক্ষে কমে গেছে। আমরা আন্তরিকভাবে সমস্ত শীর্ষ আন্তর্জাতিক সংবাদ প্ল্যাটফর্মের সাংবাদিকদের স্বাগত জানাই দেশের বাস্তব চিত্র তুলে ধরার জন্য। ইতোমধ্যে বিবিসি, আল জাজিরার মতো স্বনামধন্য গণমাধ্যমগুলো ভারতীয় মিডিয়ার ভুয়া খবরগুলোও নজরে এনেছে।’

সবশেষ ফারুকী লেখেন, ‘ভারতীয় বন্ধুদের মনে রাখা দরকার যে তারা এমন একজনকে আশ্রয় দিয়েছে, যিনি ছিলেন একজন অত্যাচারী। যিনি টানা তিনটি নির্বাচনে ভোটের অধিকার ছিনতাই করেছে, ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন, তার মতের বাইরে যাওয়া হাজারও মানুষকে হত্যা করেছে। গত জুলাইতেই যার সংখ্যা ছিল দেড় হাজার। আরও অসংখ্য মানুষকে গুম করা হয়েছে, যারা এখনও ফিরে আসেনি। তাহলে ভারত কেন আশা করে, আমরা তাকে (হাসিনাকে) ভালোবাসব। ভারতীয়রা কি আশা করে যে জার্মানরা হিটলারকে ভালোবাসবে?’

শেয়ার করুন