০৫:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫

গভীর রাতে ফেসবুকে প্রেস সচিবের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা

ইউএনএ প্রতিবেদক
  • আপডেট: ০১:১৯:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫
  • / 20

প্রেস সচিব শফিকুল আলম -ছবি : ফাইল ফটো

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম কুরআনের একটি আয়াত লিখে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।

ফেসবুক পেজে তিনি লেখেন, ‘নাসরুম মিনাল্লাহি ওয়া ফাতহুন কারিব’ (অর্থ : আল্লাহর সাহায্য এবং বিজয় নিকটবর্তী)। এটি কোরআনের সুরা : সফ-এর ১৩ নম্বর আয়াত।

এই অতিসংক্ষিপ্ত এবং শক্তিশালী বাক্যটি ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিজয় এবং আল্লাহর সাহায্যের আশাবাদ ব্যক্ত করে। অনেকে এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে গ্রহণ করেছেন।

এটি যে সময় দেওয়া হয়েছে, তা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। রাতের গভীর মুহূর্তে দেওয়া এই স্ট্যাটাসের মাধ্যমে শফিকুল আলম এক ধরনের শক্তিশালী, আশাবাদী এবং সংকল্পবদ্ধ বার্তা দিয়েছেন যা দেশীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে গূঢ় তাৎপর্য বহন করে।

এই স্ট্যাটাসটি সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার ও আলোচনা শুরু হয়েছে।

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বৃহস্পতিবার সারাদিন বিরাজ করেছিল উত্তেজনা। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এরই মধ্যে মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

এর আগে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে পারেন এমন খবর পেয়ে তার সঙ্গে দেখা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, দেশের চলমান পরিস্থিতি, স্যারের তো পদত্যাগের একটা খবর আমরা আজকে সকাল থেকে শুনছি। ওই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে স্যারের সঙ্গে দেখা করতে গেছিলাম।

প্রধান উপদেষ্টা দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারবেন না এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন নাহিদ ইসলাম।

এরপর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ দেশে বিভাজন ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার (২২ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

স্ট্যাটাসে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, যে বিভাজনটা অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের মধ্যে এসেছিল, সেই বিভাজনকে দেশ ও জাতির স্বার্থে মিটিয়ে ফেলতে হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নগ্ন দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

মনে রাখবেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনে দেশে-বিদেশে অনেকে নাখোশ হয়ে আছে। এই নাখোশ বান্দারা আমাদের বিভাজনের সুযোগ নিতে নিতে আজকের এই অস্থিতিশীল দিন এনেছে। আমরা সবাই এক হয়েছিলাম বলে দীর্ঘ দেড় যুগের শক্তিশালী ফ্যাসিবাদকে তছনছ করতে পেরেছিলাম। যদি আমরা খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যাই, তাহলে পতিত ফ্যাসিবাদ এবং তার দেশি-বিদেশি দোসরেরা আমাদের তছনছ করার চেষ্টা করবে।

তারও আগে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেল ৫টায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্য অনিবার্য।

আগেকার যেকোনো বক্তব্য ও শব্দচয়ন যা বিভাজনমূলক ছিল সেগুলোর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সরকারে আর এক দিনও থাকলে অভ্যুত্থানের সব শক্তির প্রতি সম্মান ও সংবেদনশীলতা রেখে কাজ করতে চাই। পুরনো বন্দোবস্তের বিভেদকামী স্লোগান ও তকমাবাজি যা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে হত্যাযোগ্য করে তোলে। সেগুলো পরিহার করলেই আশা করি, ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।

তিনি লেখেন, বাংলাদেশের শত্রুরা ঐক্যবদ্ধ ও আগ্রাসী। সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে। দেশপ্রেমিক জনগণ, যারা জুলাই অভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ ছিলেন, তাদের সামনে দীর্ঘ পরীক্ষা। এ পরীক্ষা ঐক্যের এবং ধৈর্যের। এ পরীক্ষা উতরে যেতেই হবে।

