০৯:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

পাকিস্তানের বোমা হামলা : জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে ব্ল্যাকআউট

ইউএনএ ডেস্ক
  • আপডেট: ১১:০৪:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫
  • / 8

ব্ল্যাকআউট -ছবি : সংগৃহীত

ভারতশাসিত কাশ্মীরের জম্মু বিমানবন্দরে বৃহস্পতিবার রাতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ বিস্ফোরণের পর পুরো জম্মু শহরে সাইরেন বাজতে শুরু করে এবং ব্ল্যাকআউট পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তারা বিকট শব্দ শুনে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন এবং একপর্যায়ে এলাকা অন্ধকারে ঢেকে যায়। জম্মুর গুজ্জর নগর সেতুর কাছে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিনি বিমানবন্দরের কাছে ১৬টি অজ্ঞাত বস্তু পড়ে থাকতে দেখেছেন।

ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা সর্বোচ্চ সতর্কতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং শহরজুড়ে এয়ার সাইরেন বাজানো হচ্ছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, পাকিস্তান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের একাধিক সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জম্মু, শ্রীনগর, পাঠানকোট, অমৃতসর, ভাতিন্ডা, চণ্ডীগড়সহ অন্তত ১৫টি সামরিক ঘাঁটি।

তবে ভারত দাবি করেছে, ‘ইন্টিগ্রেটেড কাউন্টার ইউএএস গ্রিড’ ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এসব হামলা প্রতিহত করেছে এবং কোনো বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। বর্তমানে ধ্বংসপ্রাপ্ত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার চলছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ হামলা ভারতের সাম্প্রতিক অভিযানের পাল্টা জবাব। গত মঙ্গলবার (৬ মে) রাত ১টার পর ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায় যেখানে পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরের কয়েকটি স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। এতে অন্তত ৩১ জন নিহত এবং ৫৭ জন আহত হন।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ভারতীয় বাহিনীর পাঁচটি যুদ্ধবিমান তারা ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল, একটি রাশিয়ান সু-৩০ এবং একটি মিগ-২৯। এছাড়া এখন পর্যন্ত ২৫টি ভারতীয় ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে এবং তাদের ধ্বংসাবশেষ বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে।

পাকিস্তানি আইএসপিআর মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভারতীয় ড্রোনগুলো লাহোর, গুজরানওয়ালা, অ্যাটক, রাওয়ালপিন্ডি, মিয়ানওয়ালি, ছোড় ও করাচি অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল।

চলমান এই উত্তেজনার সূচনা ঘটে ২২ এপ্রিল। যখন ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। এর পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। যা এখন সরাসরি সামরিক সংঘাতে রূপ নিচ্ছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে চলমান এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও রাষ্ট্রগুলো দুই দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

পাকিস্তানের বোমা হামলা : জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে ব্ল্যাকআউট

আপডেট: ১১:০৪:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫

ব্ল্যাকআউট -ছবি : সংগৃহীত

ভারতশাসিত কাশ্মীরের জম্মু বিমানবন্দরে বৃহস্পতিবার রাতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ বিস্ফোরণের পর পুরো জম্মু শহরে সাইরেন বাজতে শুরু করে এবং ব্ল্যাকআউট পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তারা বিকট শব্দ শুনে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন এবং একপর্যায়ে এলাকা অন্ধকারে ঢেকে যায়। জম্মুর গুজ্জর নগর সেতুর কাছে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিনি বিমানবন্দরের কাছে ১৬টি অজ্ঞাত বস্তু পড়ে থাকতে দেখেছেন।

ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা সর্বোচ্চ সতর্কতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং শহরজুড়ে এয়ার সাইরেন বাজানো হচ্ছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, পাকিস্তান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের একাধিক সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জম্মু, শ্রীনগর, পাঠানকোট, অমৃতসর, ভাতিন্ডা, চণ্ডীগড়সহ অন্তত ১৫টি সামরিক ঘাঁটি।

তবে ভারত দাবি করেছে, ‘ইন্টিগ্রেটেড কাউন্টার ইউএএস গ্রিড’ ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এসব হামলা প্রতিহত করেছে এবং কোনো বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। বর্তমানে ধ্বংসপ্রাপ্ত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার চলছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ হামলা ভারতের সাম্প্রতিক অভিযানের পাল্টা জবাব। গত মঙ্গলবার (৬ মে) রাত ১টার পর ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায় যেখানে পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরের কয়েকটি স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। এতে অন্তত ৩১ জন নিহত এবং ৫৭ জন আহত হন।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ভারতীয় বাহিনীর পাঁচটি যুদ্ধবিমান তারা ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল, একটি রাশিয়ান সু-৩০ এবং একটি মিগ-২৯। এছাড়া এখন পর্যন্ত ২৫টি ভারতীয় ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে এবং তাদের ধ্বংসাবশেষ বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে।

পাকিস্তানি আইএসপিআর মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভারতীয় ড্রোনগুলো লাহোর, গুজরানওয়ালা, অ্যাটক, রাওয়ালপিন্ডি, মিয়ানওয়ালি, ছোড় ও করাচি অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল।

চলমান এই উত্তেজনার সূচনা ঘটে ২২ এপ্রিল। যখন ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। এর পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। যা এখন সরাসরি সামরিক সংঘাতে রূপ নিচ্ছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে চলমান এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও রাষ্ট্রগুলো দুই দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।

শেয়ার করুন