 

শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

গভীর রাতে ফেসবুকে প্রেস সচিবের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা

আপডেট: ০১:১৯:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

প্রেস সচিব শফিকুল আলম -ছবি : ফাইল ফটো

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম কুরআনের একটি আয়াত লিখে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।

ফেসবুক পেজে তিনি লেখেন, ‘নাসরুম মিনাল্লাহি ওয়া ফাতহুন কারিব’ (অর্থ : আল্লাহর সাহায্য এবং বিজয় নিকটবর্তী)। এটি কোরআনের সুরা : সফ-এর ১৩ নম্বর আয়াত।

এই অতিসংক্ষিপ্ত এবং শক্তিশালী বাক্যটি ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিজয় এবং আল্লাহর সাহায্যের আশাবাদ ব্যক্ত করে। অনেকে এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে গ্রহণ করেছেন।

এটি যে সময় দেওয়া হয়েছে, তা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। রাতের গভীর মুহূর্তে দেওয়া এই স্ট্যাটাসের মাধ্যমে শফিকুল আলম এক ধরনের শক্তিশালী, আশাবাদী এবং সংকল্পবদ্ধ বার্তা দিয়েছেন যা দেশীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে গূঢ় তাৎপর্য বহন করে।

এই স্ট্যাটাসটি সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার ও আলোচনা শুরু হয়েছে।

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বৃহস্পতিবার সারাদিন বিরাজ করেছিল উত্তেজনা। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এরই মধ্যে মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

এর আগে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে পারেন এমন খবর পেয়ে তার সঙ্গে দেখা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, দেশের চলমান পরিস্থিতি, স্যারের তো পদত্যাগের একটা খবর আমরা আজকে সকাল থেকে শুনছি। ওই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে স্যারের সঙ্গে দেখা করতে গেছিলাম।

প্রধান উপদেষ্টা দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারবেন না এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন নাহিদ ইসলাম।

এরপর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ দেশে বিভাজন ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার (২২ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

স্ট্যাটাসে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, যে বিভাজনটা অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের মধ্যে এসেছিল, সেই বিভাজনকে দেশ ও জাতির স্বার্থে মিটিয়ে ফেলতে হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নগ্ন দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

মনে রাখবেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনে দেশে-বিদেশে অনেকে নাখোশ হয়ে আছে। এই নাখোশ বান্দারা আমাদের বিভাজনের সুযোগ নিতে নিতে আজকের এই অস্থিতিশীল দিন এনেছে। আমরা সবাই এক হয়েছিলাম বলে দীর্ঘ দেড় যুগের শক্তিশালী ফ্যাসিবাদকে তছনছ করতে পেরেছিলাম। যদি আমরা খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যাই, তাহলে পতিত ফ্যাসিবাদ এবং তার দেশি-বিদেশি দোসরেরা আমাদের তছনছ করার চেষ্টা করবে।

তারও আগে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেল ৫টায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্য অনিবার্য।

আগেকার যেকোনো বক্তব্য ও শব্দচয়ন যা বিভাজনমূলক ছিল সেগুলোর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সরকারে আর এক দিনও থাকলে অভ্যুত্থানের সব শক্তির প্রতি সম্মান ও সংবেদনশীলতা রেখে কাজ করতে চাই। পুরনো বন্দোবস্তের বিভেদকামী স্লোগান ও তকমাবাজি যা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে হত্যাযোগ্য করে তোলে। সেগুলো পরিহার করলেই আশা করি, ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।

তিনি লেখেন, বাংলাদেশের শত্রুরা ঐক্যবদ্ধ ও আগ্রাসী। সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে। দেশপ্রেমিক জনগণ, যারা জুলাই অভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ ছিলেন, তাদের সামনে দীর্ঘ পরীক্ষা। এ পরীক্ষা ঐক্যের এবং ধৈর্যের। এ পরীক্ষা উতরে যেতেই হবে।

 

শেয়ার করুন